আমার সার্কিট হাউসের বাসা থেকে একসময় সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ দেখতাম। মনে হতো কখনো নিয়োগ পরীক্ষার ডিউটি হলে কলেজে যাব আর সেখান থেকে আমার বাসা দেখার সুযোগ পাব। ৪৮ সার্কিট হাউস রোডের আই নং বাসায় ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত ছিলাম। আজ এক নিয়োগ পরীক্ষার দায়িত্বে আসলাম। কলেজের বারান্দা থেকে আমার বাসা দেখলাম। যদিও এ বাসায় আর থাকি না। তবে এখানকার গাছ-গাছালিতে, প্রকৃতিতে আমার স্মৃতি মিশে আছে। আমার লাগানো নিম গাছ- যা আমার মিস্টি নিম গাছ এখনো আছে। অফিসার্স ক্লাব ঢাকার সম্পৃক্ততা এখানে
থাকতেই। বার বার পরাজিত হতাম, হাল ছাড়ে নি। একবার
অন্তত জয়ের মুখ দেখতে চেয়েছিলাম। ব্যাচমেটদের একাংশের মারাত্মক বিরোধিতা আমাকে কেন জানি আরো
এনকারেজ করতো। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে নির্বাহী সদস্য পদে গ্রেট ভিক্টোরি পেয়েছিলাম। এরপর সহধর্মিণী
নূপুর বলেছিল- নির্বাচনে জয়লাভ করেছ, এখন তো আর এ বাসা ছাড়তে আপত্তি নেই। থাকতাম ৬ তলায়, নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলাম ৬তম হয়ে। বাধ্য হয়ে এ অনাবিল পরিবেশ ছেড়ে যাওয়া। মাঝে মাঝে মনে হয় – নিজের ফ্ল্যাট কেন হলো, ফ্ল্যাট না হলেই তো বেইলী রোডের সরকারি বাসায়
থাকতে পারতাম। এখানেই নূপুরের সাথে সংসার, নিহাল-ইরিমার বেড়ে ওঠা। আমার মায়ের আগমন। বড় ভাই আকবর হোসেনের নিম গাছের তলায় শেষ সময়, অন্তিম যাত্রা। যা হোক, বাসার সামনের কলেজ হলেও আজ প্রথম আসতে পারলাম। গার্লস কলেজ- চাইলেই কিন্তু আসা যায় না – অন্তত একটা দায়িত্ব নিয়ে আসতে হয়। কলেজের পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ভালো লেগেছে ! দূর থেকে আমার বাসা
দেখেও আরো ভালো লেগেছে। স্মৃতি যে আনন্দ-বেদনার!
লেখকঃ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব,অফিসার্স ক্লাব ঢাকা এর নির্বাহী সদস্য আলমগীর হোসেন।