ঢাকা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪:
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রে বিডিআর বিদ্রোহ ঘটানো হয়েছিল, এতে যুক্ত ছিল বিএনপি-খালেদা জিয়া।’
সোমবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে আওয়ামী লীগই বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়েছিল’ এ নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘রিজভী সাহেবের এই বক্তব্য টেলিভিশনে শুনেছি, অনলাইনে দেখেছি। এই বক্তব্য আমার কাছে পাগলের প্রলাপ মনে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৩ আসন পেয়ে সরকার গঠন করি। বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ৩০টি আসন। এ রকম বিপুল রায় পেয়ে সরকার গঠন করার পর এমন জঘন্য ঘটনা কেন ঘটাবে সরকার? আর সেদিন আওয়ামী পরিবারের সদস্যরাই বেশি নিহত হয়েছিল। এমনকি তৎকালীন আইজিপির মেয়ের জামাতাও নিহত হন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুপুরের আগে ঘুম থেকে জাগেন না, কিন্তু সেদিন খালেদা জিয়া কোন কারনে সকালেই ঘুম থেকে উঠে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হলেন?’ তিনি বলেন, ‘তার গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল। তিনি সেদিন লন্ডনে কতবার কথা বলেছিলেন সেই রেকর্ড আছে। এতে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিএনপি যে সরাসরি যুক্ত সেটিই প্রমাণিত। অতএব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য পাগলের প্রলাপ।’
সাংবাদিকরা এ সময় বিএনপি নেতা মঈন খান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন- এ নিয়ে মন্তব্য চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তাদের দুর্নীতি লুটপাটের কারণে পরপর চারবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দুর্নীতিতে সাক্ষ্য দিতে এফবিআই বাংলাদেশে এসেছিল। বিএনপি নেতা মঈন খান হয়তো এসব কথা ভুলে গেছেন। কারো বাবা নিয়ে কথা বলতে চাই না, কিন্তু মঈন খানের বাবা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন- প্রয়োজনে দেশ বিক্রি করে দেওয়া হবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘৭ জানুয়ারি বিএনপি আশা করেছিল নির্বাচন হবে না। মানুষ যাতে ভোট দিতে না যায় সেই প্রার্থনা করেছিল তারা। কিন্তু ৪২ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। যখন একটি সুন্দর নির্বাচন হলো, প্রধানমন্ত্রীকে সারা বিশ্ব অভিনন্দন জানিয়েছে, জো বাইডেন চিঠি দিয়ে প্রশংসা করেছেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও প্রশংসা করেছে, তখন বিএনপি খেই হারিয়ে ফেলেছে।’
বিএনপি অভিযোগ করছে তাদের কর্মীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার মানুষ ধরা পড়ে চুরি ডাকাতি বা বিভিন্ন অপরাধে। বিএনপি তাদের কর্মী বলছে কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।’
এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে তার সাথে সাক্ষাতে আসেন ঢাকা সফররত আগরতলা প্রেসক্লাবের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল। আগরতলা প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট জয়ন্ত ভট্টাচার্য, সেক্রেটারি রমাকান্ত দে এবং সৈয়দ সাজ্জাদ আলী, কামাল চৌধুরী, রঞ্জন রায়, অভিষেক দে, সুরজিৎ পাল, মনিষ লোদ, অভিষেক দেববর্মা, প্রণব সরকার, সুপ্রভাত দেবনাথ, দেভাশিস মজুমদার এবং সুমন দেবরায় ও বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার সভাপতি রেজওয়ানুল হক প্রমুখ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে চা-চক্রে মিলিত হন। এ সময় মন্ত্রীকে উত্তরীয় ও সম্মাননা স্মারক অর্পণ করে প্রতিনিধি দল।