ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে এসটিপি (সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) স্থাপনের শর্ত আরোপ করতে বলেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যোদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী সমবায় সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন আমি ইতোমধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর সংস্থা প্রধানদের উদ্দেশ্যে ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে এসটিপি স্থাপনের শর্ত দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে এসটিপি স্থাপনের শর্ত দেওয়ার জন্য তিনি পৌর মেয়রের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা দূষিত শহরের তালিকায় বিশ্বের এক থেকে তিন নম্বরে থাকে। এ অবস্থায় আমরা কেউই শান্তিতে থাকতে পারবো না। ঢাকাসহ সারাদেশকে বাসযোগ্য রাখতে হলে দূষণ রোধ করতে হবে, শহরকে বর্জ্যমুক্ত রাখতে হবে। জলাশয়গুলোর পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আমাদের এখন থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আবাসন মানুষের খুবই কাঙ্ক্ষিত বিষয়, এটি মানুষের মৌলিক অধিকার। সকলের জন্য আবাসন নিশ্চিত করা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নয়, ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ যারা আছেন তাদেরকেও নিজস্ব আবাসনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের আবাসনের ব্যবস্থা করতে তিনি আশ্রায়ণ প্রকল্প গড়ে তুলেছেন। তাদেরকে বিনামূল্য ঘরবাড়ি করে দিচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিসিং হাউজিং প্রকল্পের সার্বিক উন্নয়নে সার্বক্ষণিক পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন ভুমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে পরিকল্পিত আবাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। সরকারের এ সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর দূষণের শহর হয়ে গিয়েছে। এটি সুস্থভাবে বসবাসের অনুপযোগী শহরে পরিণত হয়েছে। আমি নির্বাচনের সময় শহরটিকে তিতাসের পূর্ব পাড়ে সম্প্রসারিত করার যে অঙ্গিকার করেছিলাম, সেটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। কুরুলিয়া খালের দক্ষিণ তীরে এপার্টমেন্ট প্রজেক্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই এ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব।
মন্ত্রী বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন, আমার বহুদিনের শ্রমের বিনিময়ে এলজিআরডি-এর মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব পাশ দিয়ে মেড্ডা থেকে শিমরাইল কান্দির কুরুলিয়া ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কাজ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে, আপনাদের দোয়া থাকলে শিগগিরই এটি পাশ হবে। চলতি বছরের মধ্যে শহরে শিশু পার্কের নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই আমরা করবো তবে এক্ষেত্রে আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। কেননা জনগণের সহযোগিতা ব্যতীত কোনো ধরনের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পিআরএল ভোগরত গ্রেড-১ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমির রেক্টর (সচিব) মো. সহিদ উল্যাহ, সাবেক সচিব গোলাম রব্বানী, বিয়াম ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক মিজানুর রহমান, সমবায় অধিদপ্তরের অতিরিক্ত নিবন্ধক আহসান কবীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র নায়ার কবির প্রমুখ।
এছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমবায় অধিদপ্তরের যুগ্ম নিবন্ধক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী সমবায় সমিতি লিঃ এর সদস্যবৃন্দ এবং ডিসি হাউসিং এর প্লট গ্রহীতাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিসি হাউজিং সোসাইটির প্লট গ্রহীতাগণের মাঝে মন্ত্রী প্লটের দলিল হস্তান্তর করেন।