পৃথিবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সামরিক স্বৈরশাসকদের হাতে প্রতিষ্ঠিত কোন রাজনৈতিক দল ৫০ বছরের বেশি স্থায়ী হয়নি। সময়ের পরিক্রমায় বালির বাঁধের মত ভেঙে পড়েছে সামরিক স্বৈরাচারী শাসক এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত দলসমূহ। উদাহরণস্বরূপ প্রথমেই বলা যেতে পারে জার্মানির এডলফ হিটলারের কথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সমগ্র ইউরোপকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা এই লৌহ মানবকেও পরাজয়ের গ্লানি মাথায় নিয়ে করুণভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়েছিল। ইতালির ফ্যাসিস্ট বেনিতো মুসোলিনিকেও হার মানতে হয়েছিল অসহায় ভাবে। তিউনিসিয়ার বেন আলীর পতন হয় ৪৯ বছর শাসন করার পর, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফি ৪ দশক না পেরোতে ৩৬ বছরেই ট্রাজেডির মুখোমুখি হন। সাম্প্রতিক সময়ের আরেকজন ট্রাজিক হিরো ইরাকের সাদ্দাম হোসেন ২৬ বছর ইরাক শাসন করার পরে ইঙ্গ- মার্কিন জোটের ষড়যন্ত্রে তার পরিণতিও হয় ধ্বংসাত্মক। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ উগান্ডার নিষ্ঠুর সামরিক স্বৈরশাসক ‘ম্যাড ম্যান অফ আফ্রিকা’ ইদি আমিনকেও ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল ন্যাক্কারজনকভাবে। পরাজয়ের গ্লানি থেকে বাঁচতে পারেনি জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবে। পাকিস্তানের জেনারেল ইয়াহিয়া খানের করুন ইতিহাস কারো অজানা নয়। পাকিস্তানের আরেকজন সামরিক স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ আজ নির্বাসিত। ইতিহাসের নির্মম সত্য, ইতিহাস ক্ষমা করেনি কোন সামরিক স্বৈরাচারকেই। বাংলাদেশের সুযোগ সন্ধানী সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল জিয়াউর রহমানের ক্যান্টর্মেন্টে জোড়া তালি দিয়ে তৈরি রাজনৈতিক দল বিএনপি’র ইতিমধ্যেই চার দশক অতিক্রান্ত হয়েছে। বিএনপি’র সূর্য অস্তমিত প্রায়। বিএনপিকে চোরাগুপ্তা হামলা, অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর, সন্ত্রাস আর পুলিশ হত্যার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ বিএনপিকে পরাজিত করে নিক্ষেপ করবে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে।
ড. আব্দুল ওয়াদুদ
প্রেসিডিয়াম সদস্য-বঙ্গবন্ধু পরিষদ