।।উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধি।। ঘরে চাল নেই নায়েব কে ঘুষ দিতে হবে ২ শত টাকা। করোনায় গৃহবন্দী কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় দুস্থ গৃহহীন পরিবার। এক দিকে করোনার কারনে নেই আয়ের উৎস অন্য দিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ফলে বসত ঘর টুক ভেঙে পড়ে গেছে। চাউল কিনা টাকা নেই। এ দিকে সরকার দেওয়া বিনামূল্যে ঘর পেতে তালিকায় নাম উঠাতে নায়েব কে দিতে হবে ২ শত টাকা। তালিকায় নাম উঠলেই ঘর পাবে এমন কোন নিশ্চয়তা দিতে পারবে নায়েব। কিন্ত তালিকায় নামের স্থান পেতে গুনতে হবে ২থেকে ৫শত টাকা। এমনি অভিযোগ উঠেছে নড়াইল সদরের কলোড়া ইউনিয়নের ভূমি অফিসের তহশীলদার হাবিবুর রহমানের (নায়েব) বিরুদ্ধে। ঘর দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে গরীব অসহায় দুস্থ পরিবারের নিকট হতে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি । এলাকাবাসীর অভিযোগে যানা যায়, অসহায় ভূমিহীন গরীব দের গৃহ নির্মানের জন্য তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। প্রকৃত ভূমীহীন ও গৃহহীন পরিবার খুজে বের করে তার তালিকা প্রনয়নের কথা থাকলে ও হাবিবুর রহমান অর্থ হাতানোর জন্য এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছেন। এলাকায় মাইকিং করে সকল গরীব অসহায় পরিবারকে ভূমি অফিসে ডেকে নিয়েছেন। ঘর দেওয়া হবে প্রলোভন দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড, জমির পর্চা ছবি নিয়েছে। সেই সাথে নেওয়া হয়েছে ২ শ করে টাকা। শত শত পরিবারের নিকট হতে নেওয়া হয়েছে এই টাকা। যে টাকা দিতে পারিনি তার কাছ থেকে ভোটার কার্ড জমির পর্চা ও ছবি নেওয়া হয়নি। গরীব হতদরিদ্র ভূমিহীন হলে ও তার নজরে আসেনি সে। আগদিয়া গ্রামের বশির মোল্যার স্ত্রী রেবেকা বেগম বলেন, আমি ভাঙ্গা ঘরে থাকি। করোনা কালে কর্মহীন হয়ে পড়েছি। ঠিকমত বাজার করে খেতে পারছি না। অন্যর নিকট হতে ধার করে ২ শ টাকা দিয়েছি নায়েব কে।
একই গ্রামের ইছুব মোল্যার ছেলে জসিম মোল্যা জানান, আমি ভ্যান চালিয়ে খাই। ঘরে খাবার নেই। খুপড় ঘরে থাকি। একটা ঘর পাওয়ার আশায় ভূমি অফিসে গিয়ে নায়েবকে ২ টাকা দিয়েছি। রোজিনা বেগম জানান, গরীব মানুষ আমরা বাড়ি টাকা নেই। সুদে করে এনে নায়েবকে টাকা দিয়েছি ঘর পাওয়ার আশায়। অপর দিকে নাসির মোল্যার স্ত্রী আছিয়া বেগম জানান,আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার নিকট হতে জমির পর্চা ভোটার কার্ড ও ছবি নেওয়া হয়নি। আমাকে বলল টাকা না দিলে কপালে ঘর ঝুটবে না। একই ভাবে হাসমত মোল্যার স্ত্রী শাহানারা জানান, টাকা না থাকায় আমি বললাম কাল টাকা দেব । আমার কাগজ গুলি রাখেন। নায়েব আামকে ভূমি অফিস থেকে বের করে দিল।অভিযোগ উঠেছে এ টাকা তোলার জন্য তহশিলদার ভূমি অফিসে দালাল চক্রের সৃষ্টি করেছন। এই দালাল তার টাকা নেওয়ার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। শুধু মাইকিং নয় দালাল চক্র বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারন মানুষকে বুঝিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
করোনা কালে ও থেমে নেই এই লোভী নায়েবের অসৎ কর্মকাণ্ড। এলাকার সচেতন মহল এহেন ঘটনার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছন।
এ বিষয়ে কলোড়া ইউনিয়নের নায়েব হাবিবুর রহমান জানান, কারো নিকট হতে অর্থ নেওয়া হয়নি।
কলোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্বাস আলী সর্দার জানান, খরচ বাবদ কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় বলেন, টাকা নেওয়ার কোন কথা নেই। টাকা নেওয়া হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা সেলিন জানান, এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।