টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুর বনাঞ্চলে দুর্লভ প্রজাতির লাল চন্দনগাছের (রক্ত চন্দন) সন্ধান মিলেছে দোখলার বন বিশ্রামাগারের সামনে। প্রায় ৪০ বছর আগে গাছটি লাগানো হলেও এটি মানুষের দৃষ্টিতে আসেনি। এত দিন এই গাছ নিয়ে কোনো আলোচনা না হলেও বর্তমানে আল্লু অর্জুনের সিনেমা ‘পুষ্পা’মুক্তির পরপরই এটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। মুখে মুখে গাছটির কথা ছড়িয়ে পড়েছে এ অঞ্চলে। তারপর কয়েক মাস ধরে দুর্লভ এই গাছ দেখতে লোকজন ভিড় করছেন মধুপুরের বনাঞ্চলের দোখলায়।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বনাঞ্চলের দোখলা এলাকায় বন বিশ্রামাগারের সামনেই এই রক্ত চন্দন গাছটি অন্তত ৪০ বছর আগে লাগানো হয়েছিল। কয়েক মাস আগপর্যন্তও বনাঞ্চলের অন্য সাধারণ গাছগুলোর মতোই এটিকে সাধারণ গাছ মনে করত মানুষ। ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘পুষ্পা’তে লাল চন্দনগাছ নিয়ে নানা কাহিনি দেখার পর এটি এ এলাকার মানুষের নজরে আসে। গাছটিতে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করলে মানুষের রক্তের মতো কষ বের হয়। তাছাড়া এখানে ১৯৭১ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব অবস্থান করেছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাছটি দেখতে এসেছেন কয়েকজন। তাঁদেরই একজন সাইফুল ইসলাম জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গাছটির কথা জানতে পেরে পার্শবর্তী মুক্তাগাছা থেকে গাছটি দেখতে এসেছেন। তিনি দুর্লভ এ গাছ দেখার লোভ সামলাতে পারেননি।
দোখলা রেস্ট হাউজের সামনের এই গাছ থেকে রক্ত ঝরে কি-না তাই দেখতে ছিদ্র করেছে পর্যটকরা। বেড়িয়েছে লাল লাল রক্ত। দর্শনার্থীরা গাছটির ফুল-ফল বা বীজ না হওয়ায় ভিন্ন উপায়ে বংশবিস্তারের দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
বন বিভাগের দোখলা রেঞ্জের বন কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন জানান, উৎসুক লোকজন এসে গাছটিতে খুঁচিয়ে এর লাল কষ বের হওয়া দেখতেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসতে থাকেন এখানে। পরে গাছটি রক্ষা করার জন্য এর চারপাশে নেটের বেড়া দেওয়া হয়েছে। গাছটি এখন দূর থেকে দেখতে দেওয়া হয় দর্শনার্থীদের। সবাইকে বলা হয়, এটি এখন সংরক্ষিত,ঘা দেবেন না। শাস্তি যোগ্য অপরাধ।
. মো.ইসমাইল হোসেন আরো জানান, এই গাছের ফুল-ফল ও বীজ না হওয়ায় বংশবৃদ্ধি করা যাচ্ছে না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বংশবিস্তারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কে বা কারা এই গাছটি রোপণ করেছিলেন, এর কোনো তথ্য বন বিভাগের কাছে নেই। দোখলা রেস্টহাউসের সাবেক এক রক্ষণাবেক্ষণকারী (কেয়ারটেকার) জানিয়েছেন, ৪০ বছর আগে গাছটি লাগানো হয়েছিল।