আজ ১৪ মে ২০২৪ খ্রিঃ, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মঙ্গলবার সকাল ১০:০৫ ঘটিকায় বয়রাস্থ পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস হলে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয়ের সভাপতিত্বে গ্রান্ড কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রান্ড কল্যাণ সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও শ্রীমদ্ভগবদগীতা থেকে পাঠের মধ্য দিয়ে আয়োজিত সভার কার্যক্রম শুরু হয়। কল্যাণ সভার শুরুতে “হিট স্ট্রোক (Heat Stroke)” এর কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার এবং কাদের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ সে সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ প্রদান করেন খুলনা বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা: সৈয়দ একেএমএন করিম। এরপর বিগত কল্যাণ সভায় প্রস্তাবিত সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
অত:পর কেএমপি’র প্রসিকিউশন বিভাগে কর্মরত এসআই(নিঃ) মোঃ কামরুজ্জামান স্বেচ্ছায় এবং কনস্টেবল ৪৪৩৭ মোঃ হাবিবুর রহমান দীর্ঘ চাকুরী জীবন শেষে বার্ধ্যক্যজনিত অবসরে যাওয়ায় পুলিশ কমিশনার মহোদয় তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা, ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। একইসাথে তাদের অবসরকালীন সময়ে সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনাসহ সুস্থ ও সুন্দরভাবে জীবন অতিবাহিত করতে পারে সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মহোদয় কল্যাণ সভার প্রারম্ভে বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত সকল পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সদের বিভিন্ন সমস্যার কথা অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেন। পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দাবী এবং প্রত্যাশা পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। এরপরে পুলিশ কমিশনার মহোদয় সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ট্রলি ব্যাগ বিতরণ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন।
কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা মহোদয় গ্রান্ড কল্যাণ সভায় উপস্থিত অফিসার ও ফোর্সদের বক্তব্য শ্রবণ শেষে উপস্থিত সকলকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। আমাদের মূল দায়িত্ব হচ্ছে ডিসিপ্লিন মেইন্টেন করা। সেজন্য কেএমপির সকল পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার ও ফোর্সকে অবশ্যই ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে। যে কোন প্রকার মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স এবং পুলিশের কোন সদস্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ও পারিপার্শ্বিক কোনো ভাবে মাদক, অনলাইন জুয়া বা প্রকাশ্য জুয়ার সাথে জড়িয়ে না যায় সে ব্যাপারে সকলকে সর্তক থাকতে হবে এবং কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কমিউনিটি ব্যাংক হতে পুলিশ সদস্যদের রেগুলার ও জিপিএফ লোন নিতে নিরুৎসাহি করতে হবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স, থানা ফাঁড়ি, ক্যাম্পের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। খুলনা মহানগরীতে Hello KMP অ্যাপস্ ব্যবহারের জন্য প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে। পুলিশ লাইন্স্ মেসের খাবারের মেনু মানসম্মত করতে হবে।”
এছাড়াও তিনি সরকারি যানবহন যথাযথ ব্যবহার করাসহ ডিউটি শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। পাশাপাশি ক্লথিং স্টোর, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, রেশন স্টোর ও অস্ত্রাগার এর ইনচার্জদের কে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন। কেএমপির যে সকল পুলিশ সদস্যরা বাহিরে বসবাস করেন তাদের হালনাগাদ তথ্যাদি Citizen Information Management System (CIMS) কার্যক্রমের আওতায় অন্তভূক্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। পুলিশ লাইন্স, থানা ফাঁড়ি, ক্যাম্পের অস্ত্র-গুলির হেফাজত পরিপূর্ণ সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ট্রাফিক আইন মেনে পুলিশ সদস্যদের মোটরসাইকেল চালানো এবং মোটরযান শাখার ড্রাইভার গাড়ি চালানোর নির্দেশনা প্রদান করেন। এক্ষেত্রে কোন ব্যত্যয় না ঘটে নিশ্চিত করার জন্য উর্ধ্বতন সকল কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন। আগামীতে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে কেএমপি’র ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের আভিযানিক সাফল্যে এবং সর্বপরি ডিসিপ্লিনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কেএমপিকে একটি জনবান্ধব বসবাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করার করার এবং চলমান অভিযান অব্যাহত রাখা আশাবাদ ব্যক্ত করে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য সমাপ্ত করেন।
উক্ত গ্রান্ড কল্যাণ সভায় কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন এন্ড ফিন্যান্স) জনাব সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) জনাব মোছাঃ তাসলিমা খাতুন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন; বিশেষ পুলিশ সুপার (সিটিএসবি) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব রাশিদা বেগম, পিপিএম-সেবা; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিবি) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব বিএম নুরুজ্জামান, বিপিএম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস অ্যান্ড সাপ্লাই) অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত জনাব এম.এম শাকিলুজ্জামান; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) জনাব রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, পিপিএম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) জনাব মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (এফএন্ডবি) জনাব শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ইএন্ডডি) জনাব মোঃ কামরুল ইসলাম; ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) জনাব মনিরা সুলতানা এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (আরসিডি) জনাব শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী-সহ অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, সহকারী পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, অফিসার ইনচার্জবৃন্দ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসার-ফোর্স, সিভিল স্টাফ উপস্থিত ছিলেন।