মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, ঝিনাইদহ।।
খাঁচাবন্দী একটি ময়নাপাখি আর বনের উন্মুক্ত পরিবেশে গাছের ডালে বসা ময়নাপাখি। দুটো দৃশ্যকে পাশাপাশি রেখে নিজেই একবার লক্ষ্য করে দেখুন তো কোন দৃশ্যটি আপনার মনে আনন্দ ছড়ায়?
খাচাবন্দী দৃশ্যটি হলে এ ব্যাপারে তেমন কোনো মন্তব্য নয়। কেননা, আপনি আজও পরিবেশবন্ধব প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ হয়ে উঠেননি।
আর যদি ডালে বসা ময়নাপাখি হয়ে থাকে তাহলে কোনো কথাই নেই। আপনি প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য ভালো লাগা সত্যিকারের একজন মানুষ। আপনার দ্বারা পরিবেশ-প্রতিবেশের হয়তো কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না। আপনি একটু উদ্যোগী হলেই পরিবেশের জন্য অনেক ভালো কিছু করে ফেলার ক্ষমতা রাখেন নিঃসন্দেহে।
খাচায় পোষা পাখির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ‘পাহাড়ি ময়না’ (Hill Myna)। কেউ কেউ পাহাড়ি ময়নাকে খাচাবন্দী করে পুষে থাকেন। যা দেশের প্রচলিত আইনের চোখে অপরাধ। এর জন্য যে কোনো সময় আপনার জরিমানা ও জেল হতে পারে। আমাদের দেশের বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইনে অপরাধ।
আসলে বনের মুক্ত পরিবেশে হেঁটে হেঁটে যেতে যেতে হঠাৎ গাছের উপর একটি পাহাড়ি ময়নার দেখা যে ভালোলাগা তা প্রতিটি খাঁচাবন্দী ময়নাটিকে দেখার চেয়ে অনেকগুণ উৎকৃষ্ট এবং মহৎ চিন্তার মানবিক প্রতিফলন। আমাদের উচিত বিপন্ন এই প্রজাতিটিকে মুক্ত পরিবেশে ভালোবাসা এবং বাঁচতে সুযোগ করে দেয়া।
উন্মুক্ত পাহাড়ি ময়নার রয়েছে গভীর সৌন্দর্য। চকচকে কালচে-সবুজ দেহ এই ২৮ সেন্টিমিটারের পাখিটি। যাকে খাঁচায় বন্দী করলে কিছুতেই এই সৌন্দর্যকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ঘন সবুজ বনের ভেতর গাছের উঁচুতে হঠাৎ দেখা পাহাড়ি ময়নার দৃশ্য আমাদের মনে সীমাহীন ভালোলাগার জন্ম দেবে।
পাহাড়ি ময়না বিশেষ করে চা বাগানে সংলগ্ন শ্রমিক এবং পাহাড়ি অদিবাসীরা এগুলো পোষে এবং কালেক্ট করে ওয়াইল্ড কন্ডিশন থেকে। আমাদের বন থেকে পাহাড়ি ময়না বিলুপ্ত হয়ে যাবার অন্যতম কারণটি হলো বড় বড় পাহাড়ি গাছের খুঁড়ল থেকে ময়নার ছানার সাথে সাথে মা এবং বাবা ময়নাকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর ফলে তাদের প্রজননে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
আমাদের বর্তমান সমাজে পাহাড়ি ময়না পাখির দেখা মেলে না বললেই চলে।কোথাও কোথাও খাচা তে দেখা মেলে। আর এই ময়না পাখি গুলো খাচা থেকে খালি আকাশের নিচে সুন্দর দেখায়।