এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষক সমাজের ঘুণপোকা, ধর্ষণ হলো ব্যাধি’, ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই’, ‘মাগুরার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত নরপশুর বিচার চাই’, ‘ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে’, ‘আশ্বাস নয়, আইনের বাস্তবায়ন চাই’ -সহ বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান করেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, ইয়াশিরুল কবীর সৌরভ, গোলাম রাব্বানী, ইসমাইল হোসেন রাহাত, সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, সায়েম আহমেদসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইবি শাখার সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, “গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৫,০০০-এর বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো ডকুমেন্টেড। আমরা এসব ঘটনার শাস্তি নিশ্চিত করতে পারছি না, নানা পন্থায় বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। আজ আমরা ন্যায়বিচারের দাবিতে এখানে দাঁড়িয়েছি। যদি সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”
তিনি আরও বলেন, “আন্দোলনে নারীদের অবদানের কারণেই আজ আমরা এখানে দাঁড়াতে পারছি। যখন আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন আমাদের মা-বোনেরা জীবন বাজি রেখে সামনে সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের এই অবদান কখনোই ভুলে যাওয়া মতো না। নারীদের ন্যূনতম হেনস্তারও বিচার করতে হবে এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এই দেশে মা-বোনেরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এস সুইট বলেন, “জুলাই বিপ্লবে প্রথম সারিতে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল সবচেয়ে বেশি। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম নারী দিবসে আমরা বেদনা-বিধুর সময় পার করছি। মাগুরায় চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে যা খুবই নিন্দনীয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার দাবি জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নারীদের ওপর একের পর এক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, সাইবার বুলিংসহ নানা ধরনের অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। এ বিষয়েও আমরা কড়া অবস্থান ঘোষণা করছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দক্ষতার সঙ্গে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ঠাকুরগাঁওয়ের সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনাটিও দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
তিনি জুলাই আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা স্মরণ করে বলেন, “নারীরা আমাদের আন্দোলনে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। আমরা তাদের জন্যই এখানে দাঁড়িয়েছি। যদি রাষ্ট্র নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জুলাই আন্দোলন বেগতিক হবে। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাই, দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন এবং নারীদের নিরাপত্তাহীনতা দূর করুন। প্রয়োজনে নারীদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং তাদের স্বাধীনতা, সুশিক্ষা ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন।”
“মাগুরার ঘটনায় ভুক্তভোগীর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা। প্রয়োজন হলে তাকে দেশের বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থাও করা উচিত। অবিলম্বে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। গত ১৫ বছরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা থেকে বেরিয়ে এসে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা দেশব্যাপী আরও ছড়িয়ে পরবে। অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতেই হবে।”— বলে দাবি জানান তিনি।