রাসেলঃ
পাওনা টাকার জেরে ছোট ভাইকে খুন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সোহদর বড় ভাই। রাতের আধাঁরে লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এ্যালোপাথারী কুপিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছেন বড় ভাই নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় ভিকটিম তোফাজ্জল হোসেরের স্ত্রী নার্গিস আক্তার বাদি হয়ে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা করলেও প্রধান অভিযুক্ত নজরুলসহ কাউকেই আটক করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে অন্য অভিযুক্তরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবারও প্রকাশ্যে হত্যার হুমকী দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তভুগী পরিবার।
জানা যায়, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই কান্দাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন বড় ভাই সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামকে কয়েক বছর আগে প্রায় নগদ ১৫ লক্ষ টাকা ধার হিসেবে দিয়ে ছিলেন। সেই পাওনা টাকা উদ্ধার করতে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার দরবার সালিশ করেছেন। কিন্তু টাকা দেয় দিচ্ছি বলে দীর্ঘদিন যাবৎ ঘুরাচ্ছে নজরুল মেম্বার। গত ৩ মে সেই টাকা চাইতে গেলে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে নজরুল ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। এতেও ক্ষান্ত হয়নি নজরুল। পরে রাতের আধারে রাধাকানাই বাজারে গিয়ে ছোট ভাই তোফাজ্জলের কাপরের দোকানে অতর্কিত তান্ডব চালিয়ে এ্যালোপাথারী কুপিয়ে হাত-পা ভেঙে হত্যার উদ্দেশ্যে সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত জায়গায়।
পরে তোফাজ্জলের স্ত্রী খবর পেয়ে পুলিশকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নজরুলকে ফোন দেন। তখন বিষয়টি নজরুল অস্বীকার করে বলেন, তোফাজ্জল সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়েছে। তাকে ত্রিশাল হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। ত্রিশালে গিয়ে স্ত্রী নার্গিস খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে অজ্ঞাত পরিচয়ে কয়কজন লোক তোফাজ্জলকে ভর্তি করে চিকিৎসাপত্রের কাগজ নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি অভিযোগ করে বলেন, আমার পরিবার নির্যাতিত। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দিছে সাবেক মেম্বার নজরুল ইসলাম। হাসপাতালে এখনো ব্যাথার যন্ত্রণায় ছটফট করছে স্বামী। প্রধান আসামি পলতাক থাকলেও অন্য আসামিরা জামিনে এসে মামলা তুলতে বার বার হত্যার হুমকী দিচ্ছে। এরআগে আমাকে মেরে আমার হাত ভেঙে দিছে। আমার মেয়ে ও ছেলেকেও বেধরক পিটিয়েছে তারা। হত্যার ভয়ে বাড়ি ঘরে যেতে পারছিনা। এলাকায় টাকার জন্য একাধিকবার দরবার সালিশ হয়েছে। কিন্তু টাকা দিবে দুরের কথা উল্টো হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আমার স্বামীকে এ্যালোপাথারী কুপিয়ে খুন করতে চেয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার কঠিন শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া থানার উপ-পরিদর্শক স্বপন মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে টাকা-পয়সা ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিক ভাবে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া চলে আসছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার দরবার সালিশ হয়েছে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। সেই ঘটনার জেরধরে বড় ভাই নজরুল মেম্বার ও তার লোকজন ছোট ভাই তোফাজ্জলকে এ্যালোপাথারী কুপিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। এখন সে মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া অন্য আসামিরা জামিনে রয়েছে। অপরাধী যেই হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানিয়েছে পুলিশের এই কর্মকর্তা।