এম এ মান্নান চৌগাছা (যশোর) ঃ যশোরের চৌগাছায় দূর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা গেছে কৃষকের ২ টি গাভী আহত হয়েছে আরো ২ টি বাছুর ও ২ টি গাভী। মারা যাওয়া ১ টি গাভী গর্ভবতী ছিল। আহত গাভী দুটিও গর্ভবতী। এতে ওই কৃষক পরিবারের অন্তত চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার স্বরুপদাহ গ্রামের পশ্চিম পাড়ার মৌলভী হেলাল উদ্দীনের ছেলে কৃষক তাহাজ্জেল হোসেনের বাড়িতে এঘটনা ঘটে।
প্রবিবেশিরা জানান, কৃষক তাহাজ্জেল হোসেনের গোয়াল ঘরে আগুনের ঘটনাটা স্বাভাবিক ছিলনা। কারণ তার গোয়াল ঘরের পাশে কোনো প্রকার আগুনের উৎস নেই। কেউ হিংসাত্বকভাবে এই ক্ষতি করেছে বলে এলাকাবাসি মন্তব্য করেন।
কৃষক তাহাজ্জেল হোসেন জানান, তারাবি নামাজ পড়ে গরু গুলোর খাবার দিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১১ টার দিকে গরুগুলোর ডাক চিৎকার ও পাটকাঠি পোড়ার চটপট শব্দে তার ঘুম ভাঙ্গে। ঘুম থেকে জেগে দেখেন তার গোয়ালঘরে দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। আগুন দেখে চিৎকার করলে প্রতিবেশিরা ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। গোয়াল ঘরে থাকা তিনটি টি গাভী,তিনটি বাছুর ও দুটি খাশি ছাগলের মধ্যে একটি বকনা বাছুর ও একটি গর্ভবর্তী গাভী মারা যায়। এবং আহত হয় দুটি গর্ভবতী গাভী ও বাছুরগুলো। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে কৃষক তাহাজ্জেলও আহত হয়েছেন। তিনি আরো জানান, তার গাভীগুলো প্রতিদিন ৪/৫ কেজি করে দুধ দিচ্ছিল। এই দুধ বাজারে বিক্রি করে যে আয় হচ্ছিল তাতে তার সংসার চলছিল। মারা যাওয়া দুটি গাভির মূল্য আনুমানিক দুই লাখ টাকা এবং আহত দুটি গাভী ও একটি বাছুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গাভী দুটির শরীরের ৮০ ভাগই ঝলসে গেছে।
কৃষক পরিবারের অন্য সদস্যরা জানান, তাদের সাথে এমন কারো শত্রুতা নেই। অনেক কষ্টে ছেলে মেয়ে বড় করছেন তাহাজ্জেল। কষ্টের মধ্যে গুরুগুলো তার সংসারের দুঃখ ঘুচিয়ে দেয়। ভালো আয় হচ্ছিল গুরুর দুধ বিক্রি করে। এজন্য কেউ হিংসা করে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে বলে তাদের ধারনা। এ ঘটনায় তারা থানায় অভিযোগ করবেন বলে জানান।
স্থানীয় স্বরুপদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল কদর বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং মর্মান্তিক! মানুষের সাথে শত্রুতা থাকতে পারে তাই বলে অবোলা নিরিহ প্রানীকে হত্যা করে একেমন শত্রুতা!
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা গোলাম মোরশেদ বলেন, নিরীহ প্রাণীর সাথে এ কেমন আচরণ। ঘটনা দেখে আমরা স্তম্ভিত হয়ে গেছি! মানুষ এমন কাজ করতে পারে? স্বরুপদাহ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম বলেন, এই গ্রামে আমার বাড়ি ভাবতে কষ্ট হচ্ছে যে, আমার গ্রামের মানুষ এতটা নীচে নেমে গেছে! উপস্থিত গ্রামবাসি ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানান।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।