চালু হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার ঢাকা ওয়াসার ‘দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই ২০২৩) প্লান্টটি উদ্বোধন করবেন। প্লান্টটি চালু হলে সুফল পাবে অর্ধ কোটি নগরবাসী। দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে রাজধানীর আশপাশের নদীগুলো।
রাজধানী ঢাকা বিশ্বের অন্যতম একটি জনবহুল শহর । এক সময় নগরের সব পয়ঃবর্জ্য ড্রেন, নালা, খাল, ঝিল গড়িয়ে চলে যেত ঢাকার চারপাশের নদীতে। ফলে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে নদীর পানিদূষণ। এর সমাধান হিসেবে ঢাকা ওয়াসা দাশেরকান্দিতে পয়ঃশোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।
রাজধানীর আফতাবনগর সংলগ্ন খিলগাঁও থানাধীন দাশেরকান্দিতে প্রায় ২৪ হেক্টর জমির ওপর গড়ে ওঠেছে এই শোধনাগার প্রকল্প। এর মাধ্যমে রাজধানীর বেশ কিছু এলাকার পয়োবর্জ্য পরিশোধন করে বালু নদে নিষ্কাশন করা হবে। এলাকাগুলোর মধ্যে গুলশান, বনানী, ডিওএইচএস, আফতাবনগর, বাড্ডা, মগবাজার, নিকেতন, কলাবাগান, ধানমন্ডি (একাংশ) ও হাতিরঝিল অন্যতম।
দাশেরকান্দি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টটি বাংলাদেশের প্রথম এবং বৃহত্তম আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। এটি দক্ষিণ এশিয়ারও একক বৃহত্তম পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার।
প্ল্যান্টটি চালু হলে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পয়োবর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হবে, যা রাজধানীর মোট পয়ঃশোধনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। সেবা দেওয়া সম্ভব হবে ৫০ লাখ নগরবাসীকে। এই প্লান্টে প্রতিদিন প্রায় ৫৮০ টন প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাসহ একটি স্লাজ শুকানোর বার্নিং সিস্টেম রয়েছে।
রাজধানীর পয়োবর্জ্য পরিস্থিতি বদলাতে ২০১৩ সালে ঢাকা মহানগরের পয়োনিষ্কাশন মহাপরিকল্পনা তৈরি করে ওয়াসা। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে দাশেরকান্দি শোধনাগারের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
প্রকল্পটি অনুমোদন পায় ২০১৫ সালে। কাজ শুরু হয় ওই বছরের জুলাইয়ে। প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা। অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার, চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক ও ঢাকা ওয়াসা। কাজ করেছে হাইড্রো চায়না করপোরেশন।