হাফিজুর রহমান শিমুলঃকালিগঞ্জ উপজেলার সুরত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ( ৯ জুলাই) বেলা ১১ টায় বিদ্যালয়ের হলরুমে চলমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কতিপয় দুস্কৃতকারীর সাথে প্রধান শিক্ষকের মনোমালিন্য নিরসন ও বিদ্যালয়ের শিক্ষাসহ সার্বিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এ অভিভাবক সমাবেশে কাঠুনিয়া রাজবাড়ী ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহাব এর সভাপতিত্বে ও সুরত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হযরত আলীর পরিচালনায় সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য রতনপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বর মাসুম বিল্লাহ সুজন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও রতনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহেদ, শ্যামনগর মহসিন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ভুরুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকাত আলী, স্কুলের শুভাকাঙ্ক্ষী নজির আহমেদ, জোবেদ আলী, স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক, মুড়াগাছা স্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রহমান, প্রাক্তন ছাত্র প্রভাসক শফিক আহম্মেদ দবীর, সংবাদকর্মী হাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য অভিবাবক বৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে সুরত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হযরত আলী বলেন আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান, স্কুলের বহুল বিতর্কিত ক্রীড়া শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মুকুল ও অবৈধ পন্থায় নিয়োগকৃত লাইবেরিয়ান মোশারফ হোসেন কে দোষারোপ করে বলেন তারা আমার ক্ষতি করতে মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ মনোমালিন্যের জের ধরে গত ২০ জুন ২০২০ তারিখ বেলা আনুমানিক টায় কাঠুনিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের পুত্র মোশারফ হোসেন ও তার ভাই মোঃ বাবু, চক পরানপুর গ্রামের শওকত হোসেনের পুত্র শহীদুল ইসলাম মুকুল, শ্যামনগর উপজেলার গৌরীপুর গ্রামে আমার বাড়ির সামনে এসে আমাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ সহ মারধর জখম করার হুমকি প্রদান করে। এমনকি আমার বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে মারতে উদ্যত হয়। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক হযরত আলী বাদী হয়ে ২১ জুলাই শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন, যার জিডি নং ৯১৬,। এরপরেও থেমে নেই মুকুল, মোশারাফ ও সুরত আলীর নানামুখী ষড়যন্ত্র। তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও জীবন এবং সম্পদের ক্ষতিসাধন করতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য মাসুম বিল্লাহ সুজন বলেন আমরা স্কুলের দলাদলি ভুলে স্কুলটির ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে চাই। গুটিকয়েক ব্যক্তি তাদের হীন ব্যক্তিস্বার্থের কারণে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিদ্যালয় তথা শিক্ষার মান। স্কুলের লাইবেরিয়ান মোশারফ হোসেনের নিয়োগকে কেন্দ্র করে স্কুলের সাবেক সভাপতি সুরত আলী, চলমান সভাপতি সাইদুর রহমান ও স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মুকুল প্রধান শিক্ষককে দোষারোপ করে স্কুলের সার্বিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি আরো বলেন মোশারফ হোসেন কে যোগসাজশে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তার কাছ থেকে সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা নেয়া হয় । এরমধ্যে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা সাবেক সভাপতি নিজ হাতে নেয় এবং বাকি ৬ লক্ষ টাকা কমিটির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল অহেদ এর নিকট জমা দেয়। বে-সরকারি স্কুলের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। নিয়োগের পর পরেই মোশারফ এমপিওভুক্ত হয়। সম্প্রতি ঐ মোশারফ ও শহিদুল প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে এবং তাকে দোষারোপ করছে যা অন্যায়।আমরা স্কুলের সার্বিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চাই। মাননীয় সংসদ সদস্য এস এম জগলুল হায়দার বিষয়টি নিরসনে অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহাব এর উপরে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সকলকে নিয়ে তার সমাধান করবেন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ব্যাপক নিরাপত্তাাহীনতায় রয়েছেন। অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে কাঠুনিয়া রাজবাড়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহাব বলেন যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা কেউ নেই মিটিংয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত হয় না। দলাদলি ও গ্রুপিংয়ের কারণে বিদ্যালয়টি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে থেকে রেহাই পেতে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য সকল অভিভাবকদের ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে প্রয়োজনে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে স্কুলে আবারও বসাবসি করা হবে। আগামীতে স্কুল নিয়ে আর কোনো ষড়যন্ত্র করতে দেওয়া হবেনা, প্রয়োজনে প্রতিহত করা হবে। স্কুলের নিয়োগে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সুরত আলীর নিকট জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।