৯০ ভাগের বেশি বেতন ছাড়া সাংবাদিকের দেশে করোনাকালে তাদের পাশে যেন কেউ নেই। এখনো সংশ্লিষ্ট মিডিয়া মালিক কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জন্য কিছুই করা হয়নি।
বিগত ২ মাসের অধিক সময় ধরে চলমান করোনায় সম্মুখ ভাগে সাংবাদিকরা দায়িত্বপালন করলেও তারা কেমন আছে কেউ খবর নিচ্ছেনা। ওই ১০ ভাগের মধ্যেও যারা রয়েছেন তাদের অধিকাংশকে বিগত ২/৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেনা। অনেকের ঘর ভাড়া আটকে গেছে ২/৩ মাসের। চাকরিচ্যুত/ছাটাইও যেন অব্যাহত।
করোনায় মফস্বলের সাংবাদিকরা বেশিই ক্ষতিগ্রস্থ। নুন আনতে পান্তা ফুরায় পেশাটিতে থাকা দেশের সর্বোচ্চ ৩০ হাজার সাংবাদিকের ভাগ্য যেন আজ অনিশ্চিত।
কিন্তু এদেশের সাংবাদিকরা ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ অভূত্থান, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধসহ রাষ্ট্রীয় সকল প্রয়োজনে সাংবাদিকরা ছিল অগ্রভাগে। ২০২০ সালে মহামারী করোনাকালেও সাংবাদিকরা সম্মূখভাগে দায়িত্ব পালন করছেন রাষ্ট্রীয় কোন বিনিময় ছাড়া। এরই মাঝে সারাদেশে শতাধিক সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ সাংবাদিক মারা গেছেন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সাংবাদিকের চাপা কান্না প্রতিনিয়ত শুনতে হয়। তাদের বেদনাঘন হৃদয় বিদারক চাপাকষ্ট যেন কেউ শুনতে পায়না। সমাজের সকল পেশার মানুষকে নিয়ে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও কেবল সাংবাদিকের জন্য নয়। আসন্ন পবিত্র ঈদউল ফিতরে অনেকের ঘরে চিনি সেমাই জুটবে কিনা তা এখনও অনিশ্চিত।
এখনও সময় আছে; সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকের জন্য কিছু করার ইচ্ছা কিংবা আগ্রহ থাকলে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনায় জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সহযোগীতার উদ্যোগ গ্রহন করতে পারেন।
করোনা মোকাবেলায় সরকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্নজনকে পিপিই দেয়া হলেও কেবল সাংবাদিকদের কিছুই দেয়া হয়নি। বিভিন্ন পেশার মানুষকে চিহ্নিত করে খাদ্য সহায়তা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছাসহ নানামুখী অব্যাহত সহায়তা চলছে। কিন্তু সাংবাদিকরা এ সকল সহযোগীতার বাইরে।
বিগত এপ্রিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দু’বার বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম অনলাইনে স্মারকলিপি পাঠিয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ সাংবাদিকদের আর্থিক সহযোগিতার দাবি তোলেন।
এদিকে দূ:খের সাথে বলতে হচ্ছে করোনাকালে কে বাঁচে কে মরে কেউ জানেনা। এর মাঝে কিছু ত্রান চোর কর্তৃক সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা, মিথ্যা হয়রাণী মামলায় গোটা সাংবাদিকমহল ক্ষুব্ধ। যে সকল সাংবাদিক করোনাকান্ডে মামলার শিকার হয়ে কারাগারে রয়েছেন ঈদের আগে তাদের মুক্তির দাবি করা হচ্ছে। ঈদের পরে বিএমএসএফ’র পক্ষ থেকে সকলকে সাথে নিয়ে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধে আইন প্রণয়নের দাবি আরো জোড়ালো করা হবে।
♦আহমেদ আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটি, ০১৭১২৩০৬৫০১, মে ১৮, ২০২০ খ্রী:।