আজ 12 ডিসেম্বর। 1971 সালের এই দিনে কোন সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়নি। 12 ডিসেম্বর দিবা গত রাতে ঢাকা সেনানিবাসে প্রাদেশিক সরকারের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর সভাপতিত্বে আলবদর আলশামস কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকেই বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। রাও ফরমান আলী রাজাকার-আলবদর নেতৃবৃন্দের হাতে তুলে দেন বুদ্ধিজীবীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামের তালিকা
এই রাতে আলবদর বাহিনী সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফা কে তাদের বাসভবন থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারা আর কখনো ফিরে আসেনি।
12 ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় নরসিংদী, নীলফামারী, গাইবান্ধা, সরিষাবাড়ী, ভেড়ামারা এবং শ্রীপুর।
টাঙ্গাইল এলাকায় মিত্র বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল নাগরার বাহিনীর সাথে যোগ দেয় কাদেরিয়া বাহিনী। এই এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে ব্যাপক সম্মুখ যুদ্ধ করে পাক বাহিনীকে পরাজিত করে দ্রুত অগ্রসর হতে থাকে থাকার দিকে। এই বাহিনীই পরবর্তীতে গাবতলী দিয়ে সবার আগে ঢাকায় প্রবেশ করে।
অপরদিকে বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহরের আসন্ন তৎপরতা সর্ব উপায়ে বিঘ্নিত করার জন্য চালনা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সমুদ্র এলাকায় কঠোর নজরদারি শুরু করে যৌথবাহিনীর নৌবাহিনী।
পাকবাহিনী যুদ্ধে তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে লিপ্ত হয় ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে। দেশ স্বাধীন হলেও যেন মেধাশূন্য হয়ে পড়ে সে লক্ষ্যে প্রণয়ন করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনা। তাদের এই কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদর এবং আল শামস বাহিনীর সদস্যরা। তাদের এই ঘৃণ্য চক্রান্তেই বাছাই করে দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সাম্প্রতিক আহ্বানের জবাবে এবং পরোক্ষভাবে মার্কিন চরমপত্র প্রত্যাখ্যান করে জাতিসংঘ মহাসচিব উথান্ট কে বার্তা প্রদান করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।তিনি জানান ভারত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং ভারতীয় সৈন্য স্বদেশে ফিরে আনার জন্য প্রস্তুত আছে তবে যদি পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ মীমাংসা করতে সম্মত হয়।
Md, Anwar Hossain
Deputy Inspector General
Chattrogram Range Police,Bangladesh