এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর): যশোরের চৌগাছায় সরকারি মর্জাদ বাওড়ের জমি প্রভাবশালীরা যে যারমত দখল করছেন। বাওড় ধারের জমি দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ক্ষমতাধর ব্যাক্তিরা বাওড়ের শুকনা জমি দখল করে ফসল চাষের জন্য ট্রাকটর দিয়ে চাষে দিচ্ছেন। যেন দেখার কেউ নেই। বাওড়ের শত শত বিঘা জমি দখল করে নিচ্ছে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যাক্তি। এসব সরকারি জমি দখল নিয়ে ফসল চাষ করায় গো-চারণ ভুমি নষ্ট হচ্ছে। চারণভূমি নষ্ট হওয়ার কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এলাকার গরু-মহিষ ও ছাগল পালনকারী সাধারণ জনগণ। এই জমি দখল প্রতিরোধে প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য কনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হায়াতপুর গ্রামের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন প্রথমে জমি দখল শুরু করেন। এলাকাবাসির অভিযোগ ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীনই প্রথম বাওড়ের জমি দখল করে ফসল চাষ করা শুরু করেন। এর পরেই বাওড়ের পার্শ্ববর্তি পাতিবিলা, হায়াতপুর, তেঘরি, জগদিশপুর ও হাজিপুর গ্রামের কয়েকজন প্রভবশালি ব্যাক্তি ট্রাক্টর দিয়ে বাওড়ের শত শত বিঘা জমি চাষ করতে থাকেন। এ নিয়ে এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও রহস্যজনক কারণে ভূমি অফিস কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর থেকেই দখল আর পাল্টা দখলে মেতে উঠেছেন এলাকার প্রভাবশালিরা। যারা জমি দখল করছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হায়াতপুর গ্রামের জহির উদ্দীন, রাসেল হোসেন, পান্নু মিয়া পাতিবিলা গ্রামের আশারোফ হোসেন , টিটো হোসেন, ফারুখ হোসেন ও রুহুল আমিনসহ তাদের লোকজন।
এলাকাবাসির কয়েকজন জানান, বাওড়ের চারিপাশে রয়েছে কয়েকটি গ্রাম। এ সকল গ্রামের কয়েক হাজার গরু-মহিষ ও ছাগলের চারণ ভুমি ছিল এই বাওড়ের শুকিয়ে যাওয়া জমিতে। এই এলাকার মানুষের গরু ছাগল পালন করতে বাড়তি খাদ্যের প্রয়োজন হতো না। বাওড়ের চর থেকে অধিকাংশ পশুর খাদ্য চাহিদা পুরণ হতো। যে কারনে এই অঞ্চলের গরিব মানুষও খুব সহজেই গরু ছাগল পালন করে সংসার চালাতে পারত। কিন্তু এলাকার কিছু প্রভাবশালি মানুষ ট্রাক্টর দিয়ে চষে দখল নিয়েছে বাওড়ের শত শত বিঘা জমি। এ এলাকার কয়েকজন মানুষের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার সাধারণমানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েজন জানান প্রশাসনকে জানানো হয়েছে কিন্তু কেউ এখানে আসেনি। প্রশাসন দায়সারা ভাবে এলাকায় সতর্কতামূলক মাইকিং করেছে জমি দখল না নেওয়ার জন্য। কিন্তু একদিকে মাইকিং চলছে অন্যদিকে প্রশাসনের প্রচারকে থোড়াই কেয়ার করে ট্রাক্ট্রর দিয়ে জমি চষে দখল নিচ্ছে দখলদাররা। বাওড় ধারের জমি দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ক্ষমতাধর ব্যাক্তিরা বাওড়ের শুকনা জমি দখল করে ফসল চাষের জন্য ট্রাকটর দিয়ে চাষে দিচ্ছেন। যেন দেখার কেউ নেই।
বাওড়ের জমি দখলদার ইউপি সদস্য জসিম উদ্দীন বলেন, আমি জমি চাষ করেনি। কিছু জমি দখল করেছি কেউ যেন চাষ করতে না পারে সে কারনে। বাওড়ের পাশ্ববর্তি হিন্দু পাড়ার লোকজন কিছু জমি দখল করে চাষ করেছে বলে তিনি জানান। এছাড়া তার এলাকায় কেউ বাওড়ের জমি দখল করেছে কিনা তার জানা নেই।
হায়াতপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির উদ্দীন বলেন, আমার অনেক কিছু আছে আমি কেনো বাওড়ের জমি দখল নিতে যাব? এলাকার কেও আমার সাথে শত্রুতা করে নাম দিয়েছে। আমি এলাকায় একটু মাত্তুব্বারি করি এতে কেউ আমার উপরে ক্ষুব্ধ থাকতে পারে।
চৌগাছা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) গুনজন বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সত্যতা
পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।