মোতালেব বিশ্বাস,ইবি প্রতিনিধি।।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আলোচিত ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বুধবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ.এম. আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক ও একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার মো. আলীবদ্দীন খানকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শার্মা, খালেদা জিয়া হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী ও ব্যাবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর ড. মুর্শিদ আলম।
এ বিষয়ে সদস্য সচিব একাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার মো. আলীবদ্দীন খান বলেন, আমরা আগামী শনিবার নিজেদের মাঝে বসে আলাপ আলোচনা করে কাজ শুরু করবো। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রশাসনে প্রতিবেদন জমা দিবো।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জরুরী ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে একই ঘটনায় বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়ন। যৌথ বিবৃতিতে শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমানুল সোহান ও মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, আবাসিক হলের অভ্যান্তরে নবীন একজন শিক্ষার্থীকে যেভাবে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতন করা হয়েছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ঘৃণ্য নির্যাতনের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ সহযোগীদের উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আবেদন জানাচ্ছি।
অন্যদিকে একই ঘটনায় হল প্রশাসন চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল হককে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইসরাত জাহান এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা আক্তার। তারা উভয়েই দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক। এছাড়া হলের শাখা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকও কমিটিতে আছেন। তাদেরও আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে গত রোববার রাতে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে নবীন এক শিক্ষার্থীকে।বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এই ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সানজিদা চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপর অভিযুক্ত তাবাসসুম ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। ভুক্তভোগী ছাত্রীও একই বিভাগের শিক্ষার্থী।