সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে উঠেছে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গ্রামঞ্চল। হাট-বাজারে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা এখন তুঙ্গে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ নভেম্বর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে বিএনপি সরে দাঁড়ালেও স্বস্তিতে নেই আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীরা। তাদের ঘরের আগুনে পুড়তে হচ্ছে। কারণ ভোটের মাঠে এবারও তাদের নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়ন নির্বাচনে নতুন মাত্রা যুক্ত হওয়ায় ভোটারদের মাঝে চলছে ভিন্ন আলোচনা। এই ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার মাঠ অনেকটাই স্বাভাবিক থাকলেও বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে নামতেই অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ। ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাই নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের মাঠে পারিবারিক লড়াই অনেকটাই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান ভোটাররা।
জানা যায়, আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক বিল্লাল আহমদ। তার চাচাতো ভাই আওয়ালীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী অ্যাভোকেট মনির উদ্দিন মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এক ঘরে দুই প্রার্থী এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) আনারস প্রতীক নিয়ে সামছুল ইসলাম খাঁন। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মোট তিনজন প্রার্থী নিবাচনী মাঠে ভোট যুদ্ধে লড়াই করছেন। একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ তোলে প্রচার প্রচারনায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন।
তবে ভোটাররা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে লড়াই হবে বর্তমান চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সামছুল ইসলাম খাঁনের মধ্যে। চেয়ারম্যান পদে এক ঘরে দুই প্রার্থী থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সামছুল ইসলাম খাঁন। ভোটাররা জানান, নৌকার ঘরে দুই জন প্রার্থী হওয়ার কারনে এই ইউনিয়নে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বিল্লাল আহমদ এর দাবি তিনি ইউনিয়নের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে দুইবার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সততার সাথে পালন করেছেন। এবারও তাকে জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। কিন্ত ভোটাররা দাবি করেছেন বিল্লাল আহমদের চাচাতো ভাই অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার কারনে নৌকার প্রতীকের ভরাডুবির আশংকা রয়েছে। ভোটাররা কারন হিসাবে বলছেন, বিল্লাল আহমদের ভোটের ঘাটিতে হানা দিচ্ছেন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিন।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিনের বলেন, মানুষ যেনো স্বাভাবিকভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারেন সেজন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের প্রবেশ ঠেকানোর দাবিও জানান তিনি। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সামছুল ইসলাম খাঁন বলেন, ভোট গ্রহন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। বহিরাগত কোনো সন্ত্রাসী যেন এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি রাখার দাবি জানা তিনি। মানুষজন নির্বিঘেœ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলেই আমর বিজয় সু নিশ্চিত হবে ইনশাআল্লাহ তিনি বলেন। খুরমা উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফজর আলী এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামছুর রহমানের মুঠোফোনে পৃথক ভাবে যোগযোগ করা হলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ছাতক উপজেলা ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে উত্তর খুরমা ইউনিয়নেই চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীর সংখ্যা তিন জন । এ ইউনিয়নে ওয়ার্ড সংখ্যা ৯টি, ভোটকের্ন্দের সংখ্যা ১৯টি, ভোট কক্ষ সংখ্যা ৩৮টি, পুরুষ ৬হাজার, ৬শত ৯২টি ও মহিলা ৬হাজার ৩শত ৪৭টি, মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৯টি ভোটার ভোট দেবেন।