আরাফাত আলী,(নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি):
নওগাঁয় প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবিতে নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) পিএলসির অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে গ্রাহকরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এসময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোসহ নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধান ফটক বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, তাজের মোড়ে শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থরক্ষা কমিটি। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা শহরের কাঠালতলী এলাকায় নেসকো কার্যালয় ঘেরাও করেন। ঘেরাও কর্মসূচি শেষে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী ফরিদুল হাসানের কাছে স্মারকলিপি দেন কমিটির নেতারা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থরক্ষা কমিটির নেতা ও সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের তাজের মোড়ে শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা শহরের কাঠালতলী মোড় এলাকায় অবস্থিত নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি পিএলসির (নেসকো) অফিস ঘেরাও করেন। বিদ্যুৎ অফিসের সামনের সড়কে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা হয়রানিমূলক প্রিপেইড স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, বিদ্যুৎ খাতের সংস্কার ও গ্রাহক হয়রানি-ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানান। বিক্ষোভ সমাবেশ চলার সময় নওগাঁ-বগুড়া সড়কে ১৫ থেকে ২০ মিনিট যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা কমিটির একটি প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি দিতে ভিতরে যান।
সমাবেশে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল নওগাঁ জেলা শাখার আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন মুকুল বলেন, বিদ্যুৎ খাত থেকে রেন্টাল, কুইক রেন্টালের নামে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের লুটেরা বাহিনী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই লুটেরাদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের এখনও হয়রানি ও ভোগান্তি ফেলানোর প্রক্রিয়া চলতে আসছে। এটা দুঃখজনক। জনগণের টাকা লোপাটের এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে।
বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব আলিমুর রেজা রানা বলেন, প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ করে পুরোনো মিটারের ত্রুটি সংশোধন করতে হবে। এর মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছি। যদি বিদ্যুৎ খাতের লুটের বিচার না হয়, জনমত উপেক্ষা করে নওগাঁয় নেসকোর হয়রানিমূলক প্রিপ্রেইড মিটার স্থাপন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে যাঁদের বাড়িতে প্রিপেইড মিটার লাগানো হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে নেসকোর প্রকৌশলী ফরিদুল হাসান বলেন, গ্রাহকরা নির্বাহী প্রকৌশলী নেসকো বরাবর স্মারকলিপি লিখেছে। স্মারকলিপিটি আমাকে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে দিতে বলা হয়েছে। স্মারকলিপির বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেব। তিনি আরও বলেন, প্রি-পেইড মিটার লাগানো নেসকোর একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তবে বিভিন্ন স্থানে গ্রাহকদের অভিযোগের কারণে প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ হচ্ছে। তবে পরবর্তীতে এ বিষয়ে গণশুনানি করে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।