উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের চরবিলা গ্রামের রাজ কুমার জমিতে বর্তমানে জৈব সার ব্যবহার করে শাক-সবজি চাষ করেছেন । ফলন্ও বেশ ভালো হয়েছে । উতপাদিত সবজি বিক্রি করে ৫০ দিনে ঘরে তুলেছেন ২০ হাজার টাকা । আরো প্রায় ৩০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি হবে বলে তিনি জানান । ছেলে বাসুতোষ পাল যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজে সমাজ বিজ্ঞানে অনার্স এবং ছোট ছেলে পার্থ পাল ঝিনেদা পলি টেকনিক কলেজে আবহাওয়াবিদ বিভাগের ছাত্র । দুই বছর ধরে এই প্রান্তিক চাষী তার জমিতে মৌসুমি শাক-সবজি চাষ করে তার উতপাদিত ফসল বিক্রি করে চার সদস্যের সংসারের সার্বিক ব্যয় চালিয়ে যাচ্ছেন ।
রাজ কুমার পাল(৫২) কখনো ভ্যানচালক,কখনো মাটিকাটা শ্রমিক,আবার কখনো পরের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন । স্বল্প আয়ের কারণে তখন অভাবের তাড়নায় অনেক সময় স্ত্রী,দুই ছেলে নিয়ে না খেয়ে থেকেছেন । হতদরিদ্র রাজ কুমার কোনো উপায় না পেয়ে যখন দিশেহারা তখন স্থানীয় কৃষি অফিসের ব্লক সুপারভাইজারের(উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা) পরামর্শে বাড়ির সামনের উঠানসহ মাত্র ৫০ শতাংশ জমিতে মৌসুমি শাক-সবজি চাষ শুরু করেন । এই জমিতে খিরাই,আলু,শিম,ঝিঙা,টমেটো,ডাটা,পালংশাক,পুইশাক,লালশাক,ঢেড়শ,বাতাবি লেবু চাষ করে প্রতি বছরের আয়ে সংসার চালানো,ছেলেদের লেখাপড়ার খরচবহনসহ সঞ্চয়্ও করে থাকেন ।
রাজ কুমার পাল জানান,প্রতিদিন ভোরে দুজনে(স্বামী-স্ত্রী) মিলে জমি থেকে টাটকা সবজি তুলে পরিস্কার করেন । পরে বাইসাইকেলের পেছনের ক্যারিয়ারে চারটি বাগে করে ১৫ কিলোমিটার দূরে শহরের বাজারে বিক্রি করতে যান । এতে তার লাভ্ও থাকছে অনেক । তিনি বলেন, গত বছর পাইকারি দরে বিক্রি করতে গিয়ে ১০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছিল । এবার তিনি উতপাদিত ফসল পাইকারিভাবে বিক্রি না করে বাজারে নিজ হাতে বিক্রি করছেন । এতে তিনি দাম্ও বেশি পাচ্ছেন । গত বছরের লোকসানটা এবার উঠে আসবে বলে জানান । উদ্যমি চাষী রাজ কুমার পাল মাত্র আট হাজার টাকা ব্যয় করে এ মৌসুমে উচ্চফলনশীল জাতের সবজি ফলিয়েছেন । মৌসুমি শাক-সবজি চাষ করে এখন স্বাবলম্বী রাজ কুমার ।তার দেখাদেখি গ্রামের আরো ২০টি পরিবার বিষমুক্ত সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন ।বর্তমানে তার কোনো অভাব অনটন নেই বলে জানান । সঞ্চয়কৃত টাকা দিয়ে আগামি বছর কিছু জমি কিনবেন । তার এ কাজে সব সময় স্ত্রী সহযোগিতা করে থাকে ।