কিছু বিষয়ে আমি হয়তো ‘বিশ্ব রেকর্ড’ই করে ফেলেছিলাম। আবেদন করলে গিনেস বুকে নামও উঠে যেতে পারতো। যাই হোক…শেষ পর্যন্ত অবশ্য কিছুই করা হয়নি। তবে যে অভিজ্ঞতাগুলো ঝুলিতে পুরেছি, সেটাই বা কম কী?
ঘটনাগুলো বেশ পুরোনো। কাছের কিছু মানুষ ছাড়া কেউ জানেও না। এখন জানানোর কারণ কিন্তু প্রচারণা নয়, ছেলে-মেয়ের জন্য কিছু গল্প রেখে যাওয়া।
আগেই বলেছি, ১ মে ২০২০ থেকে ৭১ দিন ‘অফিস কোয়ারেন্টিনে’ ছিল দীপ্ত টিভি। স্বল্প জনবল নিয়ে অফিস করার প্রভাব পড়েছিল নিউজ প্রেজেন্টেশনেও। এমনিতে প্রতিদিন আমাদের ৬টা বুলেটিন পড়ে ৩/৪ জন প্রেজেন্টার। কিন্তু সেই দুঃসময়ে ৩/৪ জন প্রেজেন্টারকে অফিসে রাখা সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে মেয়েদের। সিদ্ধান্ত হলো ১৪ দিনের দলে একজন পুরুষ প্রেজেন্টার থাকবে। আর দ্বিতীয় জন ‘আমি’। দিনে ৩টা নিউজ আমি পড়বো, তিনটা অন্যজন। ১৪ দিন পর দলের সঙ্গে সেও বাসায় চলে যাবে। পরবর্তী দলের সঙ্গে অফিসে ঢুকবে আরেকজন পুরুষ প্রেজেন্টার। আর আমি বান্দা তো অফিসে আছিই…।
সে সময় নিউজ পড়াটা ছিল আমার দ্বিতীয় দায়িত্ব। তৃতীয়, চতুর্থ ভূমিকাতেও অবশ্য অবতীর্ণ হতে হয়েছিল তখন। সেগুলোও বলবো। আজ শুধু প্রেজেন্টেশনেই থাকি। ৭১ দিনের অফিস যাপনে নিউজ পড়েছিলাম কমপক্ষে ২২৫টা। ক্যালকুলেটরে ৭১ × ৩ চাপলে অবশ্য হিসাব মিলবে না। চাপ নেবেন না, আমি মিলিয়ে দিচ্ছি। মাঝে একটা সময় আমাদের এক প্রেজেন্টার জরুরি কাজে বাসায় চলে যায়। আর নতুন আরেকজনকে অফিসে ঢোকাতে লেগে যায় ৩ দিন। ওই সময় টানা ১৮টা নিউজ আমি একা পড়েছিলাম।
৭১ দিন পর অফিস খুলে দিলো। ৭২তম দিন সকালে সবার জন্য উন্মুক্ত দীপ্ত টিভি। সবাই অফিসে চলে এলো। আর যারা সব শেষ দল হিসেবে অফিসে ছিল, তারা সাত সকালেই ব্যাগ গুছিয়ে বাসায় ফোরার জন্য রেডি। সকাল ৯টার মধ্যেই অফিস লিভ করলো ঐতিহাসিক অফিস কোয়ারেন্টিনের সবশেষ দল। কিন্তু আমি তখনও অফিসে। সেদিন বিকাল পর্যন্ত ৩টা নিউজ পড়ে তারপর বাসায় ফিরেছিলাম…।
কী, এবার মিললো অংকটা? মেলার কথা…
তথ্যসূত্রঃ সিনিয়র সাংবাদিক নাহিদ আশরাফ রাজীব এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে