অফিসার্স ক্লাব ঢাকায় আমি নেতা হওয়ার জন্য আসেনি, সম্মানিত সদস্যদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে এসেছিলাম, প্রতিদানে ভালোবাসা পেতে চেয়েছিলাম। ২০০৯ সাল থেকে অফিসার্স ক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। সে সময় আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আলাউদ্দিন আহমেদ স্যারের সাথে সরাসরি রিভিউ কমিটিতে কাজ করতাম। স্যারের একান্ত সচিব (উপসচিব) আবদুল মান্নান স্যারের অফিসার্স ক্লাবের যুগ্মসচিব পদের নির্বাচনে কর্মী হিসেবে কাজ করি। আমি, ইফতেখার ভাই আর শ্রদ্ধেয় ভাবি সহ আরো অনেকে ক্যাম্পেইন করতাম। স্যারের সাথে মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিফলেট ও প্রচারণা চালাতাম। স্যার বিপুল ভোটে পাস করেন।এরপর সাবেক সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ ম্যাডামের নির্বাচনে কাজ করি। অসামান্য ফলাফল হয়। সাবেক সচিব আবু আলম স্যারের নির্বাচনেও কাজ করি। স্যারেরা সফল হন আর আমি পরিশ্রমী কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি পাই।তবে, আমার অফিসার্স ক্লাবে হাতে খড়ি হয় মান্নান স্যারের হাতে। স্যার বর্তমানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সুযোগ্য সচিব, স্যারের অধীনে কাজ করি আর এবছরেই অফিসার্স ক্লাবের নির্বাহী সদস্য হিসেবে ৫২তম AGM এ অংশগ্রহণের অনন্য সুযোগ পেয়েছি।
গতকালের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যাতে আমি আরো দুই বছর নির্বাহী সদস্য হিসেবে থাকতে পারব। এ সমর্থন, সহযোগিতা আমার জীবনে অন্যরকম প্রাপ্তি ও অনন্য সাধারণ ভালোবাসা।এ রকম ভালোবাসার জন্য আমি ১০ বছর অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষা আর নিরলস পরিশ্রম করেছি। আমি নির্বাচন প্রক্রিয়ায়ও চলে আসি। ২০১৪, ২০১৬,২০১৮ সালে চেষ্টা করেছি। নির্বাচনে যাতে পাস করতে না পারি সে জন্য ব্যাচের একটি অংশ থেকে মারাত্মক বাধার সম্মুখীন হই।আমি বিষয়টি হালকাভাবে গ্রহণ করি। বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দেই।অবশ্যই আমি সেভাবে পাই নি। অন্য ব্যাচ ও অন্য অংশ থেকে নজিরবিহীন সহযোগিতা পেয়েছি। বার বার পরাজিত হয়েও আমি মনোবল হারাইনি, সুন্দরবনের বাঘ নীতিতে চলেছি। আবার প্রথম থেকে শুরু করেছি। বাঘের নীতি হলো টার্গেট নিয়ে চলা, না পারলে আবার শুরু থেকে শুরু।আমি তো সাতক্ষীরারই সন্তান। সব মনে আছে কিন্তু অফিসার্স ক্লাব থেকে বিচ্যুত হইনি।
২০২০ সালের নির্বাচনের আগে মেক্সিকো,যুক্তরাষ্ট্রের টুরে আমি আগ্রহ দেখাই নি। অর্জিত ছুটি তো আমার অর্জন, তাই ৪৬ দিনের অর্জিত ছুটি নিয়েছি। মাননীয় বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনসি,এম.পি ছুটি মঞ্জুর করে বললেন -“এবার নির্বাচনে পাস করে আসতে হবে, লাগলে আরো ছুটি দেয়া হবে।এছাড়া, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের পদায়ন আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি। আমি অফিসার্স ক্লাবের সম্মানিত সদস্যদের সমর্থন ও ভালোবাসা পেতে চেয়েছিলাম আর আমি তা পেয়ে অভিভূত হয়েছি। আমি বিশ্বাস পেয়েছি।আর আমার ১০ বছরের এ অন্যধরনের ব্যস্ততার জন্য নিজের কিছু বিসর্জন দিতে হয়েছে। আমার সহধর্মিণী, সন্তানদের সময় ঠিক মতো হয়তো দেয়া হয়নি। অফিসার্স ক্লাবে যেতে শীত-বৃষ্টিতে আমাকে বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি। স্যারদের রাত ৩ টা বা ভোর ৫টার ফোনও আমাকে বিরক্ত করে না। প্রয়োজনে সাধ্যমত থেকেছি। আর কিছু না হোক মনোযোগ দিয়ে কথা শুনেছি।
আমি AGM যে প্রত্যয় পেয়েছি তা আমার কাছে অপ্রত্যাশিত। প্রত্যেক কর্মকর্তার অনেক প্রত্যাশা থাকে। আমি কিন্তু আমি অফিসার্স ক্লাবের মাধ্যমে স্যারদের ভালোবাসার দান পেতে চেয়েছিলাম। আমি অফিসার্স ক্লাবকে ভালোবাসি আর সম্মানিত সদস্যদের জন্য শ্রদ্ধা করি। আমার প্রতি সম্মানিত সদস্যদের Confidence রয়েছে। এতেই আমি খুশি, এতেই আমি আনন্দিত। ধন্য হয়েছি আমি ধন্য। লেখকঃ অফিসার্স ক্লাব ঢাকা এর নির্বাহী সদস্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ‘আলমগীর হোসেন’।