উজ্জ্বল রায় নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কর্মবাদী লোকেরা বলেন ভাগ্য কিছুই না , কর্মেই ভাগ্য পরিবর্তন করা যায় । আর , ভাগ্যবাদী লোকেরা বলেন , কপালে ( ভাগ্যে ) যা লেখা আছে তাই হয় , এবার কর্ম যাই করেন না কেন ।
ভাগ্যবাদী আর কর্মবাদী লোকদের মধ্যে এই তর্ক বিতর্ক কখনো শেষ হতে পারেনা । তবেএটাও ঠিক যে , ভাগ্য আর কর্ম এই দুটির মধ্যে একটি সম্পর্ক অবশ্যই আছে । কর্ম থেকে ভাগ্য বানানো যায় বা ভাগ্য থেকে কর্ম , এই দুইটির মধ্যে কোন ভাল সম্পর্ক অবশ্যই আছে ।
ভাগ্য এবং কর্মের মধ্যে এই সম্পর্কটা বুঝানোর জন্য এই কাহিনীটা খুবই ভাল একটা উদাহরন হতে পারে ।
একবার মহর্ষি নারদ ভগবান বিষ্ণুর কাছে গিয়েছিলেন । তিনি অভিযোগের মনোভাব নিয়ে ভগবানকে বললেন , ” পৃথিবীতে আপনার প্রভাব কমে গেছে প্রভু , ধর্মের পথে চলা লোকেরা কোন ভাল ফল পাচ্ছেনা , অথচ যারা পাপ করছে তারা ভাল ফল পাচ্ছে । ”
ভগবান বলছেন , ” না না এমনটা হতে পারেনা , যা কিছুই হচ্ছে সব নিয়তির মোতাবেক হচ্ছে । ” নারদজী মানলেন না । ভগবান বললেন , “এমন কোনো ঘটনা বলো তো ?” নারদজী বললেন এখনই আমি এক জঙ্গল দিয়ে যাচ্ছিলাম , দেখলাম সেখানে একটি গাভী গর্তের মধ্যে আটকে গিয়েছিল , বাঁচানোর মতো কেউ ছিল না । তখনই এক চোর সেখান দিয়ে যাচ্ছিল , গাভীটিকে গর্তে আটকে পরে থাকা অবস্থায় দেখেও সে দাঁড়ায় নি , উল্টো গাভীর উপর পা রেখে সে অতিক্রম করে চলে গেল । কিছুদূর যাওয়ার পর সেই চোরটি সোনার অলংকারের একটি থলি পেয়ে গেল
কিছুক্ষণ পর সেখান দিয়ে একজন বৃদ্ধ সাধু যাচ্ছিল , সেই সাধু গাভীটিকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করতে থাকে , সারা শরীরের জোড় দিয়ে টেনে টেনে অবশেষে গাভীটিকে উপরে উঠাতে সক্ষম হলো । কিন্তু আমি ( নারদজী ) দেখলাম , সেই সাধু কিছুদূর যাওয়ার পর একটি গর্তের মধ্যে পরেগিয়ে প্রান ত্যাগ করলো । তাহলে ভগবান আপনিই বলুন – এটা কোন ধরনের ন্যায় হলো ?”
ভগবান হাসলেন এবং বললেন , ” হে নারদ , এটা ঠিকই হয়েছে । যে চোরটি গাভীর উপর পা রেখে চলে গিয়েছিল , তার পাপের কারনে সে কেবল কিছু স্বর্ন আর মোহরই পেল যা অস্থায়ী , যেখানে সাধুকে গর্তের মধ্যে এই কারনেই পরতে হয়েছিল যে তার ভাগ্যে মৃত্যুই লেখা ছিল , কিন্তু গাভীটিকে বাঁচানোর কারনে তার পুন্য এত বেড়ে গিয়েছিল যে তার মৃত্যুটা একটি ছোট্ট ব্যথায় বদলে গিয়েছিল । তাই হে নারদ , মনুষ্যের কর্মেই তার ভাগ্য নির্ধারিত হয় ।”
তখন নারদজী সন্তুষ্ট হলেন ।