স্টাফ রিপোর্টারঃ কালিগঞ্জের পল্লীতে রেইনট্রী গাছ তৃমুখী টানাটানিতে নাজেহাল দীর্ঘদিন হৃদরোগে আক্রান্ত বিশ্বনাথ। বিষয়টি ঘীরে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে বলে অনুসন্ধানে জানাগেছে। ঘটনাটি উপচেলার মৌতলা ইউনিয়নের নামাজগড় গ্রামের।
অনুসন্ধ্যানে জানাগেছে, ঘূণিঝড় বুলবুল’র তান্ডবে উপজেলা এলাকায়
নামাজগড় গ্রামের মৃত মধুসুদন দেবনাথের পুত্র বিশ্বনাথ দেবনাথ এর দীর্ঘদিনের মালিকানার একটি রেনট্রি গাছ বুলবুলের তান্ডবে পড়ে যায়। একপর্যায় ঐ গাছটি গাছের লালন পালনকারী বিশ্বনাথ গাছটি বাজারমূল্যে বিক্রয় করেন। তখনী বেঁধে যায় বিপত্তী। গাছটির মালিকানা নিয়ে দাবী তোলেন জেলা পরিষদ, স্থানীয় সরকার ও দখলকারী।
এদিকে বিশ্বনাথ দেবনাথ এর সাথে গাছের ক্রেতা সুজনের সাথে আবার বিরোধ হয় গাছ কাটা আর লেনদেন নিয়ে।
একপর্যায় গাছ টানাটানির বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পর্যান্ত গড়ায়। চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বিষয়টি আমলে নিয়ে বিরোধ নিশ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গাছ বিক্রির ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা নিজ জিম্মায় নিয়ে নেন, যা উপজেলা চেয়ারম্যানের প্যাডে দাতা গ্রহীতার স্বাক্ষরীত।
অপরদিকে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সংরক্ষীত মহিলা সদস্য রোজিনা পারভীন গাছটি জেলা পরিষদের গাছ বলে দাবি করেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলামও ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত গাছ বলে দাবী করে আসছেন। এভাবে তৃমুখী দাবীর মধ্যে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলেও হঠাৎ গত( ৪ ডিসেম্বন) বুধবার জেলা পরিষদ সদস্য রোজিনা পারভীন এবং জেলা পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন ও জেলা পরিষদের গাছ মর্মে দাবী করেন এবং গাছ বিক্রেতা ও ক্রেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। কালিগঞ্জ থানা পুলিশ গাছের মালিক ও ক্রেতাকে থানায় নিয়ে আসেন, সেই সাথে বিশ্বনাথের দাবীর স্বপক্ষের কাগজপত্র দেখে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন। ৫ ডিসেম্বর সন্ধা ৬ টায় জেলা পরিষদের কালিগঞ্জ ডাকবাংলার কেয়ারটেকার তারিফুল ইসলাম একটি ট্রাক ও একটি ক্রেন নিয়ে গাছ উদ্ধারে নিয়েজিত থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয়দের প্রতিরোধে সফল হতে পারেননি তিনি।
বিরোধপুর্ণ গাছের মালিকানা নিয়ে মৌতলা ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা রেজাউল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন নামজগড় মৌজার ১ খতিয়ানের এস এ ২০২০ দাগে (হাল দাগ ৪৩৪১) জমি ৩২ শতক, শ্রেনী পথ, মালিকানায় বাংলাদেশ সরকার। তবে গাছটি বিশ্বনাথ দেবনাথের দখলে। তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী গ্রাম্য চলাচলের পথটি ইটসোলিং করে দেওয়ায় গাছটি রাস্তার সোলেপে পড়ে। ইউপি চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ইউনিয়ন পরিষদের নির্মানাধীন রাস্তার ধারের গাছ, সেহেতু গাছটি স্থানীয় সরকারের আওতাধীন। এ গাছটির বিক্রিত অর্থ ইউনিয়ন পরিষদের কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত আশা করি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন গাছটি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাধান না হওয় পর্যন্ত বিরোধেয় গাছের বিক্রিত অর্থ আমি গাছ ক্রেতা বিক্রেতার সম্মতিতে লিখিত ভাবে আমার জিম্মায় রেখেছি। গাছটির মালিকানা নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত জমাকৃত টাকা আমার জিম্মায় থাকবে। মাপ জরিপান্তে গাছটি যার প্রাপ্য হবে নিয়ম অনুযায়ী বিক্রিত টাকা তারাই পাবেন। তবে এই গাছ টানাটানি করতে গিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি আমাকে হেয় করার পায়তারা চালানো হচ্ছে। তিনি এ প্রতিনিধিকে আরও বলেন একটি চক্র ঘুর্ণিঝড় বুলবুল পরবর্তীতে সড়ক মহা সড়কের ধারের অনেক পড়ে যাওয়া গাছ নিয়ে বানিজ্যে নামে। সেখানে বাঁধা পড়ায় পরিস্থিতি এই পর্যায়ে এসেছে বলে আমার মনে হয়েছে।
সবমিলে বেকায়দায় পড়েছেন দীর্ঘদিনের হৃদরোগে আক্রান্ত বিশ্বনাথ। বাপ-দাদার লাগানো আর নিজ পরিচর্যার গাছ নিয়ে এখন পুলিশি ভীতি, বিভিন্ন ব্যাক্তির অব্যাহত হুমকী ঘুম হারাম হতে বসেছে তার। ভুক্তভোগীর অবস্থাটা এমন যে, ভিক্ষার দরকার নেই, বাবা কুকুরটা সামলা।