ছাতক সিমেন্ট কারখানার বিপুল পরিমান চুনাপাথর রাতের আঁধারে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে কারখানার সীমান্তোবর্তী ডাম্পিং সাইড থেকে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর চোরাই পথে বিক্রি করে বিক্রিত অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে কারখানার কয়েক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামালোচনার মুখে পড়েছেন ডাম্পিং সাইডের দায়িত্বে থাকা ইউসুফ মিয়া নামের কারখানার এক কর্মচারী। স্থানীয় সূত্রে জানাযায়,প্রায় দু’বছর আগে দেশের প্রাচীনতম শিল্প প্রতিষ্ঠান ছাতক সিমেন্ট কারখানা যান্ত্রিক সমস্যার কারনে উৎপাদন স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে। একই সাথে কারখানায় নতুন ড্রাই প্রসেস প্রকল্পের কাজও শুরু করা হয়। পুরাতন কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার সুযোগে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী লুটপাটে জড়িয়ে পড়েন। তারা পুরাতন কারখানার বিভিন্ন মালামাল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চোরাই পথে বিক্রি করা শুরু করেন। কারখানার মূল্যবান মালামাল চুরি করে বিক্রি করতে গিয়ে একাধিকবার ধরা পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে তখন আইনী কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। স্হানীয় সুত্রে জানাযায় উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্তে নোয়াকোট এলাকায় রয়েছে কারখানার একটি বিরাট ডাম্পিং সাইড। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কুমিরা অঞ্চলের কারখানার নিজস্ব খনি প্রকল্প থেকে কারখানার প্রধান কাচামাল চুনাপাথর এনে নোয়াকোট এলাকায় ডাম্পিং করা রাখা হতো। পরে সেখান থেকে ডাম্পিংকৃত চুনাপাথর রোপওয়ের মাধ্যমে কারখানার মুল প্লান্টে নিয়ে আসা হতো। প্রায় দু’বছর আগে উৎপাদন বন্ধ হওয়া ছাতক সিমেন্ট কারখানার কয়েক লক্ষ টন চুনাপাথর বিভিন্ন সময়ে সেনাকল্যাণ সংস্থার নামে বৈধ ও অবৈধভাবে বিক্রি করা হয়। এ নিয়ে ব্যবসায়ী ও কারখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এর পরও নোয়াকোট ডাম্পিং সাইডে ৬-৭ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর থেকে যায়। দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকা এসব চুনাপাথর মাটির আবরণে বেশির ভাগই ঢাকা পড়ে যায়। গত শুক্রবার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম করে ডাম্পিং সাইডে পড়ে থাকা সর্বশেষ চুনাপাথর রাতের আঁধারে নৌকা লোড করে বিক্রি করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করতে ডাম্পিং সাইডের দায়িত্বে থাকা কারখানার ইউসূফ মিয়াকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তাদের কোন চুনাপাথর নেই। মাটির নিচে পড়ে থাকা কিছ’ চুনাপাথর স্থানীয় মসজিদের নামে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি কারখানার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানা আছে। এসময় ইউসূফ মিয়ার কথাবার্তায় বেশ অসংগতি লক্ষ করা গেছে। এ ব্যাপারে কারখানার ড্রাই প্রসেস প্রকল্পের ডিপিডি আব্দুর রহমান বাদশা জানান, তিনি পুরাতন কারখানার কোন দায়িত্বে নেই। যে কারনে এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। কারখানার এমডি অমল কৃষ্ণ বিশ্বাস জানান, চুনাপাথর বিক্রির ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।