স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। আমি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলাম। কিন্তু এ প্রজন্মের অনেকেই জানে না বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকেই আমি সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলাম। প্রথমে দৈনিক বাংলার বাণী এবং পরে দৈনিক খবরের ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছি। দুর্নীতি সংক্রান্ত আমার একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে আমার একজন শিক্ষকও চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। তখন জাতীয় পর্যায়ে হাতে গোনা কয়েকটি পত্রিকা ছিল মাত্র । ১৯৯০ সালে আমরা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা করি। আমি ছিলাম প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। আজ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি এই পর্যায়ে আসার পেছনে ইবি প্রেসক্লাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাথে আমার একটি আত্বিক সম্পর্ক রয়েছে। আমি যখনই ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় যাই প্রেসক্লাবে গিয়ে বসি। নতুন প্রজন্মের মেধাবী সাংবাদিকদের সাথে কিছুটা সময় কাটাই।
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সিন্ডিকেটের আমি একজন সদস্য। সিন্ডিকেট সভায় যোগ দিতে আমি ৯ আগষ্ট ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এটাই আমার প্রথম যাওয়া। আগষ্ট শোকের মাস হওয়ায় ক্যাম্পাসে আমার সংবর্ধনা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পরিহার করা হয়। আমার প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, প্রেসক্লাব,আমার ডিপার্টমেন্ট সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষক,কর্মকর্তা, কর্মচারী,স্হানীয় আমার রাজনৈতিক সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অকৃত্রিম ভালবাসায় মুগ্ধ হলাম। সিন্ডিকেট মিটিং ছাড়াও গত দুইদিনে অন্তত ৮/৯ টি ছোট বড় আনুষ্ঠানিক ও বেশ কয়েকটি অনানুষ্ঠানিক সভায় আমাকে অংশগ্রহণ করতে হয়েছে। ঘড়ির কাটা ধরে ধরে আমাকে সময় মেন্টেইন করতে হয়েছে।
শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমি প্রেসক্লাবের এ প্রজন্মের মেধাবী সাংবাদিকদের সাথে আমি বেশ খানিকটা সময় দিতে চেষ্টা করেছি। তাদের অসাধারণ আন্তরিকতা, প্রাণ উজার করা ভালবাসা কোনদিন ভুলার নয়। বিশেষ করে ইবি প্রেসক্লাবের সভাপতি সরকার মাসুম,সাধারণ সম্পাদক তারিক বিন নজরুল,রুমি নোমান,মোস্তাসিম বিল্লাহ পাপ্পু,মনঞ্জুল ইসলাম নাহিদের নিজের হাতে রান্না করা আলু বর্তা সহ হরেক রকম বর্তা,ভাজি গরুর মাংসের অসাধারণ টেষ্ট এখনো মুখে লেগে আছে। সবচেয়ে বড় কথা প্রেসক্লাবের সকল সদস্যের আন্তরিকতা ছিল অতুলনীয়। সত্যি কথা বলতে আমি মনে মনে ভাবছিলাম সময় পেলে হলে ছাত্রদের সাথে একবেলা খাব। মাসুম, তারিককের নিজের হাতের রান্না করা খাবার খেয়ে সে ইচ্ছাটাও পুরণ করেছে। ইবি প্রেসক্লাবে সদস্যদের সাথে আমার এই সম্পর্ক আমৃত্যু অটুট থাকুক সেই কামনা করছি। ইবি প্রেসক্লাবের প্রাণপ্রিয় অনুজদের জন্য অনেক শুভকামনা।
লেখকঃ অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু
সচিব,শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট, শিক্ষা মন্ত্রণালয়।