তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি এখন তালেবানরা কিম্বা ইসলামী স্টেট-আইএস যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করে ঠিক একই কায়দায় অনলাইন প্লাটফর্মে কর্মসূচি ঘোষণা শুরু করেছে। এবং কার্যত অবরোধের নামে মানুষ ও গাড়ি-ঘোড়ার ওপর হামলা পরিচালনা করা, জ্বালিয়ে দেওয়াই তাদের কর্মসূচি, অন্য কোনো কিছু নয়।’
রোববার ৫ নভেম্বর দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই যে কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারে। কিন্তু বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে না। এরা অবরোধের নামে মানুষ ও মানুষের সহায় সম্পত্তির ওপর হামলা পরিচালনা করা হচ্ছে, তাদের হাত থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না। ইসরাইলি বাহিনীর মতো বিএনপির হাত থেকেও এম্বুলেন্স, হাসপাতাল কোনটাই রেহাই পাচ্ছে না।’
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর হামলার উদাহরণ টেনে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা জানেন, ২৮ অক্টোবর কিভাবে হাসপাতালের ওপর হামলা পরিচালনা করে এম্বুলেন্সসহ বহু গাড়ি-ঘোড়া জ্বালিয়ে দেওয়া, ভাঙচুর করা হয়েছিলো এবং এরপরে আবারও বিভিন্ন জায়গা হামলা হয়েছে, রোগীবাহী এম্বুলেন্স ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষার্থীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। যেমন ইসরাইলি বাহিনী যেমন গাজায় স্কুলে, শিক্ষার্থীবাহী গাড়ির ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে, এখানেও বিএনপি-জামাত একই কায়দায় এই কাজগুলো করছে।’
‘গাজায় নির্মমতার বিরুদ্ধে সমস্ত পৃথিবীতে প্রতিবাদ হয়েছে অথচ আজ পর্যন্ত বিএনপি-জামাত সেটি নিয়ে একটি শব্দ বলেনি’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে বিভিন্ন শহরে, লন্ডনে লাখ মানুষের সমাবেশ হচ্ছে, ইউরোপের বিভিন্ন শহরে সেখানকার সরকারের আদেশ অমান্য করে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমাবেশ হচ্ছে অর্থাৎ বর্বরতার বিপক্ষে সমাবেশ হচ্ছে। আর এখানে বিএনপি-জামাত এই নিয়ে একটি শব্দও বলে নাই। বরং ইসরাইলি বাহিনীর অনুকরণে তারা এখানে মানুষের ওপর হামলা পরিচালনা করছে অর্থাৎ এরা আর রাজনৈতিক দল নাই। বিএনপি এখন একটি চূড়ান্ত সন্ত্রাসী দলে রূপান্তরিত হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই সন্ত্রাসীদের দমন করতে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর। তারা ভেবেছে একের পর এক অবরোধ ডেকে দেশকে অস্থিতিশীল করবে! তারা খুব সহসাই দেখতে পাবে যে জনগণই তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিপ্রকাশ ঘটিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং আমরা জনগণের সাথে থাকবো। তারা এখন দেশ-বিদেশ থেকে নানা ধরণের গুজব রটানোতেও সক্রিয় হয়েছে। যারা গুজব রটাচ্ছে তাদেরকেও শনাক্ত করার কাজ চলছে। কেউ কেউ ভেবেছে বিদেশ থেকে গুজব রটিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করবে, কিন্তু বিদেশে যেখান থেকে গুজব রটানো হচ্ছে আমরা সেই দেশের আইনে সেখানে ব্যবস্থা গ্রহণও জোরদার করেছি।’
মির্জা ফখরুলের মুক্তি দাবি করা ব্যক্তিবর্গ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে কেউ কারো মুক্তি চাইতেই পারে। আর যারা মুক্তি চেয়েছে তারা বিএনপি ঘরোনা রাজনীতিবিদ কিম্বা বিএনপির মিটিং-মিছিল, সভা সেমিনারে যায়। তবে যারা মুক্তি চেয়েছে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- পুলিশকে যে হত্যা করা হলো, হাসপাতালে, সাংবাদিকদের ওপর যে হামলা পরিচালনা করা হলো, পেটানো হলো, সেগুলোর ব্যাপারে তারা নিশ্চুপ কেন।’
গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি নেতাদের সাথে কোনো আলোচনা চলছে কি না সে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে সমস্ত নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা এই নৈরাজ্যের হুকুমদাতা, অর্থদাতা, নৈরাজ্যের হোতা হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের সাথে আলোচনার প্রশ্নই আসে না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেভাবে আইনগত ব্যবস্থা দেশে গ্রহণ করতে হয় আমরা সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। আর জনগণকে অনুরোধ জানাবো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জনগণ স্বাভাবিক যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। দেশে শিক্ষাসহ সমস্ত কিছু ব্যহত করার বিএনপির অপচেষ্টা সফল হবে না। খুব সহসা সমস্ত দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং পরিপূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।’