সাগর বিধৌত সুন্দরবন উপকন্ঠে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত এক প্রাচীন জনপদ- ‘সাতক্ষীরা’। অবহেলার জীর্ণতা বক্ষে ধারণ করে কালের স্বাক্ষী হিসেবে টিকে আছে। প্রাচীন কালের অনেক গৌরব গাঁথায় সমৃদ্ধ এই জনপদ কালের বিবর্তনে হারিয়েছে তার জৌলুস। মুছে গেছে অনেক কীর্তি। তবে জনমানুষের সামনে তুলে ধরতে ভুল করেনি সাংবাদিকরা। তাদের কোনো সংগঠন ছিলো না। সেই প্রয়াসে ১৯৬৯ সালে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে ‘সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব’ গঠিত হয়। তবে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব গঠিত হওয়ার পর থেকে তার কোন ধারাবাহিক কার্যক্রম ছিল না। এমনকি সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে অনেক নাম-পরিচয় মুছে যেতে থাকে এবং পূর্বের ন্যায় প্রেসক্লাব কুক্ষিগত করে রাখার মানসে সভাপতি-সম্পাদক সাংবাদিকদের নতুন করে সদস্যপদ প্রদান করেনি। তাই সাংবাদিকরা নিজেদের ঐক্য ধরে রাখার মানসে উপজেলা ভিক্তিক পৃথক পৃথক সাংবাদিক সংগঠন গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮০ সালে কলারোয়া প্রেসক্লাব গঠিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক আবু নসর, সম্পাদক ছিলেন এমএ ফারুক। ১৯৮২ সালে আশাশুনি প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন এসএম নওয়াব আলী। সম্পাদক ছিলেন লুৎফর রহমান (চাপড়া)। ১৯৮৩ সালে আশাশুনি-দেবহাটা-কালিগঞ্জ-শ্যামনগরের কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে কালিগঞ্জ আঞ্চলিক প্রেসক্লাব গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবে রূপান্তরিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক তমিজ উদ্দিন। একই বছরে এই গ্রুপ থেকে সাংবাদিকদের একটি অংশ বের হয়ে ১৯৮৩ সালে পুনরায় আশাশুনি প্রেসক্লাব গঠন করেন। সভাপতি ছিলেন জিএম মুজিবুর রহমান, সম্পাদক ছিলেন আহসান হাবীব। ১৯৮৩ সালের শেষের দিকে তালা প্রেসক্লাব গঠিত হয়। ১৯৮৫ সালে কালিগঞ্জ আঞ্চলিক প্রেসক্লাব থেকে সাংবাদিকদের একটি গ্রুপ বের হয়ে শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাব গঠন করেন। প্রথম সভাপতি ছিলেন আনোয়ার হোসেন কারিগর, সম্পাদক ছিলেন মাষ্টার আব্দুল ওয়াহেদ। এছাড়াও কালিগঞ্জ আঞ্চলিক প্রেসক্লাব থেকে সাংবাদিকদের আরো একটি গ্রুপ বের হয়ে ১৯৮৫ সালে দেবহাটা প্রেসক্লাব নামে প্রথম যাত্রা শুরু করে। তবে ১৯৯০ সালের শেষের দিকে কমিটি গঠিত হয় এতে ডা. এমএ করিম সভাপতি, সুশান্ত ঘোষ সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুর গফ্ফর খুরশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল, সদস্য ডা. আব্দুল ওহাব, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব। ১৯৯১ সালে পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাব গঠিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন এম একরামুল হক আসাদ, সম্পাদক ছিলেন শেখ জাকির হোসেন। ১৯৯৬ সালে তালা সদর প্রেসক্লাব গঠিত হয়।
১৯৯৮ সালের ৯ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের পূর্বতন সভাপতি অনুমোদিত গঠনতন্ত্র প্রদর্শন করতে ব্যর্থ, ধারাবাহিক নিষ্ক্রিয়তা, নেতৃত্ব কুক্ষিগত করে রাখা এবং প্রেসক্লাবকে গতিশীল করতে ব্যর্থ হওয়ায় অধিকাংশ সদস্যের দাবির প্রেক্ষিতে পূর্বতন কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। একই সময়ে প্রেসক্লাব বর্হিভূত এবং জেলা প্রেসক্লাব সদস্যদের উপস্থিতিতে আবুল কালাম আজাদকে আহবায়ক ও শেখ আব্দুস সাত্তার, জিএম নুর ইসলাম, মিজানুর রহমান ও মমতাজ আহমেদ বাপীকে সদস্য করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়। নবগঠিত কমিটির ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব এর একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়নের। কমিটির নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের আলোকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব নামের উপযোগী করে একটি খসড়া গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করেন। ১৯৯৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি খসড়া গঠনতন্ত্র সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সাধারণ সভায় গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা উপধারা সম্পর্কে বিষদ আলোচনার পর আহবায়ক কমিটির ৫ জন এবং অধ্যাপক আবু আহমেদ, সুভাষ চৌধুরী, মোঃ আনিসুর রহিম ও কল্যাণ ব্যানার্জিকে সম্পৃক্ত করে গঠনতন্ত্র সম্পর্কে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়। কমিটি কতিপয় সংশোধনী, পরিবর্তন, পরিবর্ধনসহ খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদনের পক্ষে মতামত প্রদান করেন। ১৯৯৯ সালের ৭ মার্চ আহবায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ তাদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় পদত্যাগ করেন এবং অনাকাঙ্খিত এক পরিস্থিতির কারণে সাংবাদিকরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের ৫ মে পুনরায় আবুল কালাম আজাদ ও কল্যাণ ব্যানার্জির আহবানে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের এক বিশেষ সভায় দ্বিধাবিভক্ত সাংবাদিকগণ একত্রিত হন। এই সভায় জিএম মনিরুল ইসলাম মিনি, আব্দুল ওয়াজেদ কচি, অধ্যাপক আবু আহমেদ, সুভাষ চৌধুরী, আব্দুল বারী ও কল্যাণ ব্যানার্জিকে সদস্য করে ৬জনের একটি সভাপতিম-লী গঠিত হয়। উক্ত সভাপতিম-লী ১৯৯৯ সালের ৫ মে বিশেষ সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রের ভিক্তিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যভুক্তির জন্য সাংবাদিকদের নিকট থেকে দরখস্ত আহবান করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৪৮জন সাংবাদিক প্রেসক্লাবের সদস্যভুর্ক্তির জন্য দরখস্ত দাখিল করেন। সভাপতিম-লী দরখস্ত সমূহ যাচাই-বাছাই পূর্বক প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৩২জনকে সাধারণ সদস্য ও ১৬জনকে সহযোগী সদস্যপদ প্রদান করে তাদেরকে নিয়ে সাধারণ পরিষদ গঠন করেন। ১৯৯৯ সালের ১০ জুন অধ্যাপক আবু আহমেদ এর সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ পরিষদের প্রথম সভায় প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র পঠিত ও অনুমোদিত হয়। যার প্রতি পৃষ্ঠায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সদস্যগণ স্বাক্ষর করেন।
তবে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সদস্যভুক্তি হতে না পেরে ১৯৯৮ সালে সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৯৯ সালে ধুলিহর প্রেসক্লাব গঠিত হয়। যা পরবর্তীতে বিডিএফ প্রেসক্লাবে রুপান্তরিত হয়। প্রথম আহবায়ক ছিলেন হাসান হাদী, সদস্য সচিব এসএম শহিদুল ইসলাম। ২০০০ সালে সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ফোরাম গঠিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, সম্পাদক সম্পাদক শেখ আমিনুর হোসেন। ২০০৫ সালে কুলিয়া আঞ্চলিক প্রেসক্লাব গঠিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন মাসুম হোসেন খান চৌধুরী, সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল। ২০০৮ সালে মোঃ ইয়ারব হোসেনের নেতৃত্বে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব থেকে একটি গ্রুপ বের হয়ে রিপোর্টার্স ক্লাব গঠন করেন। বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ। এরপর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব থেকে সুভাষ চৌধুরীর নেতৃত্বে আরেকটি গ্রুপ বের হয়ে মেয়র জলিল সাহেবের গলিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব নামে পৃথক সাংবাদিক সংগঠন গড়ে তোলেন। বছর দুই পর তারা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে একীভূত হয়। ২০১০ সালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব থেকে পুনরায় আরো একটি গ্রুপ বের হয়ে শহরের একটি অভিজাত চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সম্মেলন কক্ষে দৈনিক দৃষ্টিপাতের সম্পাদক জি এম নূর ইসলামের সভাপতিত্বে আরটিভি’র রামকৃঞ্চ চক্রবর্তীকে আহবায়ক এবং দৈনিক ভোরের দর্পণের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান মাসুমকে সদস্য সচিব করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট সাতক্ষীরা রিপোর্টার্স ইউনিটি গঠন করেন। বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ। এরপর ২০১৩ সালে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সংবাদ কর্মীদের নিয়ে সাতক্ষীরা সম্মিলিত সাংবাদিক এসোসিয়েশন গঠিত হয়। ২০১৫ সালের ১৬ অক্টোবর কুশখালী ইউনিয়নের সাতানী মোড়ে সীমান্ত রিপোর্টার্স ক্লাব গঠিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন জাহিদ হোসাইন, সম্পাদক ছিলেন আমিনুল হক। বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ। ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সাতক্ষীরা অনলাইন প্রেসক্লাব গঠন উপলক্ষে এক জরুরী সভা হয়। সেখানে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকতাকে গতিশীল করা, অনলাইন সংবাদের মাধ্যমে সেবা মানুষের দোর গোড়ায় পোঁছে দেওয়া ও সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে জাগো নিউজ২৪.কম এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকরামুল ইসলামকে আহবায়ক ও ক্রাইম নিউজ (সিএন) ২৪বিডি.কম এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মোঃ মুনসুর রহমানকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট সাতক্ষীরা অনলাইন প্রেসক্লাবের কমিটি গঠিত হয়। পরে একই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে আলোচনা ও প্রীতিভোজের মাধ্যমে সাতক্ষীরা অনলাইন প্রেসক্লাবের ২৩ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটিতে একাত্তর টিভি, সাহস২৪.কম ও যমুনা নিউজের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি বরুণ ব্যানার্জীকে সভাপতি ও জাগোনিউজ২৪.কম ও বিজয় টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আকরামুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এই সংগঠন থেকে সাংবাদিকদের একটি গ্রুপ বের হয়ে সাতক্ষীরা অনলাইন প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন করেন। সভাপতি ছিলেন হাবিবুল বাসার ফারহাদ (গাজী ফারহাদ), সম্পাদক আজিজুল ইসলাম। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর শহরের সার্কিট হাউস মোড়ে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের আরেকটি গ্রুপের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি গাজী মোক্তার হোসেনকে সভাপতি ও দৈনিক নওয়াপাড়া পত্রিকার প্রতিনিধি হাফিজুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট সাতক্ষীরা রিপোর্টার্স ক্লাবের কমিটি গঠন করেন। ২০১৭ সালের শেষের দিকে সুন্দরবন প্রেসক্লাব গঠিত হয়। প্রথম সভাপতি ছিলেন আইয়ুব আলী, সম্পাদক ছিলেন পিযুস কাউলিয়া পিন্টু। ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর খুলনা রোড মোড়ে সাংবাদিকদের এক সভায় এক জরুরি সভায় দৈনিক আলোকিত সকালের কলারোয়া প্রতিনিধি ও প্রেস নিউজ ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি আসিফ মাহফুজকে আহবায়ক ও সময় নিউজ ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি এসকে জাহাঙ্গীর আলমকে সদস্য সচিব করে সাতক্ষীরা জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটি গঠিত হয়। বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ। তরুণ সাংবাদিকদের আরেকটি গ্রুপ ২০১৯ সালের ২৬ জুন শহরের ইন্ডিয়ান মাসায়ালা হলরুমে আলোচনান্তে মোঃ মুনসুর রহমানকে সভাপতি ও অসীম বিশ^াসকে সাধারণ সম্পাদক করে সাতক্ষীরা রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটি গঠিত হয়। বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ। ২০২১ সালের ৪ মে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব অতিথি কক্ষে সর্বসম্মতিক্রমে এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের নিজস্ব প্রতিনিধি এম কামরুজ্জামানকে আহবায়ক এবং যুমনা টিভির নিজস্ব প্রতিনিধি আহসানুর রহমান রাজিবকে সদস্য সচিব করে সাতক্ষীরা টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। এছাড়াও আবুল কাসেমকে আহবায়ক ও আমিনা বিলকিস ময়নাকে সদস্য সচিব করে একটি পাল্টা সাতক্ষীরা টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের কমিটি গঠিত হয়। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর শহরের পলাশপোল গুড়পুকুর মোড় এলাকায় ‘সাংবাদিক ঐক্য’র কার্যালয়ে এক সাধারণ সভায় সাতক্ষীরার নবীন ও প্রবীন সংবাদকর্মীদের নিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘সাংবাদিক ঐক্য’ নামের সংগঠনটির। প্রথম আহবায়ক ছিলেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি দৈনিক যুগান্তর ও এনটিভির সুভাষ চৌধুরী। সদস্য সচিব ছিলেন দেশ টিভি ও দেশ রুপান্তরের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন। বর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম বন্ধ। ৮ জুলাই ২০২১ সকালে শহরের কাটিয়া এলাকায় অবস্থিত অস্থায়ী কার্যালয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা আলোচনা সাপেক্ষে সর্বসম্মতিক্রমে দৈনিক একুশে সংবাদ ও দৈনিক খুলনাঞ্চলের জেলা প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান আপনকে সভাপতি এবং সময়ের কন্ঠস্বরের জেলা প্রতিনিধি জাহিদ হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ঠ ‘সাতক্ষীরা সাংবাদিক সমিতি’র কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়। ২০২১ সালের শেষের দিকে সাপ্তাহিক মুক্ত স্বাধীন পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আবুল কালামকে সভাপতি ও জিএম মোশাররফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে সাতক্ষীরা সাংবাদিক ইউনিয়নের কমিটি গঠিত হয়। ২০২৩ সালের ২৪ মার্চ শহরের পানসি রেস্তোরা সংলগ্ন একটি অফিসে সাতঘরিয়ার স্টাফ রিপোর্টার হাবিবুর রহমান সোহাগকে সভাপতি ও দৈনিক পত্রদূতের নিজস্ব প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ বিশিষ্ট সাতক্ষীরা সাংবাদিক পরিষদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়। কদমতলা বাজারস্থ সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ফোরাম এর আত্মপ্রকাশ ঘটে, যার রেজিঃ নং ৫৮৩/০৪। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শেখ আমিনুর হোসেন। ২০২৩ সালে এখন টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আহসানুর রহমান রাজীবকে সমন্বয়ক করে সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্রের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ২০২২ সালে ৩১ মার্চ সাংবাদিকদের একটি গ্রুপ বিশেষ সভায় বাংলাভিশন টিভি’র জেলা প্রতিনিধি মো: আসাদুজ্জামান আসাদকে সভাপতি ও এসএম মহিদার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে সাতক্ষীরা জেলা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের কমিটি গঠন করেন। এই সংগঠন থেকে একটি গ্রুপ বের হয়ে ২০২৪ সালের ০১ জুলাই সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজারে একটি অফিসে জরুরী সভা করে সাতক্ষীরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের আহবায়ক কমিটি গঠন করেন। যার আহবায়ক শেখ রেজাউল ইসলাম (বাবলু), সদস্য সচিব সাইফুল আজম খান মামুন। ২০২৩ সালে সাতক্ষীরা টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম শুরু হলেও জেলায় বিভিন্ন টেলিভিশনে কর্মরত ফটোসাংবাদিকদের নিয়ে ২০২৪ সালের ২০ জানুয়ারি টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কমিটি গঠিত। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন সময় টিভির ক্যামেরানম্যান আমিনুর রহমান সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন যমুনা টিভির ক্যামেরানম্যান আবিদ হাসান। ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শহরের পলাশপোলস্থ জেলা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সাতক্ষীরা সাংবাদিক ক্লাব গঠনের লক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় আলোচনান্তে সর্বসম্মতিক্রমে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. আলতাফ হোসাইনকে আহবায়ক ও সাপ্তাহিক মুক্ত স্বাধীন পত্রিকার সম্পাদক মো. আবুল কালামকে সদস্য সচিব করে ৯সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। উক্ত কমিটির নেতৃবৃন্দ ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর দীর্ঘ আলোচনান্তে সর্বসম্মতিক্রমে এসএম মহিদার রহমানকে সভাপতি এবং মো. তৌফিকুজ্জামান লিটুকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন। এছাড়াও কদমতলা আঞ্চলিক প্রেসক্লাব, ঝাউডাংগা প্রেসক্লাব, এডিএস প্রেসক্লাব, সাতক্ষীরা নিউজ ক্লাব, আশাশুনি রিপোর্টার্স ক্লাব (২০১৪), শ্রীউলা আঞ্চলিক প্রেসক্লাব, আশাশুনি অনলাইন প্রেসক্লাব (২০১৭), বুধহাটা আঞ্চলিক প্রেসক্লাব, দরগাহপুর প্রেসক্লাব, দেবহাটা রিপোর্টার্স ক্লাব (১৯৯৭), দেবহাটা রিপোর্টার্স ক্লাব (২০২৪), কলারোয়া রিপোর্টার্স ক্লাব, কলারোয়া পৌর প্রেসক্লাব, কলারোয়ার বালিয়াডাংগা বাজারস্থ সীমান্ত প্রেসক্লাব, তালা রিপোর্টার্স ক্লাব, তালা সাংবাদিক ইউনিয়ন, পাটকেলঘাটা রিপোর্টার্স ক্লাব, পাটকেলঘাটা নিউজ ক্লাব, শ্যামনগর রিপোর্টার্স ক্লাব, শ্যামনগর অনলাইন প্রেসক্লাব, শ্যামনগর অনলাইন নিউজ ক্লাব, ভেটখালী বাজারস্থ সীমান্ত প্রেসক্লাব, ভেটখালী রিপোর্টার্স ক্লাব, রমজাননগর-কৈখালী রিপোটার্স ক্লাব, উপকূলীয় প্রেসক্লাব, কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাব, কালিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব, কালিগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি, কালিগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাব, নলতা শরীফ প্রেসক্লাব, ক্রাইম এসোসিয়েশন সাতক্ষীরা, জেলা প্রতিনিধির কার্যালয় সাতক্ষীরা, ভোমরা প্রেসক্লাব, ভোমরা স্থলবন্দর প্রেসক্লাবসহ ৭১টি ভিন্ন ভিন্ন নামে সাংবাদিক সংগঠন গড়ে তোলেন সাংবাদিকরা। উপরিউক্ত সাংবাদিক সংগঠনের মধ্যে সাংবাদিক ছাড়াও সংগঠন সদস্য হয়ে বসে আছে অনেকে। এমনকি এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় কিনেছেন অখ্যাত পত্রিকা, অনলাইন পত্রিকা ও অনলাইন টিভির সাংবাদিক কার্ডও। তারা সাংবাদিক সেজে মোটরসাইকেলে ‘প্রেস’ ও ‘সাংবাদিক’ লিখে বোকা বানাচ্ছে বিভিন্ন মহলকে। অনেকে রীতিমতো মাদক সেবন এবং বহনের কাজও করছে।’ এই নাম ধারী সাংঘাতিকদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকরা। এছাড়াও মতৈক্য না হওয়ায় সংগঠন বিমুখ অধিকাংশ সাংবাদিক। এই সাংবাদিকরা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব নামক সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সদস্যভুক্ত হলে তৈরি হতো একটি শক্তিশালী সাংবাদিক নেটওয়ার্ক। কমে যেতো অনেকাংশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানিও।
তথ্যসূত্রঃ
১। মোঃ আব্দুল মোতালেব, ‘কিছু কথা’-বিশেষ সংকলন বনানী, গুণীজন সংবর্ধনা (২) ১৯৯২, ব্যবস্থপনায়-সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব, পৃষ্ঠা-০৫, তারিখ-১০ এপ্রিল ১৯৯২।
২। আবু আহমেদ, পটভূমি, গঠনতন্ত্র, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব, পৃষ্ঠা-০১ ও ০২, তারিখ-১০ জুন ১৯৯৯।
৩। গঠনতন্ত্র, পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাব, তারিখ-১০ মার্চ ১৯৯১।
৪। বরুণ ব্যানাজী, সাতক্ষীরা অনলাইন প্রেসক্লাবের আহবায়ক আকরামুল, সচিব মুনসুর, sahos24.com, তারিখ- ১৮ জানুয়ারি ২০১৭।
৫। ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, কে.এম. জিয়াউল হক, jagonews24.com, আজহার কমফোর্ট কমপ্লেক্স (৫ম তলা), গ-১৩০/এ প্রগতি সরণি, মধ্যবাড্ডা, ঢাকা-১২১২, তারিখ- ১৯ ফেব্রুয়াারি ২০১৭।
৬। মাসুমা ইয়াসমিন, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, suprovatsatkhira.com, পলাশপোল চৌধুরীপাড়া, সাতক্ষীরা-৯৪০০, তারিখ- ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
৭। লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সম্পাদক, patradoot.net , তারিখ- ০১ নভেম্বর ২০২৪।
৮। মোঃ রিমন খান, সাংবাদিক সংগঠন কি সাংবাদিক ছাড়া হয়? dailybangladeshmedia.com, তারিখ- ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ।
৯। জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদপত্র।
লেখকঃ মোঃ মুনসুর রহমান
বার্তা সম্পাদক, সাপ্তাহিক সূর্যের আলো, সাতক্ষীরা। মোবাইল নং-০১৭৫৪২৪১৩৮৮।