রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ঘোষিত অনুদানের প্রথম কিস্তির ৫ কোটি ডলার শিগগিরই ছাড় করতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক। অবশিষ্ট অর্থ আগামী ২ বছরে পাওয়া যাবে। রোহিঙ্গাদের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটেও ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এর আগে সকাল ৯টায় অর্থমন্ত্রীর দপ্তরে তার সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বৈঠক করেন ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। বৈঠকের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে ৪৮ কোটি ডলার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। এর পুরোটাই হচ্ছে অনুদান। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নিরাপদ পানি সরবরাহ ও সামাজিক সুরক্ষায় এ অর্থ ব্যয় করা হবে। তবে আমার মনে হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে বিশ্বব্যাংক পৃথক আরেকটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে পারে।
‘সোমবার বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘ মহাসচিব উভয়েই রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে কক্সবাজার যাবেন’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ দুই সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞ। গুতেরেস ও কিমের সফরের মধ্য দিয়ে বিশ্বকে বোঝানো গেছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যা কতটা প্রকট। তাদের এই সফরের কারণে মিয়ানমার-এর ওপরেও চাপ সৃষ্টি হবে।’
‘গুতেরেস ও কিমের এই সফরের মধ্য দিয়ে কি বাংলাদেশ আশা করতে পারে যে, রোহিঙ্গারা শিগগিরই মিয়ানমারে ফেরত যাবে সাংবাদিককের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতি টোটালি রাবিশ। তাদের কথার ওপর বিশ্বাস রাখা যায় না। ওরা বিশ্বকে দেখাতে সামান্য কিছু লোক নিয়ে যেতে পারে। তাতে মূল সমস্যার সমাধান হবে না। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হলে মিয়ানমারকে পুরো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য রাখাইনে একটি ‘সেফ জোন’ করা যেতে পারে। যদি জাতিসংঘ টেককেয়ার করে তাহলে সম্ভব।
‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর বিশ্বব্যাংক কোন চাপ সৃষ্টি করবে কি না’ এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ওইভাবে চাপ সৃষ্টি করা বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ত্রাণ সহায়তা ছাড়া মিয়ানমারের অন্য সব প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ রেখেছে বিশ্বব্যাংক।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
‘কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের ভাষাণচরে স্থানান্তর করা হতে পারে’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপাতত ১ লাখ স্থানান্তর করা হবে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। ভাষাণচরকে বসবাসের উপযোগী করতে বাংলাদেশের নৌ-বাহিনী কাজ করছে।’