মাজহারুল রাসেল : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের মৃত তাজু মোল্লার ছোট ছেলে সোয়েব মোল্লা তার এলাকায় এক আতঙ্কের নাম।
এমন কোন অপরাধমূলক কর্মকান্ড নাই যে তার হাত দিয়ে না হয়। সন্ত্রাসী ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে সোয়েব মোল্লা বনে গেছেন এলাকায় কোটিপতি।
পিরোজপুর এলাকা জুড়ে রয়েছে তার বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে সে মাদক ব্যবসা,পতিতালয়,চাঁদাবাজি সহ অসহায় মানুষের জায়গা জমি দখল করে থাকেন। তার এই সমস্ত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যে বাধা দেন তাকেই সন্ত্রাসীদের গডফাদার সোয়েব মোল্লা দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেন।
সোনারগাঁও থানা সূত্রে জানা যায়, সোয়েব মোল্লার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা সহ ডজন খানেক মামলা রয়েছে।
পিরোজপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন তার নিজস্ব ভবনে আবাসিক হোটেল যার নাম মেট্রো ইন। এই হোটেলে পতিতা দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করা হয়। এ হোটেলেই পাওয়া যায় ফেনসিডিল,ইয়াবা,হিরোইন,গাজা সহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য। আর সন্ধ্যার পর থেকে এই হোটেলে বসে জুয়ার আসর। গত কয়েকদিন আগে হোটেল নিয়ে মারামারির একপর্যায়ে পুলিশ এসে হোটেলের স্টাফদের ধরে নিয়ে যায়,কিন্তু সোয়েব মোল্লা হোটেল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু পালিয়ে যেও বাঁচতে পারে নেই সোয়েব মোল্লা,সে নারী পাচার মামলার এজারভুক্ত ৬ নং আসামি হয়। মানব পাচারকারী মামলা খেয়ে সোয়েব মোল্লা এলাকা থেকে পলাতক রয়েছেন বলে জানা যায়। স্থানীয় লোকজনদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় কিছু অসাধু প্রশাসনের অফিসারদের সঙ্গে তার সখ্যতার কারণে সে যেকোনো অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে পারে নির্দ্বিধায়।
সোনারগাঁও উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের লিটু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন সোয়েব মোল্লা। এবং গত কয়েক মাস আগে তার ভবন সংলগ্ন পরিত্যক্ত গোডাউনে এক কিশোরের মৃতদেহ পাওয়া যায়। অর্থের বিনিময়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সোয়েব মোল্লা হত্যা মামলা থেকে রক্ষা পান।
লম্পট সোয়েব মোল্লা বিভিন্ন সময় তার এলাকার অসহায় মেয়েদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন,এ ব্যাপারে পিরোজপুর গ্রামের শারজাহানের মেয়ে সপ্না বলেন,আমার মত অনেক অসহায় মেয়েদেরকে সে বিয়ে করবে বলে শারীরিক সম্পর্ক করেন।স্বপ্না বলেন,তার অপকর্মের দরুন আমি অন্তঃসত্বা হয়ে পড়লে সোয়েব মোল্লা আমাকে বিবাহ করতে বাধ্য হয়,কিন্তু কিছুদিন পর সোয়েব মোল্লা বলেন,তুই যদি আমাকে ডিভোর্স না দেছ তাহলে আমি তকে হত্যা করে ফেলবো। তাই তার ভয়ে আমি ও আমার পরিবার তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাই।
সরে জমিনে পিরোজপুর এলাকা ঘুরে জানা যায়,পিরোজপুরে অবস্থিত মুজাফফর আলী ফাউন্ডেশন নামে একটি এতিমখানার জায়গা দখল করে রেখেছেন,সন্ত্রাসীদের গডফাদার সোয়েব মোল্লা।
গত কয়েক মাস আগে এশিয়ান কোম্পানির নিজস্ব জায়গা তার বলে দখল করতে যান তার বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে। এই দখলের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা করা হয়,এবং পরবর্তী সময় সোয়েব মোল্লা পুলিশের হাতে আটক হন। তারপর এশিয়ান টিভির মালিক কে হাতে পায়ে ধরে সে জামিন পেতে সক্ষম হন।
পিরোজপুর গ্রামের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মুরুব্বি জানান,মৃত তাজু মোল্লার ছেলে সোয়েব মোল্লা নানাভাবে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলে এলাকার অনেক অসহায় মানুষের জায়গা জোর করে দখল করে রেখেছে। তার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ ফুটে কিছু বলে না। তাই দিন দিন সোয়েব মোল্লার অত্যাচার বেপরোয়া হয়ে গেছে পিরোজপুর গ্রামে।
এলাকার শত শত নিরীহ জনগণ তার ভয়ে নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন,আমরা এই অত্যাচারী সন্ত্রাসী সোয়েব মোল্লার হাত থেকে মুক্তি চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা আকুল আবেদন জানাই,নারায়ণগঞ্জের এসপি মহোদয় কে নির্দেশ দিয়ে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের গডফাদার সোয়েব মোল্লাকে অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
সোনারগাঁও থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই পঙ্কজ বলেন,তার বিরুদ্ধে মানব পাচারকারী মামলায় ৬ নং এজাহারভুক্ত আসামি। তাতে আটক করার জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় গোপনীয়তার সাথে অভিযান পরিচালনা করতেছি। খুব শীঘ্রই সোয়েব মোল্লাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।