ফরিদুল কবির,কালিগঞ্জ(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি।। কালিগঞ্জে ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারো আকস্মিক ঝড়ের তাণ্ডবে প্রায় এক কুড়ি ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা দিকে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী হাড়দ্দাহ গ্রামে মাত্র ৩ মিনিটের প্রচন্ড ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাছাড়া অতিবর্ষণে এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সরেজমিনে গেলে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ অচিন্ত কুমার সহ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে আকাশে ঘন মেঘ দেখা দেয়। এরপরই বজ্রপাতসহ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঝড়ের আঘাতে মুহূর্তেই বসতবাড়ি ও গাছপালা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। হাড়দ্দাহ গ্রামের প্রতিবন্ধী সবুর খান, দিনমজুর নূর ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, শাহাজান টাপালি, রশিদ গাজী, মনিরুল গাজী, সোহরাব, শোকর আলী গাজী সহ ১৮ থেকে ১৯টি পরিবারের ঘরবাড়ি ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে দুমড়ে-মুচড়ে উড়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বেশির ভাগ ঘরই টিন, এ্যালবেস্টার ও গোলপাতার ছাউনি। তবে ইটের তৈরি কয়েকটি ঘরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া ঝড়ের কারণে ৫টি ছাগল, ১৯টি হাঁস-মুরগীর মৃত্যু হয়েছে এবং ১টি গর্ভবতী বড় গাভী মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের আশপাশে ও কালিন্দী নদীর ওয়াপদা বেড়িবাঁধের পাশে থাকা বিভিন্ন গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। ঝড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। এ প্রসঙ্গে মথুরেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ আলাউদ্দীন সোহেল বলেন, ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কালিগঞ্জের সিমান্তবর্তী হাড়দ্দাহ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার কিছুদিন পর আকস্মিক ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাদের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারো ঝড়ে হাড়দ্দহা গ্রামের বেশকিছু ঘরবাড়ি ও গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। কয়েকটি গবাদি পশু ও কিছু হাঁস-মুরগী মারা গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিরাজ হোসেন খান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১৯টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার জন্য তালিকা পাঠানো হয়েছে। ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।