আমার পরিচয় কি?
আমি নারী!
আমি যখন ছোট্ট শিশু সবার চোখে রং কালো নাকি দুধে-আলতা দেহ খানি মিষ্টি হাসির হাসিমুখ!
হাঁটি হাঁটি পা পা করে হাঁটতাম বাবা বলতো আয়রে আমার চাঁদের আলো,
করবি না বংশের মুখ কালো
তুই আমার দুই বংশের আলো।
বাবার মতন চলতে শিখেছি সকল মানুষের ভীড়ে,
বাবার কথায় সংসার বেঁধেছি থেকেছি দু’জন দুজনার হয়ে।
আমার পরিচয় আমি বাবার মেয়ে
কিন্তু অন্য ঘরের জন্যে।
মেয়ে বলে স্বপ্ন দেখতে নেই
বাবার স্বপ্নই সব স্বপ্ন
, মেয়ের কথা শুনবেনা কেউ।
সংসার জীবনে,
আমার পরিচয় কি?
বৌ কালো নাকি দুধে-আলতা দেহ খানি মিষ্টি হাসির হাসিমুখ!
কাজ করলে ভালো নইলে রক্ষা নেই তবে,
ছোট্ট মেয়ে আজ অনেক বড় হয়েছে পরের ঘরে।
রাগ হলে স্বামী বলে বাবার বাড়িতে যাও চলে,
দেখ এটা তো তোমার নয় আমার বাবার বাড়ি ,
তোমার কোন কিছুর দাম নেই করবেনা বারাবাড়ি।
তবুও চলতে হয় পরিচয়হীন পরিচয়ে এক রত্তি শান্তি খুঁজে,
কেউ কি আমার কষ্ট বোঝে?
শুধু শুধু নারী বলে।
বৌয়ের কথা শুনে যে কাপুরষ হয় সে।
নারীর পুরুষ্কার সব সময় তিরোষ্কার
এটাই আমার আসল পরিচয়।
বিধবা জীবন,
আমার পরিচয় কি?
মা তুমি একটু বেশিই বুঝো!
তোমার কথা শুনবো নাকো,
আজ আমি হয়েছি বড়, করেছি বিয়ে,
বহুকাল সংসার করেছো এখন দরকার নেই।
যার সংসার তাকে বুঝিয়ে দাও,
খাও দাও আর খোদার কাছে আকুতি কর
মোদের জন্য দোয়া কর সব সময়।
দেহের কত-শত কান্ড আজব অভিনয়
আর ভাল্লাগে না,
কিছুই চাই না শুধু চাই ভালোবাসা আর সম্মান,
কে করবে আমাকে দান,
নারী বলে সবাই করে হেলা,
নারীর কারণ সংসার জীবন,
নারীর সঙ্গে নাড়ির বাঁধন
নারীর কারণ আপাত সমাপ্তি,
নারীর কারণ বিশ্বজয়ী।
তবে নারীর কেন এতো অসম্মান?
নারীর পরিচয় ধুঁকে ধুঁকে টিকিতে রাখতে
জরাজীর্ণ দেহ খান।
এটাই নাকি নারীর আসল পরিচয়।
নেই কোন দুঃখের অবসান।
লেখিকাঃ শাহনাজ পারভীন।