বেলায়েত হোসেনঃ-আগামী কাল রোববার থেকে খুলছে পোশাক কারখানা। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই শিল্পকারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসার পর হাজার হাজার শ্রমিক গাজীপুর, ঢাকা, সাভার ও নারায়ণগঞ্জ ফিরতে শুরু করেছে।
শনিবার (৩১ জুলাই) বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে শ্রমিকদের কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ছুঁটতে দেখা গেছে। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা পিকআপ, ট্রাক ও ইঞ্জিন চালিত ভ্যান ও রিকশায় চড়ে বাড়ি থেকে আসছেন। যানবাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটে ছুটছেন গন্তব্যের পথে।
আবার কেউ কেউ গাড়ি পাওয়ার আশায় বিভিন্ন স্ট্যান্ডে ও সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন দীর্ঘক্ষণ। এতে করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে। করোনায় আক্রন্ত হয়ে মৃত্যুর ভয় করছেন না তারা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের চেয়ে এসব পোশাক শ্রমিকদের কাছে তাদের চাকরি রক্ষা করাটা জরুরী বলে দাবি করছেন এরা।
শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায় পোশাক শ্রমিকদের উপচে পড়া ভিড়। সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহের নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে কর্মস্থলের দিকে আসছেন তারা। পায়ে হেঁটে, রিকশায়, অটোতে করে তারা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছেছেন। ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন পরিবহনে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন তারা।
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার বিড়ই গ্রামের সুরাইয়া বেগম গাজীপুর সদর উপজেলার ইউটা পোশাক কারখানায় সুইং অপারেটর পদে চাকরি করেন।
তিনি বলেন, শনিবার ভোর ৫টার দিকে বাড়ি থেকে রওয়ানা হয়েছি। কারখানা খুলে গেছে তাই যাচ্ছি। আজ কারখানায় উপস্থিত না হতে পারলে যে কয়দিন ছুটি পাইছি সে কয়দিন অনুপস্থিত দেখাবে কর্তৃপক্ষ; যার কারণে অতিরিক্ত টাকা দিয়েই কারখানায় যোগদান করতে হবে।
গাজীপুর চৌরাস্তায় নিট এ্যাপারেল্স গার্মেন্টসের শ্রমিক নজির মিয়া বলেন, ফজরের নামাজের পর নেত্রকোণার ইসলামপুর থেকে রওনা দিয়েছি। রাস্তায় গাড়ি তো নাই, রিকশাও চলছে হালকা পাতলা। তাই কিছুক্ষণ রিকশায় চড়ে আবার কিছুক্ষণ হেঁটেই চলছি। পোশাক কারখানায় কাজ করেই তাদের পরিবারের সদস্যদের খাবার জোটাতে হয়। কাল গার্মেন্টেসে হাজিরা না দিতে পারলে চাকরি থাকবে না। কাল-পরশু বেতনও হবে, তাও পাওয়া যাবে না, তাই পায়ে হেঁটেই ঢাকা যেতেই হচ্ছে।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আলেয়া বেগম গাজীপুরের নোমান শিল্প গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার সহকারী অপারেটর পদে চাকরি করেন।
তিনি বলেন, শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টায় স্ত্রী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মুখে মাস্ক লাগিয়ে বাড়ি থেকে রওয়ানা হন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। কোনো যানবাহন না পেয়ে প্রথমে হেঁটে, আবার রিকশায় এক হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সকাল ১০ টায় মাওনা চৌরাস্তা মাত্র আসলাম।
সরকার ঘোষিত নির্দেশনা রয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার, সেখানে শ্রমিকেরা গাদাগাদি করে রিকশা, ভ্যান ও ট্রাকে চড়ে গন্তব্য রওনা হচ্ছেন। গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় যানবাহনের জন্য অপেক্ষমাণ বেশ কয়েকজন পোশাক শ্রমিক। তারা বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেও খাবারের তাগিদ ও চাকরি হারানোর ভয়ে আজই ঢাকায় যাচ্ছেন তারা। এ পর্যন্ত কয়েকটি গাড়ি পরিবর্তন করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে এদের।
মোতালেব সরকার নামে পোশাক শ্রমিক বলেন, অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। সব বন্ধ, এর মধ্যেই কর্মস্থলে পৌঁছাতে হবে। কাজে যোগ না দিলে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়ব। করোনাভাইরাস সতর্কতা মানা সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক, অন্যদিকে চাকরি। তাই শঙ্কায় আছেন তিনি।
জয়নাল আবেদীন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বড়পুটিয়ার গ্রামের বাসিন্দা। চাকরি করেন গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজারের মন্ডল পোশাক কারখানায়।
তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে অফিস খোলার ঘোষণা দিয়েছেন সরকার। শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর সাড়ে ৪ টায় তিনি বাড়ি থেকে রওয়ানা হন। কোথাও তিনি যাত্রীবাহী বাসের দেখা পাননি। কখনও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, কখনও ভ্যানে চড়ে, আবার কখনও হেঁটে শ্রীপুরের মাষ্টারবারড়ী এসে পৌঁছান।
গাজীপুরের স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসে চাকরি করেন করেন জয়নুল আবেদীন। এ পোশাক কর্মী বলেন, আগামীকাল সময়মতো যদি গার্মেন্টেসে পৌঁছাতে না পারি তাহলে চাকরি থাকবে না। অনেকটা বাধ্য হয়েই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিতে হল।
ময়না আক্তার নামে টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, পরিবারের খাবারের তাগিদে করোনা আতঙ্কের মধ্যেও ঢাকায় যাচ্ছি। না গেলে তো চাকরি থেকেও বাদ দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। মহাসড়কের ভবানীপুর বাসষ্ট্যান্ডে শ্রমিক ইলিয়াস মিয়ার বলেন, কাল থেকে গার্মেন্টস খুলবে। তাই কষ্ট করে ভেঙে ভেঙে অনেক টাকা ভাড়া গুনে ভবানীপুর পর্যন্ত এসেছি। কাজে যোগ না দিলে যদি বেতন না দেয় বা ছাঁটাই করে দেয়, এই ভয়ে কাজে যোগ দিতে এসেছি।
আরেক শ্রমিক বজলু মিয়া জানান, হাতে টাকা-পয়সা নেই। কোনও সহায্য সহযোগিতাও পাইনি। তাই কাজে যোগ দিতে গাজীপুর এসেছি। করোনার ভয়বহতার সময় কাজে যোগ দিতে এসেছেন, কিন্তু মাস্ক বা হাতে গ্লাভস নেই কেন জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, গরিব মানুষ এগুলো পরে কী হবে। করোনার ভয় আমাদেরও আছে। কিন্তু কী করার আছে? মালিকপক্ষ গার্মেন্টস খুলছে, তাদের কথামতো কাজে যোগ না দিলে বেতন পাব না। যদি ছাঁটাই করে, তখন তো আরও বিপদে পড়বো।
পোশাক শ্রমিক জুয়েনা আক্তার। টঙ্গীতে একটি কারখানায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, ময়মনসিংহ থেকে মাওনা পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটারের বেশিরভাগ রাস্তা পায়ে হেঁটে এসেছেন তিনি, গন্তব্য গাজীপুরের টঙ্গী। তার শংকা, সময়মতো কারখানায় উপস্থিত হতে না পারলে বকেয়া বেতন পাবেন না। এক’শ টাকা ভাড়ার জায়গায় তিনগুন বেশি ভাড়া দিয়ে কারখানায় যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি।
পহেলা আগস্ট খুলছে পোশাক কারখানা। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই শিল্পকারখানা খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসার পর হাজার হাজার শ্রমিক গাজীপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ ফিরতে শুরু।
শনিবার (৩১ জুলাই) বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলা থেকে দল বেঁধে শ্রমিকদের কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ছুঁটতে দেখা গেছে। গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা পিকআপ, ট্রাক ও ইঞ্জিন চালিত ভ্যান ও রিকশায় চড়ে বাড়ি থেকে আসছেন। যানবাহন না পেয়ে অনেকে হেঁটে ছুটছেন গন্তব্যের পথে।
আবার অনেকে গাড়ি পাওয়ার আশায় বিভিন্ন স্ট্যান্ডে ও সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন দীর্ঘক্ষণ। এতে করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে। করোনায় আক্রন্ত হয়ে মৃত্যুর ভয় করছেন না তারা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের চেয়ে এসব পোশাক শ্রমিকদের কাছে তাদের চাকরি রক্ষা করাটা বেশি প্রয়োজন বলে দাবি করছেন তারা।
শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায় পোশাক শ্রমিকদের ভিড়। সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহের নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসছেন তারা। পায়ে হেঁটে, রিকশায়, অটোতে করে তারা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছেছেন। ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন পরিবহনে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন তারা।
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বেখৈরহাটি গ্রামের রাবেয়া আক্তার। গাজীপুর সদর উপজেলার ইউটা পোশাক কারখানায় সুইং অপারেটর পদে চাকরি করেন।
তিনি জানান, শনিবার ভোর ৫টার দিকে বাড়ি থেকে রওয়ানা হন। কারখানা খুলে গেছে তাই যাচ্ছি। আজ কারখানায় উপস্থিত না হতে পারলে যে কয়দিন ছুটি পাইছি সে কয়দিন অনুপস্থিত দেখাবে কর্তৃপক্ষ; যার কারণে অতিরিক্ত টাকা দিয়েই কারখানায় যাচ্ছি।
গাজীপুরের পিএন গার্মেন্টসের শ্রমিক আব্দুল বাসেদ বলেন, ফজরের নামাজের পর নেত্রকোণার ইসলামপুর থেকে রওনা দিয়েছি। রাস্তায় গাড়ি তো নাই, রিকশাও চলছে হালকা হালকা। তাই কিছুক্ষণ রিকশায় চড়ে আবার কিছুক্ষণ হেঁটেই চলছি। পোশাক কারখানায় কাজ করেই তাদের পরিবারের সদস্যদের খাবার জোটাতে হয়। কাল গার্মেন্টেসে হাজিরা না দিতে পারলে চাকরি থাকবে না। কাল-পরশু বেতনও হবে, তাও পাওয়া যাবে না, তাই পায়ে হেঁটেই ঢাকা যেতেই হবে।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার রফিকুল ইসলাম গাজীপুরের নোমান শিল্প গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার সহকারী অপারেটর পদে চাকরি করেন।
তিনি বলেন, শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টায় স্ত্রী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মুখে মাস্ক লাগিয়ে বাড়ি থেকে রওয়ানা হন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে। কোনো যানবাহন না পেয়ে প্রথমে হেঁটে, আবার রিকশায় এক হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সকাল ১০ টায় মাওনা চৌরাস্তা এসে পৌঁছেছি।
যেখানে নির্দেশনা রয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার, সেখানে শ্রমিকেরা গাদাগাদি করে রিকশা, ভ্যান ও ট্রাকে চড়ে গন্তব্য রওনা হচ্ছেন। গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় যানবাহনের জন্য অপেক্ষমাণ বেশ কয়েকজন পোশাক শ্রমিক।
তারা বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেও খাবারের তাগিদ ও চাকরি হারানোর ভয়ে আজই ঢাকায় যাচ্ছেন তারা। এ পর্যন্ত কয়েকটি গাড়ি পরিবর্তন করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের।
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা সদরের শাহপাড়া এলাকার আবু সাঈদ। সাভারের আশুলিয়ার (জামগড়া) এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন করেন। জৈনা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে আছেন।
তিনি বলেন, সরকার একদিকে গণপরিবহন বন্ধ করেছে, অপরদিকে পোশাক কারখানা খোলা রেখেছে। এতে কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। পোশাক কারখানা বন্ধ রাখলে এই ভোগান্তির শিকার হতে হতো না।
মাহবুব হাসান নামে পোশাক শ্রমিক বলেন, অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। সব বন্ধ, এর মধ্যেই কর্মস্থলে পৌঁছাতে হবে। কাজে যোগ না দিলে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়ব। করোনাভাইরাস সতর্কতা মানা সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক, অন্যদিকে চাকরি। তাই শঙ্কায় আছেন তিনি।
সাইদুল ইসলাম ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বড়পুটিয়ার গ্রামের বাসিন্দা। চাকরি করেন গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজারের মন্ডল পোশাক কারখানায়।
তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে অফিস খোলার ঘোষণা দিয়েছেন সরকার। শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর সাড়ে ৪ টায় তিনি বাড়ি থেকে রওয়ানা হন। কোথাও তিনি যাত্রীবাহী বাসের দেখা পাননি। কখনও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, কখনও ভ্যানে চড়ে, আবার কখনও হেঁটে শ্রীপুরের মাষ্টারবারড়ী এসে পৌঁছান।
গাজীপুরের স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসে চাকরি করেন করেন জয়নুল আবেদীন। এ পোশাক কর্মী বলেন, আগামীকাল সময়মতো যদি গার্মেন্টেসে পৌঁছাতে না পারি তাহলে চাকরি থাকবে না। অনেকটা বাধ্য হয়েই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছি।
মাজম আলী নামে টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, পরিবারের খাবারের তাগিদে করোনা আতঙ্কের মধ্যেও ঢাকায় যাচ্ছি। না গেলে তো চাকরি থেকেও বাদ দিতে পারে কর্তৃপক্ষ।
মহাসড়কের ভবানীপুর বাসষ্ট্যান্ডে শ্রমিক ইলিয়াস মিয়ার বলেন, কাল থেকে গার্মেন্টস খুলবে। তাই কষ্ট করে ভেঙে ভেঙে অনেক টাকা ভাড়া গুনে ভবানীপুর পর্যন্ত এসেছি। কাজে যোগ না দিলে যদি বেতন না দেয় বা ছাঁটাই করে দেয়, এই ভয়ে কাজে যোগ দিতে এসেছি।
আরেক শ্রমিক বজলু মিয়া জানান, হাতে টাকা-পয়সা নেই। কোনও সহায্য সহযোগিতাও পাইনি। তাই কাজে যোগ দিতে গাজীপুর এসেছি। করোনার ভয়বহতার সময় কাজে যোগ দিতে এসেছেন, কিন্তু মাস্ক বা হাতে গ্লাভস নেই কেন জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, গরিব মানুষ এগুলো পরে কী হবে। করোনার ভয় আমাদেরও আছে। কিন্তু কী করার আছে? মালিকপক্ষ গার্মেন্টস খুলছে, তাদের কথামতো কাজে যোগ না দিলে বেতন পাব না। যদি ছাঁটাই করে, তখন তো আরও বিপদে পড়বো।
পোশাক শ্রমিক জুয়েনা আক্তার। টঙ্গীতে একটি কারখানায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, ময়মনসিংহ থেকে মাওনা পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটারের বেশিরভাগ রাস্তা পায়ে হেঁটে এসেছেন তিনি, গন্তব্য গাজীপুরের টঙ্গী। তার শংকা, সময়মতো কারখানায় উপস্থিত হতে না পারলে বকেয়া বেতন পাবেন না। এক’শ টাকা ভাড়ার জায়গায় তিনগুন বেশি ভাড়া দিয়ে কারখানায় যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা মহা-ব্যবসথাপক (অপারেশন) বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য উৎপাদন করে শিপমেন্ট না করতে পারলে এয়ার শিপমেন্ট করতে হবে। এতে করে প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।
গাজীপুর চৌরাস্তা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, কর্মস্থলে যোগ দিতে হাজার হাজার শ্রমিক আসছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের। পরিবহন বন্ধ থাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে তারা আসছেন। আমরা তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি আমরা। মাইকিং করে হাত ধোয়ার, মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছি। আজকের পর ভিড় থাকবে না বলে মনে করছি।