রূপগঞ্জ প্রতিনিধি: প্রতারনার অভিযোগে সাতক্ষীরার পলাতক জামায়াত নেতা আলতাফ হোসেনকে আটক করেছে র্যাব-০১।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত একটার দিকে নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার মধুখালি এলাকা একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব সদস্যরা।
র্যাব-০১ এর অধিনায়ক জানান, আটক আলতাফ হোসেন রূপগঞ্জে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসার নামে জমির দালালি ও প্রতারণা করে আসছিল। এমন অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা তাকে আটক করি। আটকের পর আমরা জানতে পেরেছি তার বিরুদ্ধে ১৫ টি মামলা এবং ৫টি ওয়ারেন্ট রয়েছে।
সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান এলাকার আহসান উল্যার ছেলে আলতাফ হুসাইন সাতক্ষীরা জেলা জামাতের সাবেক প্রচার সম্পাদক, সাতক্ষীরা সিটি কলেজের প্রভাষক ও সিটি কলেজ ছাত্রলীগের তৎকালিন সভাপতি এবিএম মামুন হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত শিবিরের সহিংসতায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৫০ জন জখম হয়। এদিন নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় সাতক্ষীরা সিটি কলেজের প্রভাষক ও সিটি কলেজ ছাত্রলীগের তৎকালিন সভাপতি এবিএম মামুন হোসেনকে। এরপর জামাত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের হাতে একে একে খুন হয় ১৭ জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। রাস্তা কেটে গোটা সাতক্ষীরাকে প্রায় ১০ মাস অবরুদ্ধ করে রাখে জামাত-বিএনপির দুর্র্ধষ ক্যাডাররা। জেলাজুড়ে তান্ডব চালায় জামাত-বিএনপি। আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ বাদী হয়ে তৎকালিন জেলা জামাতের আমীর যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী অধ্যক্ষ খালেক মন্ডল, যুগ্ম-সম্পাদক জেনারেল আজিজুর রহমান, জামাতের প্রচার সম্পাদক ও দৈনিক আলোর পরশের তৎকালিন সম্পাদক আলতাফ হোসাইন, সদর উপজেলা জামাতের আমীর রফিকুল ইসলাম, সদর পশ্চিম থানা আমীর মাওলানা শাহাদাৎ হোসেন, কাশেমপুর হাজামপাড়া জামে সমজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলী, কাশেমপুর গ্রামের মাওলানা ঈমান আলী, ফিংড়ির হাবিবুর রহমানসহ ১৯০জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ২০১৩ সালের ২৮ফেব্রুয়ারি জামাত নেতা মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর রক্তাক্ত হয়ে উঠে সাতক্ষীরা। ঘোষণা দিয়েই সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে জামাত-শিবিরের ক্যাডাররা। রায় ঘোষণার পর বিকালে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রভাষক এবিএম মামুনকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা জেলায় শুরু হয় জামাত শিবিরের তান্ডবলীলা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় মামুনের ঘরবাড়ি। শতশত হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে পুড়িয়ে দেয় জামাত-শিবির।
২০১৩ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসক হিসেবে নাজমুল আহসান এবং পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির। এরপর আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির অপারেশন শুরু করলে আলতাফ হুসাইনসহ অন্যরা চলে যায় আত্মগোপনে। রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে থেকে শুরু করেন হাউজিং ব্যবসা। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় এসটিসি ১১১/২০১৯, এসটিসি ১১২/২০১৯, এসটিসি ১৩৩/২৯১৭সহ দেড় ডজন মামলা রয়েছে।——–