মাজহারুল রাসেল : নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় শতাধিক কৃষক নেপিয়ার নামের হাইব্রিড ঘাস চাষ করে এখন সাবলম্বী। প্রথমদিকে রাস্তার ধারে, জমির আইলে বা পুকুরের পাড়ে দু-একজন এর চাষ শুরু করলেও অল্প সময়ে মধ্যে এর ব্যাপক উৎপাদন ও অধিক দাম পাওয়ার বর্তমানে আবাদী জমিতেও ব্যাপকভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে।
জানা যায়, প্রায় ৩০ বৎসর আগে বাংলাদেশ সরকার জার্মান থেকে এই ঘাসের চারা আমদানী করে। প্রথমে সাভার ডেইরী ফার্ম থেকে এই ঘাসের চারা বিতরণ করা হতো। পরবর্তীতে প্রায় বিশ বৎসর যাবৎ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস কর্তৃক কৃষকদেরকে ফ্রি চারা দেয়া হয়। প্রথমে কৃষকরা এর চাষে ততটা আগ্রহী না হলেও গত ৪/৫ বছর যাবৎ ভালো উৎপাদন ও অধিক দাম পাওয়ার কারণে এর চাষে অধিক আগ্রহী হয়েছে।
এক বিঘা জমিতে বীজ, সার, তেল এসব নানান খরচ ও হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে ধান, ভূট্টা বা অন্যান্য ফসল চাষ করে যে আয় হয় সেই জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে প্রায় তিন গুন বেশি আয় হয়। এই ঘাস জমিতে লাগানোর তিন মাস পর তা বিক্রির উপযোগী হয়। পরবর্তীতে গোড়া থেকে আবার বেড়ে ওঠে তখন প্রতি মাসে একবার বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। এর সেচ ও সার খরচ অনেক কম। এই ঘাস খাওয়ালে গাভী অনেক বেশি দুধ দেয়, তাই বাজারেও এর চাহিদা রয়েছে অনেক। উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের শতাধিক কৃষক বর্তমানে এই ঘাসের আবাদ করছে।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মোহাম্মদ মনজুরুল হাসান এর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার প্রায় শতাধিক কৃষক নিজস্ব জমিতে এই ঘাস চাষ করছে। এরমধ্যে স্বল্প সংখ্যক কৃষক শুধুমাত্র এই ঘাস চাষ করে আর্থিকভাবে সাবলম্বী হয়েছে। বর্তমানে আরও কয়েক একর জমি চাষের জন্য প্রচুর পরিমান চারা মজুদ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদেরকে উৎসাহ দেয়ার জন্য মাঝে মাঝে মিটিং ও চাষের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন কৃষকের সাথে সরাসরি কথা বলে জানা গেছে তারা সবাই এই ঘাস চাষ করে আশানুরূপ ফল পেয়েছে, যা অন্য কোনো ফসল চাষ করে পায়নি। তারা এই ঘাস চাষের মাধ্যমে নতুন স্বপ্ন দেখছে। সরকারী সহযোগীতা ও সহজশর্তে ঋণের সুবিধা পেলে এ ঘাস চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।