গাজী এনামুল হক (লিটন) স্টাফ রিপোর্টারঃ
পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলার দুর্গাকাঠি গ্রামের অভাবে পড়ে দরিদ্র এক দম্পত্তি তাদের ১৮ দিনের শিশু কন্যাকে বিক্রি করে মাত্র ১০ হাজার টাকা পেয়েছেন। সন্তান বিক্রির বাকী দেড় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগ নামধারী বিজন হালদার ও তার সহযোগী রনজিত মন্ডল নামের দুই প্রতারক।
বিষয়টি গণমাধ্যম র্কমীদের জানিয়াছেন ভুক্তভোগী পরিবার। অভাবের তাড়নায় বিক্রি হওয়া ওই সন্তানের বাবা পরিমল বেপারী অভিযোগ করে বলেন, তাদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে বিজন হালদার ও রনজিত মন্ডল শিশু কন্যাকে একলাখ ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করার প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হন।
পরে ঢাকায় বসবাস করা জনৈক ব্যক্তির কাছে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সন্তান হস্তান্তরের পরে পরিমল বেপারীকে মাত্র ১০ হাজার টাকা দেয় বিজন হালদার। তবে কোথায় অথবা কার কাছে শিশুটি বিক্রি করা হয়েছে তার নাম ঠিকানাও বলতে পারেনি পরিমল বেপারী ও তার স্ত্রী কাজল রানি। ক্রেতা ব্যক্তি শুধু ঢাকায় থাকেন এবং গাড়িতে এসে নিয়ে গেছেন বলে তারা জানান।
বিক্রি হওয়া শিশুর মা কাজল রানি অভিযোগ করে বলেন, সন্তান জন্ম দেওয়ার পরে তিনি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন। সন্তানের মুখও দেখতে পারেননি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ওই সময় শিশুর খাবার ও ঔষধ কিনতে পারছিলেন না তার স্বামী। এ সুযোগে প্রতিবেশী ছাত্রলীগ নেতা বিজন ও তার ঘনিষ্ট রনজিত মিলে কাজলের স্বামী পরিমলকে অনেক টাকার লোভ দেখিয়ে কন্যা সন্তানকে বিক্রির নামে প্রতারণা করেন।
এ বিষয় কথা বলতে চাইলে বিজন হালদার ও রনজিত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে উপজেলা পর্যায়ের ২-৩ জন ছাত্রলীগ নেতাকে দিয়ে সাংবাদিক থামানোর তৎপরতা চালাতে থাকে।
দুর্গাকাঠি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জহর লাল বলেন, হাবাগোবা চরিত্রের পরিমল অন্যের বাড়িতে পরিত্যাক্ত একটি ঘরে বসবাস করেন। পরিমলের অভাবের সুযোগ নিয়ে বিজনরা প্রতারণা করেছে।
ইউপি সদস্য অসীম কুমার বলেন, পরিমলের সন্তান বিক্রির ঘটনাটি দু:খজনক।
সমদেয়কাঠি ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বিজন ও রনজিত শুধু প্রতারকই নয় তারা মাদক কারবারিসহ নানা অপকর্মে জড়িত।
এ বিষয়টি নেছারাবাদের (স্বরূপকাঠি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।