ঢাকা শনিবার ২ মে ২০২০: গণমাধ্যম দিবস নয়; গণমাধ্যম সপ্তাহ উদযাপন করুন। ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলো। ৩ মে বিশ্বমুক্ত গণমাধ্যম দিবস। কিন্তু সাংবাদিকদের এই দিবসটি রাষ্ট্রীয় ভাবে আজও উদযাপিত হয়নি। তাই আর গণমাধ্যম দিবস নয়। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ যখন সরকারকে সাথে নিয়ে নিজ পেশার উন্নয়নের জন্য সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজন করে নিজ পেশার সমস্যা-সম্ভাবনা তুলে ধরছেন; সেখানে সাংবাদিকদের জন্য কেন জাতীয় ভাবে গণমাধ্যম সপ্তাহ পালিত হবেনা! অবিলম্বে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহকে (১-৭ মে) রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি তুলতে আবারও আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফ।
গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএমএসএফ’র পক্ষ থেকে বলা হয়; দেশে শিক্ষা সপ্তাহ, কৃষি সপ্তাহ, মৎস সপ্তাহ, পুলিশ সপ্তাহ, সেনা সপ্তাহ, ফায়ার সপ্তাহ, ট্টাফিক সপ্তাহ, স্বাস্থ্য সপ্তাহ, দূর্ণীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ, পুষ্টি সপ্তাহ, ইন্টারনেট সপ্তাহসহ অগনিত সপ্তাহ ও দিবস রয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থস্তম্ভ। এই পেশার উন্নয়নে কোন সরকারেরই উদ্যোগ নেই। বর্তমান সরকার সাংবাদিক বান্ধব সরকার।
চলমান করোনায় সাংবাদিকদের জন্য কিছু করেনি তাতে কি! ধৈর্য্য ধরুন, এখনও সময় আছে। করোনাজয়ের পজিটিভ সংবাদ দিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান বিএমএসএফ সভাপতি শহীদুল ইসলাম পাইলট ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কিছু সাংবাদিক নেতার দলাদলিতে সারাদেশের সাংবাদিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলছেন। দয়া করে আপনারা দলাদলি বাদ দিন। সাংবাদিকদেরে কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করুন। আপনাদের কারনে এই পেশাটি আজ অরক্ষিত। অভিভাবকহীন এই পেশাটি রক্ষায় আন্তরিকতার সাথে সকল সাংবাদিককে এগিয়ে আসা উচিত। দাবি তুলুন, তথ্য মন্ত্রনালয়কে সাংবাদিকদের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা হোক।
সরকার বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালে ২০ কোটি টাকা সাংবাদিক কল্যান ট্টাষ্ট্রে জমা দিয়েছেন। ওই ফান্ডে বর্তমানে ৩৫ কোটি টাকা জমা রয়েছে বলে ট্টাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদ নিশ্চিত করেন।
গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বিএমএসএফ নেতৃবৃন্দ জাতিরজনকের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলটি রাহুমুক্ত করে একটি আধুনিক প্রেস কাউন্সিল গঠন করার আহবান জানানো হয়। পুরানো সেকেলের দালালে ভরপুর ছোট্ট এই প্রতিষ্ঠানটির কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলে অবিলম্বে সারাদেশের পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করারও আহবান জানানো হয়।
সর্বপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিানাকে দেশে চলমান করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ সাংবাদিকদের কথা পুনরায় স্মরণ করিয়ে বিএমএসএফ নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতিমধ্যে দেশে প্রায় ৪০ জন সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে দু’জন মৃতবরণ করেছেন। তবুও দেশের সাংবাদিকরা সম্মুখভাগে থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ফলে জনগন সচেতনতার সাথে করোনামুক্ত হতে চলছে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভুমিকা অন্যপেশার চেয়ে অনেকগুন বেশি। অন্যান্য পেশাজীবিরা সরকারের পক্ষ থেকে নানা উপকরণ ও সহায়তা গ্রহন করলে এখন পর্যন্ত সাংবাদিকরা বঞ্চিত রয়েছেন। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার খাদ্য সহায়তা কর্মসূচী রক্ষায় দূর্ণীতি-অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে শতাধিক সাংবাদিক মিথ্যা মামলা-রক্তক্ষয়ী হামলা ও লাঞ্ছিতের শিকার হয়েছেন। ক্যামেরা-মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়। সরকারের পক্ষ থেকে করোনাকালে যে সকল সাংবাদিকরা মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তাদের মামলা প্রত্যাহার করে আহতদের চিকিৎসা ব্যয় রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে।