টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানা এবং মধুপুর থানার সমন্বয়ে অবস্থিত গারোবাজার। ঘাটাইল পাশে নেতৃত্ব দেন একাব্বর আলী চেয়ারম্যান এবং মধুপুর সাইটের নেতৃত্বদেন শেখ রুবেল আহম্মেদ। যে কোন অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে এ দুজনের নেতৃত্বেই চাঁদা উত্তোলন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় প্রস্তাবিত সাগরদিঘী থানার নামে এবং গারোবাজার প্রস্তাবিত পুলিশ ফাঁড়ির নাম করে অর্থ উঠানোর অভিযোগ উঠেছে নব-গঠিত লক্ষিন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একাব্বর আলী ও শেখ রুবেল‘র বিরুদ্ধে। একাব্বর আলী তার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের স্থানীয় গারোবাজারের দোকানদার ও ব্যবসায়ী এবং সমাজের বৃত্তবান লোকদের থেকে জন প্রতি সর্বোচ্চ ২০হাজার টাকা অর্থ উঠানোর অভিযোগের সাক্ষ্য দিয়েছে স্থানীয়রা।
অপরদিকে শেখ রুবেল স্থানীয় নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে গারোবাজার পুলিশ ফাঁড়ির নাম করে তার লোকজন নিয়ে গারোবাজারের মধুপুর সাইড থেকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫০হাজার টাকা এবং প্রতি দোকান থেকে কমকরে ১হাজার টাকা করে চাঁদা উঠানোর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
স্থানীয় গারোবাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, রুবেল আমার দোকানে এসে টাকা চাইলে আমি প্রথমে না করি। না করাতে রুবেল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার বাহিনীকে বলেন আমার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিতে। পরে আমি বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে দিই। একই রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে একাধিক স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, আমার কাছ থেকে একাব্বর চেয়ারম্যান নিজে এসে ৫হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে। চাঁদা নেওয়ার ৬মাস পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি প্রস্তাবিত সাগরদিঘী থানার ফান্ডে কোন সহায়তা জমা দেননি একাব্বর চেয়ারম্যান। পরে আমরা কয়েকজন দোকানদার মিলে টাকার প্রসঙ্গে কথা বললে একাব্বর আলী চেয়ারম্যান জানান, সে টাকা আছে আমার কাছে জমা আছে। মসজিদ এবং এতিম খানায় দিয়ে দিবো। নয়তো বা আর কিছু টাকা ভরে সাগরদিঘী পুলিশ ফাঁড়ির জন্য একটা গাড়ি কিনে দিবো। কিন্তু কয়েক বসর পেড়িয়ে গেলেও আজ অবধী কিচ্ছু দেননি একাব্বর আলী চেয়ারম্যান।
অপরদিকে জানাযায়, একাব্বর চেয়ারম্যান যে টাকা সাগরদিঘী থানার নাম করে উঠিয়েছেন তার কোন টাকাই জমা দেননি সাগরদিঘী থানা আহ্বায়ক কমিটির কোষাধ্যক্ষ বা কর্তৃপক্ষের নিকট।
এ বিষয়ে প্রস্তাবিত সাগরদিঘী থানার আহ্বায়ক কমিটির কোষাধ্যক্ষ জনাব এসকান্দর আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, একাব্বর আলী চেয়ারম্যান কোন অর্থই আমাদের কোষাগারে জমা দেননি। তবে আমি সঠিক জানিনা চেয়ারম্যান প্রস্তাবিত থানার নাম করে কোন অর্থ উঠিয়েছে কি/না? তবে আমি যেটা জানি সেটা হলো, করোনার মহামারিতে দেশরত্ন, মমতাময়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ত্রাণ সহায়তা কাউকে দেয়া হয়নি। বরং তিনি স্থানীয় একটি সমিতির কাছে ২টন চাউল ৪৪হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন, এমন প্রমাণ আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। প্রমাণ পাওয়ার পর আমরা ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে একাব্বর আলী চেয়ারম্যান চাউল বিক্রি করার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি যে চাউল বিক্রি করেছি তা কাবিখার চাউল। তিনি আরো বলেন, একাব্বর আলী চেয়ারম্যান প্রস্তাবিত সাগরদিঘী থানার নাম করে যদি টাকা উঠিয়ে নিজের বাহিনী বা নিজের পকেট ভড়ে থাকেন তবে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মুঠোফোনে একাব্বর আলী চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,আমি প্রস্তাবিত সাগরদিঘী থানার নাম করে কোন অর্থই উঠাইনি। তবে আমার নাম করে কেউ গোপনে উঠাতে পারে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তখন স্থানীয় ভোক্তভোগি দোকানদারদের নাম উল্লেখ করে বলার পর একাব্বর আলী চেয়ারম্যানের কথার ধরণ পাল্টিয়ে বলেন, সেটা অনেক আগের ঘটনা। তখন সামান্য কিছু টাকা উঠিয়ে ছিলাম, সে টাকা পুলিশ ফাঁড়ির টিনসেট ঘর করে দেওয়ার জন্য দিয়ে দিয়েছি বলে ফোন কেটে দেন।
সাগরদিঘী থানা কমিটির কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করে জানাযায়, একাব্বর আলী চেয়ারম্যান সাগরদিঘী পুলিশ ফাঁড়ির জন্মলগ্ন থেকে কোন অর্থনৈতিক সহায়তা করেননি।
স্থানীয়দের চাঁদা প্রদানের গড় হিসেব অনুযায়ী মধুপুর এবং ঘাটাইল সাইড দুপাশ মিলে ২০ লক্ষ টাকার অধিক চাঁদা উঠানোর ব্যাপারে হিসাব পাওয়া গিয়েছে।
স্থানীয় ভোক্তভোগী সাহসী যুবক বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে নানা রকম স্ট্যাটাস দিয়ে টাকার হিসাব চেয়ে ফাঁড়ির বিষয়ে জানতে চাচ্ছে। তারা দাবী করে বলেন, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুশাসনের গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করেও প্রতিনিয়ত কিছু আওয়ামী নামধারী নেতা কর্মীর হাতে তৃণমূলের আওয়ামিলীগ নির্যাতিত অবহেলিত হয়ে আসছি। একাব্বর আলী চেয়ারম্যান এবং রুবেলের মত কিছু সার্থলোভী নেতার কারনে আওয়ামী লীগের সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। আমাদের দাবী একটাই গারোবাজার থানা না হোক পুলিশ ফাঁড়ি চাই,নয়তো আমাদের কষ্টে অর্জিত টাকা ফেরত চাই এবং আমাদের তৃণমুলের আস্থা ভাজনদের কাছে দাবী, থানার নাম করে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে আইনমন্ত্রী ও প্রশাসন এবং জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।