শিক্ষাখাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, প্রথাগত সহযোগিতা শিক্ষার অর্থায়নের ফাঁক পূরণ করতে যথেষ্ট নয়।
শিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক সুবিধার ওপর উচ্চ স্তরের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সময় সোমবার বিকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে এ আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বব্যাপী শিক্ষার জন্য জাতিসংঘের বিশেষ দূত গর্ডন ব্রাউন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, প্রথাগত সহযোগিতা শিক্ষা অর্থায়নের ফাঁক পূরণ করতে যথেষ্ট নয়। আমাদের অবশ্যই বেসরকারি খাতে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি খাতে অধিকারভিত্তিক পদ্ধতিতে শিক্ষায় বিনিয়োগ করা উচিত। বেশি লাভ করার আশা না করে শিক্ষাকে জনসাধারণের জন্য সাশ্রয়ী করে তুলতে হবে। শ্রমিকদের কার্যকর শিক্ষা তাদের ব্যবসা সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে।
এই বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রেখে তিনি বলেন, এসডিজি ফোর অর্জনের লক্ষ্যে শিক্ষার অর্থায়নের ফাঁক পূরণ করতে উদ্ভাবনী অর্থায়নের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, স্থায়ী উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০ এর গোল ফোর অর্জনে সাফল্যের চাবিকাঠি হলো- শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন খাতকে সম্পদে পরিণত করা।
তিনি বলেন, এসডিজি ফোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে অর্থায়ন বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু নিজস্ব উৎস থেকে শিক্ষা তহবিল বৃদ্ধি সত্ত্বেও একটি বড় অর্থনৈতিক ফাঁক থেকে গেছে।
আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোর বিভিন্ন দেশের শিক্ষার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ঋণ না দিয়ে বরং অনুদান দেয়ায় দায়িত্ব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
শিক্ষাকে টেকসই শান্তি নিশ্চিতের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার উল্লেখ করে হাসিনা বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের নিরাপদ শান্তির জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষা উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়ায়, নিজের অবস্থান বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং জীবনকে সমৃদ্ধ করে। আর সুশিক্ষা সামাজিক ব্যাধির বেশিরভাগই দূর করে। এটি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে, আয় ও দারিদ্র নিরসনে ভূমিকা রাখে।
অন্যদিকে উদ্ভাবন এবং তার বিকাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে তোলে। যা সামাজিক একত্রিকরনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
২০১৫ সালে ঘোষিত স্থায়ী উন্নয়ন এজেন্ডা- ২০৩০ এর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সবার জন্য সমান গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
দুঃখজনকভাবে, বিশ্বের প্রায় ২৬৩ মিলিয়ন শিশু স্কুলের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন শিশুর মৌলিক দক্ষতার অভাব হবে। এটিকে বিপজ্জনক হিসেবে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে নেয়া তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তার সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিক্ষা খাতের জন্য ৮৬৭.২ বিলিয়ন টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে।