সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম জীবনকে রাতভর বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মোমবাতি জ্বালিয়ে তার পায়ুপথে ছ্যাকা দিয়ে ১০ পিস ইয়াবাসহ আদালতে পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।সিরাজুল ইসলাম জীবনের বোন পারভীন আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের দরজায় গিয়ে ধাক্কা দেয় পুলিশ। এ সময় ভেতরে থাকা জীবনের ছোটভাই আজিজুল ইসলাম দোকানের সাঁটার খুলে দেন। পুলিশ ভেতরে ঢুকেই তাদের হাতে থাকা একটি প্যাকেট দেখিয়ে মাদকসেবী হিসেবে তাকে আটক করে। খবর পেয়ে পাশের বাসা থেকে জীবনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা ছুটে এসে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে তাদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদেরকে লাঠিপেটা করে পুলিশ। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে আসে। এরপর রাতভর চোখ বেঁধে এসআই রকিবুলের নেতৃত্বে তার দুই ভাইকে বেধড়ক মারপিট করা হয় বলে অভিযোগ করেন পারভীন।আদালত প্রাঙ্গণে জীবন জানান, তাদের চোখ বেঁধে একনাগাড়ে মারধর করা হয়েছে। এক পর্যায়ে পায়খানার রাস্তায় মোমবাতি দিয়ে ছ্যাকা দেয়। এক পর্যায়ে পায়ুপথে মোমবাতির জ্বলন্ত গলিত পদার্থ ঢুকিয়ে দেয়া হয়। পরে তাকে সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। সেখানে তার আঘাতের কারণ লেখা হয় গণপিটুনি।নির্যাতনের শিকার সিরাজুল ইসলাম জীবন আদালত প্রাঙ্গণে বলেন, সদর থানার পুলিশ কোনো কারণ ছাড়া তাকে ও তার ভাইকে আটক করে থানায় নিয়ে রাতভর নির্যাতন করে।এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সামনে বিক্ষোভ করেছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। তবে আটকের কথা স্বীকার করলেও পুলিশের পক্ষ থেকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।চ্যানেল এস এর হবিগঞ্জ জেলা সহকারি প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম জীবনকে মিথ্যা অভিযোগে আটক নিয়েছে পুলিশ। থানায় আটকে রেখে তাকে নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সাংবাদিকরা। শুক্রবার বেলা ২টায় প্রেসক্লাবে জরুরী বৈঠক ডাকা হয়। ক্লাবের সিনিয়র সদস্য গোলাম মোস্তফা রফিকের সভাতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক রাসেল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি রুহুল হাসান শরীফ, মো. ফজলুর রহমান, হারুনুর রশীদ চৌধুরী, মোহাম্মদ নাহিজ ও শোয়েব চৌধুরী প্রমূখ।বক্তারা ইফতারের পূর্বে জীবনকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জানিয়ে বলেন, একটি ভুয়া, সাজানো অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। তাকে যদি বেঁধে দেয়া সময়ের আগে মুক্তি না দেয়া হয় তবে শনিবার কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। এদিকে সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম জীবনকে আটকের প্রতিবাদে বিকেল ৪টায় শহরের প্রধান সড়কে থানার সামনের রাস্তা অবরোধ করে রাখেন সাংবাদিকরা। এ সময় তারা ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।