সাতক্ষীরা (কালিগঞ্জ) প্রতিনিধি: কালিগঞ্জে জামায়াত নেতা মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে পদ দখল করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাত,নানান অনিয়ম, দুর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে কথিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে। যথাযথ তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
লিখিত অভিযোগ ও তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জামায়াত নেতা, ২০১৩ সালের সহিংসতায় অংশগ্রহনকারী মাওঃ মনিরুজ্জামান ( সহকারী অধ্যাপক) বর্তমানে অবৈধ ভাবে বেতন ভাতা বিলে স্বাক্ষর করছেন। তিনি ২০১৭ সালের মে মাসে জেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হন। বিধি মোতাবেক ২০১৮ সালের মে মাসে তার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মেয়াদ শেষ হয় অথচ ২০১৮ সালের জুন মাস হতে অদ্যবধী চলতি দায়িত্ব অধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করে চলেছে। ধুরন্ধর মাওঃ মনিরুজ্জামান মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা ও আদেশ লঙ্ঘন করেছেন যা বে-আইনী ও দন্ডনীয় অপরাধ। এদিকে মাদ্রাসার মানেজিং কমিটির সভাপতি, এক সময়ের শিবির নেতা নুরুল হকের নেতৃত্বে কমিটির কথিত দাতা সদস্য, এলাকার কুখ্যাত মামলাবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও অর্ধডর্জন মামলার আসামী তালেব সরদারসহ কয়েকজন মিলে দুর্ণীতিবাজ মাওঃ মনিরুজ্জামানের মাধ্যমে মাদ্রাসার ১৪ জন শিক্ষককে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা ও মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের বড় বড় মেহগনী ও শিশুফুল গাছ কেটে বিক্রি করে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছে। এসব অর্থ হজম করতে অত্র মাদ্রাসার ১৫ জন শিক্ষকদেরকে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন মামলায় আসামী করা হয়েছে। সে সকল মামলার বাদী ও স্বাক্ষীরাই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অন্যান্য পদে আসিন। সবমিলে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের অভিযোগের প্রেক্ষীতে কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ”লীগের সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাঈদ মেহেদী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাথে নায়ে মাদ্রাসা পরিদর্শনে যান। তারপরে বেরিয়ে পড়ে থলের বিড়াল। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এসময় নিজেকে আড়াল করতে পালিয়ে থাকার চেষ্টা করলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকগন তাকে উদ্বার করে মাদ্রাসায় হাজির করে। একপর্যায়ে প্রশ্নের জবাবে বেরিয়ে আসতে থাকে মাদ্রাসার সম্পদ তসরুপ ও স্টাফদের মামলায় জড়িয়ে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজির নানান নাটকীয় কাহিনী। এসময় দুর্ণীতিবাজ ধুরন্ধর ভারপাপ্ত অধ্যক্ষ প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মামলা মোকদ্দমার কাহিনীর মূল হোতা তালেব সরদার ও হক সরদারকে দায়ী করে। যার অডিও এবং ভিডিও ধারণ রয়েছে। এগুলোকে ধামাচাঁপা দিতে তালেব ও হক সরদার গং উপজেলা পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে। এদিকে কুখ্যাত মামলাবাজ তালেবের ভয়ে এভাবে অবৈধভাবে ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে বসে সাভাবিক ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে ধরুন্ধর মনিরুজ্জামান। তিনি আরও স্বীকার করে বলেন যে, মাদ্রাসার হাজীরা খাতাসহ গুরুত্বপুর্ণ খাতা ও কাগজপত্র থাকে কথিত কমিটির সভাপতির বাড়িতে। মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় এসে হাজীরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে পুনরায় ব্যাগে ভরে খাতা বাড়ীতে নিয়ে যায়। অধ্যক্ষ শুধু নামকাওয়াস্তে পদে থেকে শুধু স্বাক্ষর করানোর কাজ করে আসছি। আমার কোন কর্তিত্ব নেই।
অপরদিকে মাদ্রাসার মুল অধ্যক্ষ মাওঃ আব্দুল কাদের হেলালী বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তিনি নিয়মিত মাদ্রাসায় দায়িত্ব পালন করলেও হাজীরা খাতায় স্বাক্ষর করানো থেকে বিরত রাখা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে বিপাকে ফেলতেই এধরনের অমানবিক আচারণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। চলতি দায়িত্বে থাকা (অবৈধ পন্থায়) অধ্যক্ষ মাওঃ মনিরুজ্জামানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি পরিস্থিতির স্বীকার, আমাকে কি মাপ করা যায়না? ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন অভিযোগগুলো ঠিক না। যেহেতু বিষয়টা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে, সেহেতু আমার আর বক্তব্য নেই। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আনছার শেখ বলেন আমার বয়স হয়ে গেছে(৭৬ বছর)। আমাকে তালেব যেভাবে বলে আমি তাই করি। আমি শুধু সহি করি। এরবেশি কিছুই জানিনা। স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন তালেব হক মিলে মাদ্রাসার সম্পদ তছরুপসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জনগনের সাথে নিয়ে ইতিমধ্যে মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলন করেছি। সামনে আরও প্রতিবাদ করবো চাঁদাবাজ আর মামলাবাজদের বিরুদ্ধে।