মোঃ মনির হোসেন শাহীন ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের নারুই গ্রামের ছাবিকুন্নাহার নীলা নামক নারী প্রতারক দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী যুবকদের তার খপ্পরে ফেলে ভূয়া এভিডেভিড মাধ্যমে দেনমোহরের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আদালতে প্রতারণার মামলা করেন এক ভুক্তভোগীর ছোট ভাই এবং প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে আজ নূরনগর সাংবাদিক ফোরাম সংলগ্ন শিবপুর বাজারে সকাল ১১ ঘটিকায় এলাকাবাসী মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত থাকা গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের তথ্য সূত্রে জানা যায়,এই প্রতারণায় শুধু সে এক নয়, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। এই চক্রের মূলহোতা ছাবিকুন্নাহার নীলা( নিলা নাঈম),তার সহযোগিরা হলে,শারমিন সুলতানা(৪৫), আফরুন্নাহার শায়লা(১৫),জাহের মিয়া(৪০),মোহাম্মদ মিয়া(৩০)সহ আরো অনেকে।তাকে আইনগত সহযোগিতা করতে আইনজীবী ও স্থানীয় শক্তির সহযোগী হিসেবে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন ।
এই নারী চক্রের প্রতারণার স্বীকার শিবপুর সড়ক পাড়ের ওমান প্রবাসী বাবুর পিতা কতুব মিয়া প্রথমে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে না চাইলেও চক্রটি শাস্তি পেলে সমাজে এমন অপরাধ হবে না বলে চিন্তা করে বলেন,আমার পুত ওমানে থাহে এই মাইয়া হেরে ফান্দ ফালাইয়া আমার মানসম্মান সব শেষ করছে,আমি আগীলা দিনের মানুষ কিছু বুজি না ইতা কি বলে আছে ফেসবুক হ্যান থাক্কিয়া ছবি লইয়া আমার পুতেরে স্বামী দাবি করে, কোর্টের এক উকিলে কইল ৭০ হাজার টেহ্যা দিলে আর জামেলা অইতো না পরে আমার মেয়ের জামাই এই টেহ্যা দিইয়া জামেলা শেষ করছে।
আরেক ভুক্তভোগী বঘডহর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি একই কায়দায় প্রতারণার স্বীকার হয়,প্রথমে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত বলবে বলেও পরে স্ত্রী সন্তানের কথা ভেবে মুখ খুলতে রাজী না হওয়ায় ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত থাকা উনার ভাতিজা মাওলানা মেহেদী হাসান বলেন,আমরা চাচার সাথে যা হয়েছে আর যেন কোন পুরুষের সাথে এমনটা না হয়,সমাজে শুধু নারীরা না আজ নারী কতৃক পুরুষও নির্যাতিত হচ্ছে। আমার চাচা প্রবাসে থাকা অবস্থায় নিলা উনার ফেইসবুকে বন্ধু হয়ে ইমু নাম্বার নিয়ে প্রতিনিয়ত ভিডিও কলে আপত্তিকর অবস্থায় কথা বলে বলে ফাঁদে ফেলে দেশে আসা মাত্র তার চক্রের সবাইকে নিয়ে একটি মাইক্রোবাসে করে এয়ারপোর্টে থেকে তুলে হবিগঞ্জ নিয়ে যায়।সেখানে দীর্ঘদিন আটকিয়ে রেখে আমার চাচার কাছে থাকা ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়,এদিকে আমরা চাচাকে খুঁজে না পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি মামলা করি।মামলা করার কিছু দিন পার হতেই আমার চাচা কৌশলে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে তাদের খপ্পর থেকে বাড়িতে এসে ঘটনার বর্ণনা করলে আমরা সবাই বিষয়টি অবগত হই।সে তাতেও হ্ম্যান্ত না হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা ও নবীনগরে আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে আমার চাচাকে হয়রানি করার চেষ্টা করলে, আমাদের চেষ্টায় সে ব্যর্থ হয়।আমি শুনেছি সে আরো অনেক প্রবাসী যুবকদের সাথে এমনটা করেছে, যদি তার উপযুক্ত বিচার হয় তবে আরো কোন প্রবাসী যুবক নিলা নামক নারী প্রতারকের খপ্পরে পড়ে নিজের সোনার সংসার নষ্ট করবে না।পরিশেষে এই ঘটনা তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানায়।
এই সম্পর্কে আদালতে অভিযোগ করা ভুক্তভোগীর ছোট ভাই মামলার বাদী মাহমুদুল হক রিপন বলেন,
এই নারী প্রতারক চক্রের মূলহোতা নিলা সে একজন শিক্ষিত ও সুচতুর হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থেকে তার আশেপাশের সম্ভান্ত্র পরিবারের প্রবাসী যুবকদের বেছে নিয়ে প্রথমে তাদের ছবি সংগ্রহ করে, আর চক্রের অন্য সদস্যরা খুঁজখবর রাখে ছবি সংগ্রহ করা ব্যক্তটি কবে বিদেশ থেকে ছুটিতে দেশে আসবেন।যেই তারিখে ব্যক্তিটি বিদেশ থেকে দেশে আসবে তার ৫/৬ দিন পরের তারিখ দেখিয়ে একটি ভূয়া নিকাহনামার এভিডেভিড বানিয়ে কিছু দিন পরই স্ত্রী দাবি করে বাড়িতে তাদের চক্রের কাউকে পাঠিয়ে হুমকি ধমকি দেয়। পরে একটি মহল আড়াল থেকে বিভিন্ন মাধ্যম বিষয়টি শেষ করার কথা বলে এভিডেভিডে ধার্য্য করা দেনমোহরের টাকায় রফাদফা করে দেয়, রফাদফার টাকা বুজে পেলে তাদের আর কোন আপত্তি থাকে না।আমার ভাইয়ের ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে কিন্তু আমরা এই রফাদফায় রাজী না হওয়ায় আদালতে যৌতুকের দাবিতে মামলা করেন এবং আদালত এই চক্রের মূলহোতা মামলার বাদীনি নিলাকে পর পর চার বার তথ্য প্রমাণ নিয়ে হাজির থাকতে বলার পরও সে হাজির না থাকায় এই মামলা থেকে আমাদের খালাস প্রদান করেন,এমনি গ্রামীণ সালিশেও সে ভাড়া করা গুন্ডাপান্ডা দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করলে গ্রামীণ সালিশে কোন প্রমাণাদি না দিতে পারায় ক্ষমা চেয়ে পালিয়ে যায়।এখন নানান ভাবে টাকার জন্য আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছে তাই আমি বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে ০৪/১০/২০ ইং তারিখে সি আর ২৬৩/২০ মামলা দায়ের করেছি করেছি,।আমি চাই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাদের শাস্তি হলে সমাজে আর কোন সম্ভান্ত্র পরিবার এদের দ্বারা হয়রানি ও অপমানিত হবে না।
এই সম্পর্কে জানতে প্রতারক চক্রের মূলহোতার গ্রামের ঠিকানায় যোগাযোগ করা হলে তার নিকট আত্মীয় তাজুল ইসলাম বলেন,আমি জানি না সে কোথায় থাকে তার মা আমার চাচাতো ভাইয়ের বউ ছিল কিন্তু অনেকদিন পূর্বে সে তার স্বামীকে ফেলে হবিগঞ্জের এক লোকের কাছে বিয়ে বসে ঐখানে তাদের নিয়ে বসবাস করছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত হতে বাদীর আইনজীবী এড.দেলোয়ার হোসেন দুলালকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,মামলাটি আমার মাধ্যমে হয়েছে এবং বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পুলিশি তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।