সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়। এখনো নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না হলেও সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে বইছে আগাম নির্বাচনী হাওয়া। ভোটারদের মন জয় করতে নানা প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এলাকার হাট-বাজার হতে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের চায়ের কাপে উঠেছে নির্বাচনী ঝড়। গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির এড. মুস্তফা লুফুল্লাহকে আসনটি ছাড় দিলেও এবার দলীয় প্রার্থী পেতে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছেন আ.লীগ নেতারা। পাশাপাশি বিএনপিতে নির্বাচন নিয়ে তেমন কোন তৎপরত্ ানেই। জাতীয় পার্টি এ আসনে এবার নাছোড়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন এবং নির্বাচিত হবেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য?
দুটি উপজেলার তিনটি থানা ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসন। এখানে তালা ও কলারোয়া উপজেলার ১২টি করে ইউনিয়ন নিয়ে মোট দু’টি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৩৩৬জন। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, জাতীয়পার্টি, জামায়াত, জাসদসহ বামদলগুলোর পাশাপাশি ইসলামি দলগুলোর প্রার্থীরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড লাগিয়ে দোয়া প্রার্থী হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন অনেক প্রার্থীই। সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে ও নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তুলে ধরে ভোটারদের দ্বারস্থ হচ্ছেন প্রার্থীরা।
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাঠে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন এ আসনের সাবেক এমপি সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদ স ম আলাউদ্দীন তনয়া জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি প্রয়াত সৈয়দ কামাল বখত সাকির একমাত্র পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি এড. মোহাম্মদ হোসেন, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার মুজিব, কেন্দ্রীয় যুুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল ইসলাম, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার এবং জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন। তার অবর্তমানে বিভিন্ন কর্মসূচীতে তার স্ত্রী এড. শাহীনা আক্তারকে সক্রিয়ভাবে দেখা যাচ্ছে। তবে হাবিবুল ইসলাম হাবিব কারাগারে থাকার কারণে এ আসনে বিএনপি’র তেমন হেবিওয়েট প্রার্থী নেই বললেই চলে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘ দিন মাঠে আছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত। তার পক্ষে দুটি উপজেলা প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন দলীয় নেতারা। জাতীয় পার্টি মহাজোটভুক্ত থাকলে এবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী হবার সম্ভাবনা রয়েছে তার। জাসদ থেকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে গত কয়েক মেয়াদে থেকে মনোনয়নের জন্য কাজ করছেন জেলা জাসদের সভাপতি শেখ ওবায়েদুস সুুলতান বাবলু। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে রাজনীতির মাঠে প্রকাশ্যে তৎপরতা না থাকলেও এবার কোরবানির ঈদে তালা-কলারোয়ার বিভিন্ন হাট বাজারে তার শুভেচ্ছা পোস্টার ছড়িয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে আছেন দলের মহাসচিব এড. ইয়ারুল ইসলাম, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের এ.এফ.এম আসাদুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপির) আব্দুর রশিদ।
ভোটের দিক থেকে এ আসনটি আওয়ামী লীগের পরে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের অবস্থান। এ আসনে ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও জামায়াত বাইরে বামঘরানা ও ইসলামি দলগুলোর তেমন অস্তিত্ব নেই বললেই চলে।
তথ্য মতে, ২০০৮ সালের পর থেকে টানা তিনবার এ আসনটি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের দখলে। এই সময়ের মধ্যে সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়র শেখ মুুজিবুুর রহমান চার দলীয় জোট বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি হাবিবুুল ইসলাম হাবিবের বিরুদ্ধে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। এর পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে মহাজোটগতভাবে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সেই থেকে টানা দুই বারের এমপি হিসেবে এ আসনটি আকড়ে ধরে আছেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সাতক্ষীরা-১ আসনের তালা ও কলারোয়া উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির এই এমপি কৌশলে গ্রুপিং সৃষ্টি করে দলকে দ্বিধাবিভক্ত করে রেখেছেন। তাই এবার তৃণমূল থেকে শুরু করে দলের থানা ও জেলা পর্যায়ের মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা চান এবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী। সেই সাথে জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারলে একদিকে যেমন এলাকার উন্নয়ন তরান্বিত হবে, অন্য দিকে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা আরও বেশি শক্তিশালি হবে বলে মনে করছেন তৃণমুলের নেতা-কর্মীরা।
৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ১ লাখ ৬৯ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। জোটের প্রার্থী বিএনপি নেতা হাবিবুুল ইসলাম হাবিব ১ লাখ ৪১ হাজার ভোট পেয়ে পরাজিত হন। আর বাম দলের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ মাত্র ২৬৬৩ ভোট পান। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের কল্যাণে মহাজোটের আসন ভাগ বাটোয়ারায় এই আসন থেকে কপাল খোলে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মুস্তফা লুৎফুল্লাহর।
তিনি কাঁচতে হাতুড়ি মার্কার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতিক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। টানা দুই বারের এমপি হিসেবে তিনি ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সু-কৌশলে বিভক্ত করে রাখার কারণে দলের শীর্ষ নেতা ও তৃণমুল কর্মীরা এমপিকে নিয়ে ব্যাপক নাখোশ।
এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি জেলা আওযামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্র কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। ২০০০-২০০৩ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক এবং পরবর্তীতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন এবং ৯ম জাতীয় সংসদের সাতক্ষীরা-১ তালা-কলারোয়া আসনের এমপি হিসেবে এলাকার উন্নয়নের পাশাাপাশি দলকে সুসংগঠিত করি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সরকারের জন্য একটা চালেঞ্জের নির্বাচন। এই নির্বাচনে শেখ হাসিনার একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেলে ভোটযুদ্ধে একমাত্রই আমি পারবো জয়যুক্ত হয়ে উন্নয়নের ধারাকে আরও তরান্বিত করতে পারবো।
সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদ স ম আলাউদ্দীন তনয়া জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং সাবেক এমএলএ শহিদ স ম আলাউদ্দীনের কন্যা হিসেবে জাতির জনকের আদর্শকে ধারণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে মাঠে রয়েছি। দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সুখ-দু:খের সাথী হিসেবে তাদের পাশে আছি। আন্দোলন-সংগ্রামে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে নৈরাজ্য-নাশকতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দিচ্ছি। এবারের নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় মনোনয়ন দিলে আমি আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবো। একই সাথে তালা-কলারোয়ার মাটিকে আওয়ামী লীগের দুর্জয় ঘাঁটিতে পরিণত করতে পারবো।
কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সরদার মুজিব বলেন, এ আসনে মহাজোটের শরিক দলগুলোর ভোটের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বর্তমান ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মহাজোটের এমপি আওয়ামী লীগের মধ্যে অন্ত:দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দলকে বিভাজন করে রেখেছে। তিনি কোনভাবে চান না আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে এখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। তিনি মাহাজোটের এমপি হলেও তার জন্মস্থান এখানে নয়। জন্মস্থান সাতক্ষীরা-৪ আসনের শ্যামনগরে। বসবাস করেন সাতক্ষীরা-২ আসনে। তিনি এলাকায় বিতর্কিত। নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দিলে চরম ভরাডুবি হবে। ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের ৬৩জন এমপির চাইতেও বেশি ভোট পেয়েছিলাম। সেই থেকে আজও শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।
কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন বলেন, জন্মের পর থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে অদ্যাবধি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে রাজপথে সামনের সারিতে থেকে শেখ হাসিনা এবং মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দলীয় মনোনয়ন পেলে একমাত্র আমিই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস নৈরাজ্য ও সহিংসতা মোকাবেলা করে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবো- ইনশাল্লাহ।
যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, দলের জন্য ও মানুষের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক কাজ করে যাচ্ছি। মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে শেখ হাসিনার উন্নয়নের যে মহাযজ্ঞ চলছে সেই উন্নয়নের ধারায় তালা ও কলারোয়া আসনের উন্নয়নের পাশাপাশি সাতক্ষীরা জেলাকে একটি সমৃদ্ধ ও আলোকিত জেলা হিসেবে গড়ে তুলবো।
তালা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও এই আসনে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন আ.লীগ আমাকে মনোনয়ন ও নৌকা প্রতিক দেয়। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে দল মহাজোট থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাকে মনোনীত করে। নৌকা প্রতিক নিয়ে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে তৎপর থেকেছেন সব সময়। কোটা ভিত্তিক উন্নয়ন ছাড়া দুই উপজেলায় কোন উন্নয়ন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, এমপি পদকে কাজে লাগিয়ে দলের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি সৃষ্টি করেছেন তিনি। যা তালা-কলারোয়ার আ.লীগকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ব্যক্তি ইমেজে একজন অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তি তিনি। ২০০১ সালে তালা-কলারোয়া আসনে নির্বাচন করে দুই উপজেলায় ১২শ’ ভোট পেয়েছিলেন। এতেই জনগণের বুঝতে বাকি থাকে না তিনি কতটা গ্রহণযোগ্য। এখন জনগণ তালা-কলারোয়ায় আ.লীগের দলীয় প্রার্থী চায়। কোন ভাড়াটে লোককে চাই না। তাছাড়া তাকে মহাজোট থেকে মনোনয়ন দিলে ফল বিপর্যয় ঘটবে। এসকল বিষয়গুলো দলীয় হাইকমান্ডকে অনেক আগেই অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি, দল সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নিয়ে আ.লীগ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিবেন।
নির্বাচন নিয়ে জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়েত ইসলামের নেতারা বলেন, কেন্দ্র থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনে অংশগ্রহণের আন্দোলন চলছে। কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নিবে সেই মোতাবেক কাজ করবো।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক তথ্য মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখৎ বলেন, আমি এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তালা-কলারোয়াসহ জেলায় অভাবনীয় উন্নয়ন করেছি। সাধারণ জনগণ আমার উপর আস্থাশীল আছে। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনের ব্যাপারে আগামীতে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে কাজ করে যাব। জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে এখনো কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান আসেনি।
বর্তমান মহাজোটের এমপি ওয়াকার্স পার্টির নেতা এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, এবারও প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছি। জোটের সাথে ছিলাম। জোটগতভাবে যে সিদ্ধান্ত আসে সেটি মাথা পেতে নেব। করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধে উন্নয়ন থমকে ছিল। আবারও মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারলে শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখবো।