মোহাম্মদ আল-আমিন,অনলাইন ডেস্ক: করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের আওতা না বাড়িয়ে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে বরং কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ৫০ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত বার্ষিক বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স আদায় করা হয়। এটি কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত ছোটো ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য তা কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।
অন্যদিকে গত বছর থেকে আমদানি পর্যায়ে আগাম কর (অ্যাডভান্স ট্যাক্স বা এটি) নামে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। এবার এই খাতে দুটি স্তর হতে পারে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য ৫ শতাংশ ঠিক রেখে শিল্পের আমদানির ক্ষেত্রে এই হার কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হতে পারে। এছাড়া চিকিত্সাকাজে ব্যবহার হওয়া বিশেষ করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে মাস্কসহ ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী আমদানি ও উত্পাদনে বেশ কিছু খাতে ভ্যাট ও শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। তবে আলোচ্য ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হলেও তামাক খাতের জন্য সুখবর নেই। তামাকপণ্যের ওপর এবারও কর বাড়তে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সিগারেটের মধ্যম ও নিম্নস্তরে সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশের মতো বাড়তে পারে। ছাড় দেওয়া ভ্যাটের অর্থ এ খাত থেকে পুষিয়ে নিতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করোনা ভাইরাসের বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে আগামী বৃহস্পতিবার ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় স্থবির। দেশেও স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে কমে গেছে আমদানি-রপ্তানিও। এ পরিস্থিতিতে রাজস্ব বিবেচনা নয়, বরং মানুষ ও ব্যবসা বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের। সূত্র জানিয়েছে, সরকারও এ বছর হাতেগোনা দুই একটি খাত বাদে ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য চাপ দিতে চাইছে না। বরং ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের স্বস্তি দেওয়ার উপায় খুঁজছেন অর্থমন্ত্রী। এ কারণে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি বিদ্যমান ভ্যাট আইনের কিছু জটিলতা নিরসনেরও প্রস্তাব থাকবে।
বাজেট সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে উেস কর ও রেয়াত নেওয়াসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে। এ কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বাজেটে এ ধরনের ১০ থেকে ১২টি ক্ষেত্রে আইনি সংস্কার করার প্রস্তাব করা হবে। বাজেট সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, এবার ভ্যাটের আওতা না বাড়িয়ে আইনি সংস্কারের মাধ্যমে ভ্যাটের অসঙ্গতি ও জটিলতা দূর করার মাধ্যমে ভ্যাট আদায় ব্যবস্থাকে সহজ করার লক্ষ্য রয়েছে। এটি নিশ্চিত করা গেলে আওতা না বাড়িয়েও ভ্যাট আদায় বাড়ানো সম্ভব। চলতি বছর ভ্যাটের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, আগামী বাজেটে ভ্যাটের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হচ্ছে ১ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা।
সূত্র;ইত্তেফাক