মোঃ কামরুজ্জামান কুষ্টিয়া :
খাজানগরে ডিস লাইন ও ওয়াইফাই লাইনের ক্যাবল (তার) কাটা কে কেন্দ্র করে হামলায় দুই যুবক আহত হয়েছে। আহতের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে খাজানগর এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য দুজনকে আটক করেছে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।
আহত রাকিবুল ইসলাম রবিন জানা যায়, ঘটনার রাতে পথচারী এক ডিস ব্যবসায়ীর ডিসলাইনের তার ছিঁড়তে নিষেধ করাই ক্ষিপ্ত হয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন তারা দুই ভাই। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নে ১৬ই জুলাই রোববার রাত দেরটার দিকে খাজানগর এলাকায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রাকিবুল ইসলাম রবিন কুষ্টিয়া মডেল থানায় চিহ্নিত ছয় জন সহ অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন মতিমিয়া রেলগেটের বাসিন্দা মতালেবের পুত্র রনি (৪০), উপজেলা রোডের বাসিন্দা দিনেজ কবিরাজের পুত্র মোকবুল কবিরাজ (৭০),কবুরহাট দোস্তপাড়ার বাসিন্দা আবুস উদ্দিনের পুত্র সুজন (৩০), রাফি,সোহান ও আরমান।
অভিযোগের সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ও তার চাচতো ভাই আসিফ এলাকার এক পিকনিক শেষ করে রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। এমন সময় দেখতে পান অভিযুক্তরা রাত দেরটার দিকে খাজানগর এলাকায় এক ডিস ব্যবসায়ীর ডিসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে তার কাটছেন। তখন ভুক্তভোগী অভিযুক্তদের তার কাটতে নিষেধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে অসিফকে লোহার রড দিয়ে এলোপাথারি ভাবে মারতে থাকে ভুক্তভোগী ঠেকাতে গেলে তাকেও মেরে জখম করে। এমনকি ১ নং বিবাদী পিস্তল বের করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে মারধরের শিকার হয়ে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে কবুরহাট দোস্তপাড়া খাজানগর এলাকায় ডিস ও ওয়াইফাই লাইনের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন মকবুল হোসেন। তবে এই ব্যবসায়ীর আদায়কারীদের দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ অনেক গ্রাহক। তাদের সাথে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হয় গ্রাহকদের। যে কারনে ওই এলাকার কয়েকজন বেকার যুবক নতুন ওয়াইফাই সংযোগ দিতে নতুন গ্রাহক তৈরী করতে থাকে। এতে তাদের বাধা হয়ে দাড়ান মকবুল। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যেও একাধিকবার বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটেছে। এর পর থেকে রাতের আধারে প্রায়ই দুপক্ষের সংযোগ তার কেটে দেন কে বা কাহারা। এ নিয়ে দু-পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে আবারও মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
সাজিদ ট্রেডিং এর কুষ্টিয়া খাজানগর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার রবিউল ইসলাম বলেন,আমাদের ইন্টারনেট ব্যাবসা শুরু থেকেই মকবুল নামের এক স্থানীয় ডিস ব্যবসায়ী আমাদের তার কাটা,কর্মচারীদের মারধর সহ বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন,
এই ব্যবসা করতে গেলে আমাদেরকে প্রাণ দিতে হবে। আমরা আমাদের জীবন নিয়ে চরম ঝুঁকির মধ্যে আছি। আমরা সুষ্ঠ সমাধানের জন্য জেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যপারে ডিস ব্যবসায়ী মোকবুল হোসেন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বটতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু ফকির এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি শান্তি পূর্নভাবে ইউনিয়ন পরিচালনা করতে চাই। আমার ইউনিয়নে ইন্টানেটের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে একটি উত্তেজনামুলক পরিবেশ বিরাজ করছে। একজন আরেক জনের বিরুদ্ধে ইন্টারনেটের কেবল কাটার অভিযোগ দিচ্ছে। এবিষয়ে আমি দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা কটেছি। কিন্তু এক পক্ষ আসে আরেক পক্ষ আসেনা। বটতৈল ইউনিয়নে সবার জন্য শান্তিপূর্ণ ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করতে বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনের সহায়তায় আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান,আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইনের আওতায় নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।