সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোয় অনির্দিষ্টকালের ছাত্র ধর্মঘট ও অবস্থান কর্মসূচি চলছে। সোমবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রমে। যদিও কিছু কিছু বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে। তবে ক্যাম্পাস ছিল অনেকটা ফাঁক। প্রতিদিনকার কোলাহলে ভাটা পড়েছে।
প্রজ্ঞাপনের দাবিতে শিক্ষার্থী ১১ টার সময় বিক্ষোভ মিছিল বের করা কথা রয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রোববার বিকাল ৫টার মধ্যে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ধর্মঘটের ডাক দেয়।
এর আগে কোটা বাতিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ঘোষণা ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বাস্তবায়নের দাবিতে ২৬ এপ্রিল আলটিমেটাম দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। এই সময়ের মধ্যে গেজেট প্রকাশ না হলে ১ মে থেকে ফের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। এমতাবস্থায় ২৭ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীমের বৈঠক হয়।
প্রায় দেড় ঘণ্টার ওই বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধে এবং মামলা প্রত্যাহারের আশ্বাসে ৭ মে পর্যন্ত আলটিমেটামের সময় বৃদ্ধি করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। এই সময়েও প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় ৯ মে মানববন্ধন করে ১০ মের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করতে ফের আলটিমেটাম দেন তারা। কিন্তু চতুর্থ দফা আলটিমেটাম অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারি না হলে ১৩ মে রোববার বিক্ষোভের ডাক দেন আন্দোলনকারীরা। ওই বিক্ষোভ থেকে ১৪ মে সোমবার থেকে লাগাতার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।
রোববারের বিক্ষোভ মিছিলে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ‘কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন কই’, ‘কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন চাই, প্রজ্ঞাপন দিয়ে দিন, আমরা পড়ার টেবিলে বসতে চাই’, ‘আর নয় কালক্ষেপণ, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘শুধু মুখে নয়, লিখিত প্রজ্ঞাপন চাই’।
বিক্ষোভ শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর, মো. রাশেদ খান, ফারুক হোসেন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান আল মামুন বলেন, আন্দোলনকারীদের ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের বাড়িতে হামলা করা হচ্ছে। শনিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলেও কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার ওপর হামলা করা হয়েছে। এমতাবস্থায় সরকারের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানাচ্ছি।