ঔষধ আমার বৈধ স্ত্রী আর সাহিত্য আমার উপপত্নী…
কথাটা রাশিয়ান লেখক চিকিৎসক এবং মানবহিতৈষী অ্যান্টন পাভলোভিচ চেখভ এর, ব্যর্থ সমাজের প্রকৃতি সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন;
ব্যর্থ সমাজে মানুষ জ্ঞান বিজ্ঞানে জেগে ওঠে না, তারা জেগে ওঠে শ্লোগানে। সেখানে পাঠাগার কম থাকে, উপসানালয় বেশী, যে গুলো আবার সপ্তাহের ছয়দিনই খালি পড়ে থাকে।
ব্যর্থ সমাজে প্রতিটি চিন্তাশীল মানুষের বিপরীতে হাজার হাজার নির্বোধ থাকে আর প্রতিটি সচেতন শব্দের বিপরীতে থাকে হাজার হাজার পচনশীল শব্দ। তারা সমস্যার উপরে ভেসে বেড়ায়, গভীরে প্রবেশ করতে পারেনা।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ হয় সর্বদা নির্বোধ, অতিতুচ্ছ বিষয় নিয়ে মানুষ আলোচনায় মেতে থাকে, মূল বিষয়গুলো হারিয়ে যায়। সমস্যা সমাধানের চেয়ে একে অন্যের উপর প্রতিনিয়ত দোষ চাপাতে থাকে।
অর্থহীন গান ও সস্তা বিনোদনের পিছনে লক্ষ লক্ষ মানুষ ছুটে বেড়ায় ফলে, সস্তা বিনোদন করেও মানুষ প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং এইসব গান, বাদ্য বাজনার মানুষগুলো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
রাজনৈতিক নেতাদের দেবতার মতো করে পূজা-অর্চনা করা হয়, আর এক দলের দেবতাকে অন্য দল সহ্য করতে পারেনা। যে কোনো একটা খেলা দিয়ে মানুষকে দিনের পর দিন নেশাগ্রস্থ করে রাখা হয়।
চিন্তাশীল মানুষের মূল্য বা ওজন কেউ বুঝেনা। অধিকাংশ মানুষ আজেবাজে কথায় সময় পার করে দেয়। আজে বাজে কথা বলে যে মানুষকে হাসায়, তার চেয়ে কঠিন সত্য বলে যে বাস্তবতাকে জাগিয়ে তোলে তাকে কেউ গ্রহণ করেনা।
অজ্ঞ সংখ্যাগরিষ্ঠরা এখানে সমাজের ভাগ্য নির্ধারণ করে। সবার যেমন একটা করে পশ্চাতদেশ থাকে, ঠিক তেমনি ব্যর্থ সমাজেরও যে কোনো বিষয়ের উপর সবার একটি করে মতামতও থাকে।
ব্যর্থ সমাজে মানুষ ব্যর্থ হয়না, এখানে সচতুরভাবে তাকে ব্যর্থ বানানো হয় কিংবা বানিয়ে রাখা হয়…
লেখক : বাংলাদেশ পুলিশের আইন প্রশিক্ষক হাসান হাফিজুর রহমান।