নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মুন্সী লাল মিয়া ছিলেন দানবীর, সাদামনের মানুষ ও পরিছন্ন রাজনীতিবিদ। তার ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এলাকার নেতাকর্মীরা (জন্ম- ১লা মে ১৯৩৭, মৃত্যু বরন করেন ১৫ই জুন ২০১৬ ইং)।
কালিয়া উপজেলার শিক্ষা প্রসারের অগ্রদুত,একজন মানব দরদী,যার কাছে গরীব বড়লোকের ভেদাভেদ ছিলোনা।যার প্রচেষ্টা ছিল মানব উন্নায়ন। দানবীর জনাব মুন্সী লাল মিয়া অনেক সদালপি মানুষ ছিলেন, ছিলেন খাশিয়াল ইউনিয়ন ও কালিয়া উপজেলার বারবার নির্বাচিত সফল চেয়ারম্যান, নির্বাচিত হয়েছিলেন দেশসেরা উপজেলা এবং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, দেশসেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে পুরস্কার পেয়ে ছিলেন শহীদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের হাত থেকে পুরস্কার এবং দেশসেরা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ এর হাত থেকে পুরুস্কার।পেয়েছিলেন মুসলিম সমাজের জন্য কাজ করার জন্য ধন্যবাদ পত্র।যদি কোন মানুষ কোন কাজের জন্য উনার কাছে সরনাপন্ন হয়েছেন, রাজনৈতিক দিক দিয়ে মতপার্থক্য আছে এমন লোক ও উনার কাছথেকে খালি হাতে ফিরে নাই ।
শিক্ষা প্রসারে অনেক প্রতিষ্ঠান নির্মানে মরহুম দানবীর জনাব মুন্সী লাল মিয়ার ছিল অনেক অবদান। দানের ব্যাপারে ছিলনা কোন কৃপণতা , তাইতো সবাই দানবীর উপাধি দিয়াছেন উনাকে। নিজ এলাকায় রয়েছে নিজের বাবার নামে স্বনামধন্য কলেজ, “মুন্সী মানিক মিয়া ডিগ্রি কলেজ” এই কলেজ এর অনেক ছাত্র এখন দেশ পরিচালনায় উচ্চ পদে বিচরন করছেন। নিজ এলাকায় বন্ধ হয়ে যাওয়া একমাত্র বালিকা বিদ্যালয় পুনঃ প্রতিষ্ঠা করে নারী শিক্ষার পথকে করেছে শুগম। প্রতিষ্ঠা করেছেন অনেক মসজিদ ও মাদ্রাসা ।
কখনও নিজের সুখ শান্তির কথা চিন্তা করেন নাই, ভেবেছেন শুধু জনগনের কথা, উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময় সরকারি জীপ ব্যবহার করতেন, যাওয়া আসার পথে যদি দেখেছেন মানুষ হেটে যাচ্ছেন এবং জীপ এ বসার বাবস্থা আছে, তখন উনি গাড়ি থামিয়ে ওই মানুষটাকে উঠাইয়ে নিয়ে একসাথে যেতেন ও খোঁজখবর নিতেন। এমন কি নিজে গাড়িতে, ভ্যানে গেলে সিট পুরন না হওয়া পন্ত রাস্তা থেকে মানুষ উঠিয়ে তার পাশে বসিয়েছেন। নিজ বাড়ি থেকে অফিস এ যাওয়ার সুবিধার জন্য নিজ এলাকার নদীর উপর সেতু না বানিয়ে সেই সেতুকে করেছেন অন্য এলাকায় ( কলাবাড়িয়া) , কারন ছিল ওই এলাকাই কথা দিয়েছেলেন নির্বাচন এর পূর্বে। কালিয়া উপজেলার উন্নায়ন এর রূপকার ছিলেন মরহুম জনাব মুন্সী লাল মিয়া, ছিলনা কোন চাঁদাবাজি। মানুষরা শান্তিতে বসবাস করতেন। উনার সততাই ছিল আসল পুঁজি, ত্যাগ শিকার করতে কখনও দ্বিধা করতেননা, নাড়াইল জেলার অন্যতম প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও কারও সাথে দ্বন্দ্ব ছিলোনা উনার। জনাব মুন্সী লাল মিয়া ছিলেন ন্যায় বিচারক।সঠিক বিচার করছেন। এজন্য তার অনেক আত্তিয়রা তার থেকে দুরে সরে গেছেন।কারন তিনি অন্যায় এর সাথে আপোষ করেনি সে যেই হোক।এলাকায় একটা কথা এখনো প্রচলন আছে মুন্সী লাল মিয়ার আমলে হিন্দু মুসলিম দরজা খুলে ঘুমায়ছে।কোন চুরি ডাকাতি হয়নি।তার আমলে রেকড ১৫বছর খাশিয়াল ইউনিয়নে পুলিশ ঢুকেনি।তিনি অসীম ক্ষমতার অধিকারি হয়ে ও কোন শত্রুদের হয়রানি করেননি।কোন হিন্দু অসহায় দের জমি তার আমলে কেউ দখল করতে পারেনি।এলাকার শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজ মাদ্রাসাতে চাকুরি দিয়েছে বিনা মুল্যে।চাষী গরীব দুঃখীদের সাথে এক প্লেটে ভাত খেয়েছেন।কখনো মাঝি ভ্যান আলাদের গুনে টাকা দেননি হাতে যা উঠছে দিয়ে দিছেন।অনেক গরীব দুখির ছেলে মেয়ের বিয়ে নিজে খরচ করে নিজে দাড়িয়ে থেকে দিয়েছেন।এলাকায় হাট মিলানোর জন্য পানের চান্দি করে দিছেন।খাদ্য গোডাউন,পোষ্ট অফিস,পুলিশ ফাড়ি,সিটি স্টোর,কৃষি অফিসের কোটি কোটি টাকার জমি দান করে গেছেন।তিনার আমলে তিনার নিজের উদ্দোগে কালিয়া মুক্তিযোদ্ধা অফিস করা হয়। এমন নেতা এখন পাওয়া দুস্কর। তিনার এক চাচা পাকিস্তানের আমলের সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী এবং স্পীকার জনাব আব্দুল হাকিম মিয়া,আর এক চাচা জনাব নুরালাক মিয়া ছিলেন ব্রিটিশ রেনশালী বোর্ডের ৪০বছরের চেয়ারম্যান,তিনি ছিলেন প্রথম কোটাকোল ইউনিয়ন এর নদীর এপারের চেয়ারম্যান ,আর এক চাচা জনাব মোজাহার উদ্দিন মিয়া ছিলেন খাশিয়াল ইউনিয়ন এর ৪০বছরের চেয়ারম্যান।দানবীর মুন্সী লাল মিয়া সাহেবের পিতামহ তমিজ উদ্দিন মিয়া ছিলেন বৃহত্তর ফরিদপুরের অন্যতম প্রভাবশালী জমিদার।ব্যক্তি জীবনে দানবীর মুন্সী লাল মিয়ার চার বোন,দুই ভাই,ছয় ছেলে এবং চার মেয়ে রয়েছে।যারা সবাই শিক্ষিত যেটা রাজনৈতিক পরিবারে বিরল দৃষ্টান্ত। বিনম্র শ্রদ্ধা এমন নেতার প্রতি। সাদা মানুষের সততার ও পরিছন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য নাড়াইল-১ এর মানুষ সারাজীবন মরহুম জনাব মুন্সী লাল মিয়াকে স্মরণ করবে, যার কারনে নাড়াইল-১ এর সাধারন মানুষ উনার উত্তরসূরি হিসাবে উনার পরিবারের প্রতিনিধি চায় নড়াইল-১ এর সাধারন জনগনের সেবা করার জন্য।
এলাকার নেতা কর্মীদের ও নিরাপদ সড়ক ও রেলপথ বাস্তবায়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং ২বাংলারনিউজ.কম এর সম্পাদক সৈয়দ খায়রুল আলম এর পক্ষথেকে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ।