দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় সাংবাদিকদের ওপর দমনপীড়ন চলছেই। এই আইনটি রাষ্ট্রের সাংবাদিকদের ওপর কার্যকর রাখা আর ফুটো কলসিতে পানি ঢালা একই কথা। দখল-দূর্ণীতিবাজ,ঘুষখোর, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংবাদ লিখলেই একেরপর এক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দ্বারা সাংবাদিকদের হেনস্থা, হয়রাণী ও গ্রেফতার করে জেলজুলুমের ঘানি টানতে হচ্ছে।
অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় সাংবাদিকদের আর হয়রাণী না করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম বিএমএসএফের কেন্দ্রীয় আহবায়ক শহীদুল ইসলাম পাইলট ও সদস্য সচিব আহমেদ আবু জাফর বলেন, রাষ্ট্রীয় চোর,দখলবাজ, ঘুষখোরদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা কলম ধরলেই জেল জুলুম- হুলিয়া ভোগ করতে হয়। সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের পাহাড়াদার হিসেবে আইন শৃঙ্খলা বাহীনিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে চোর দেখিয়ে দিচ্ছেন। ফলে সেই সাংবাদিকরাই যদি উল্টো রাষ্ট্রের কাছে আসামী হন; তবে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন স্বপ্নের মাঝে লুকিয়ে থাকবে। তাই এখনও সময় আছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দ্বারা আর কোনো সাংবাদিক যেন হয়রাণীর শিকার না হন।
এরুপ একটি ঘটনায় শুক্রবার সিলেটের শাহজালাল উপশহরে দীর্ঘদিন ধরে চলা চাদাঁবাজি, প্রবাসীদের জমি ও বাসা দখল, মাদকব্যবসার গডফাদার স্থানীয় ক্ষমতাশীন দলের কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিকসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এ মামলায় সিলেট থেকে প্রকাশিত দৈনিক একাত্তরের কথার সম্পাদক চৌধুরী মুমতাজ আহমদসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে সিলেটে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামী সাংবাদিকদের বাড়ি বাড়ি তল্লাসি চালাচ্ছেন।
এদিকে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সংশ্লিষ্ট সংবাদের কোন প্রতিবাদ কিংবা বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে মামলা করারও পথ ছিল। কিন্তু তা না করে পত্রিকাটিকে একেবারে বন্ধ করে দেবার প্রয়াসে সম্পাদক,মালিক,সাংবাদিক সকলের বিরুদ্ধে অ-জামিনযোগ্য ধারায় থানায় মামলা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নেতা ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নগর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ছালেহ আহমদ সেলিম।
একটি সংবাদ প্রকাশ ও শেয়ার করার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা দায়েরের ঘটনা নিঃসন্দেহে পেশাদার সাংবাদিকদের প্রতি নিপীড়নের সর্বশেষ একটি উদাহরন।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম এই মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। একই সাথে মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানায়। পাশাপাশি মামলার বাদী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাইয়েরও আহবান জানানো হয়। অন্যথায় বিএমএসএফ কঠোর কর্মসূচী দেয়ারও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।