মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম:
কালিগঞ্জের নলতা ইউনিয়ন জামায়াতের “কর্মী শিক্ষা শিবির” অনুষ্ঠিত গোপন গোয়েন্দা কার্যক্রম: খুলনার এক বিস্মৃত অধ্যায় ভোলায় দুর্ধর্ষ ৭ সন্ত্রাসী আটক করেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোন কয়রায় মহারাজপুর ইউনিয়নে এম এইচভি’র কমিটি গঠন। স্থানীয়দের চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকিতে ২০ দিন ধরে অনুপস্থিত পবিপ্রবির চিকিৎসক কালিগঞ্জে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল বাংলাদেশে আসছেন তদন্তের জন্য বিশ্বনবীর জন্মদিন ১২ ই রবিউল আউয়াল মানেই,ঈদে মীলাদুন্নবী বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থানা সংলগ্ন যমুনা নদীর শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কার রাজনৈতিক দলের সাথে মামলায় জড়িয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি না করার আহবান

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো কেনো নয়?

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪, ৪.১১ পিএম
  • ২২ বার পঠিত

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলনে বর্তমানে অচল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। চলছে সর্বাত্মক কর্মবিরতি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রত্যয় পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্তকরণ বাতিল, সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত ও স্বতন্ত্র উচ্চতর পে—স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে গত ১লা জুলাই ২০২৪ ইং থেকে সারা বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ব স্ব শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১৬০০০ শিক্ষক একযোগে এই কর্মসূচি পালন করছে ফলে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল হয়ে পরেছে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতির পূর্বে গত জুন মাস থেকে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে মানববন্ধন, অর্ধ দিবস কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দিয়ে তাদের দাবি সরকারের দৃষ্টিগোচরে আনার অনেক চেষ্টা করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কথা কেউ কর্ণপাত করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সাথে রাষ্ট্রের যেসব শাখা নিবিড় ভাবে কাজ করছে বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের দায়িত্বশীল কেউ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সমস্যা ও তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে এগিয়ে আসেনি এমনকি তাদের কাছ থেকে কোন ধরনের নির্দেশনাও পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রধান ভাইস—চ্যান্সেলর মহোদয়গণের শিক্ষকদের আন্দোলনের বিষয়ে মৌন সমর্থন থাকলেও তারাও এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সর্বোচ্চ অভিভাবক ও আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে অবগত আছেন কিনা তাও কারো জানা নেই। এমতাবস্থায় প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কি কোনো কর্তৃপক্ষ নেই? তারা কি অভিভাবক শূন্য? কার কাছ থেকে তারা এই বিষয়ের সমাধান পাবেন?

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই আন্দোলনকে নাকি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে। তাছাড়া তারা আর কি বা করতে পারে? আর কত নিচে নামতে পারেন তারা? শিক্ষকদেরতো কোনো সহিংস আন্দোলনে করার সুযোগ নেই বা তা তারা করবেনও না। তাহলে কীসের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে? নাকি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই আন্দোলনকে দুর্বল ভাবা হচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা তো সরকারকে বিব্রত করতে চায় না বরং উচ্চশিক্ষা বান্ধব এই সরকারের কাছ থেকে যৌক্তিকভাবে তাদের দাবি আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই দাবির যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তাঁর সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে একটি মর্যাদাসম্পন্ন স্থানে রাখতে যথেষ্ট সচেষ্ট ছিলেন। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের দলীয় ইশতেহার (২০০৮) ও জাতীয় শিক্ষানীতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মর্যাদাসম্পন্ন উচ্চতর স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোসহ সুপার গ্রেড প্রদানের প্রতিশ্রুতি থাকলেও তার কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। তাই কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা তাদের নিজস্ব শেষ করণীয় হিসেবে ক্লাস পরীক্ষাসহ অন্যান্য অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে কর্মবিরতি দিয়েছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আর কি বা করার আছে?
এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় অচল থাকলে দেশের আদৌ কি কোনো ক্ষতি হয়? ইদ, পূজা, গ্রীষ্ম/শীতকালীন অন্যান্য ছুটির মতো কয়েকদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলে তো তেমন ক্ষতি নেই। আসলেই কি তাই? কার্যত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অচল হওয়ায় লক্ষ লক্ষ আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হাজার হাজার মাস্টার্স ও পিএইচডি ছাত্রছাত্রীদের গবেষণা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অচল হওয়াটাকে কেন এত ছোট করে দেখা হচ্ছে? কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে এত তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে? কেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে অবনমন করা হলো?
যুগ যুগ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেরা মেধাবী শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হন। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক তার শিক্ষা জীবনের সকল ক্লাস ও পরীক্ষায় প্রথম সারির স্টুডেন্ট থাকেন। এরা নিঃসন্দেহে জাতির সেরা মেধাবী। শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক দিয়ে তারা সবচেয়ে এগিয়ে। মানুষ গড়ার ব্রত নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পেশায় আসেন। শিক্ষিত ও দক্ষ জনসম্পদ গঠনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে বিভিন্ন পেশায় সরকারি চাকুরি করে যারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চেয়ে ডাবল বা ট্রিপল সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন তারা কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন কেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা আপনার চেয়ে পেছনে থাকবে? কেন তাদেরকে অবনমন করা হচ্ছে? কেন তাদেরকে মর্যাদাহানিকর ও অবমাননাকর প্রত্যয় পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করা হলো? তবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের ও দুর্নীতির সাথে জড়িত হন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকরা কখনো এসব অনিয়ম দুর্নীতি সাপোর্ট করে না বরং তারা চায় সরকার এসব বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিক।
বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। উচ্চশিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটছে। নতুন নতুন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা পেশার ঐতিহ্য ও গৌরব অনেকটা ম্লান হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা পেশাকে অন্যান্য সাধারণ চাকুরির মতো মনে করা হচ্ছে। নীতিনিধার্রকরা হয়ত ভুলে গেছেন (!) যে, শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও তার বিতরণ একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাই করে থাকে। তাহলে কেন তাদেরকে যথাযথ মর্যাদা দেয়া হবে না? যুগের চাহিদায় বাংলাদেশের অন্যান্য চাকরির মত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন বাড়লেও তাদের জন্য মর্যাদাকর স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বা প্রতিশ্রম্নত সুপার গ্রেড আজও প্রবর্তন হয়নি বরং বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ চাপিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে তাচ্ছিল্য, অবমাননা ও মর্যাদাহানি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা নিজেদের জন্য নয়, কারো সাথে তুলনা করে নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে, শিক্ষকতা পেশার স্বার্থে, এই পেশার মর্যাদা বৃদ্ধিতে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো দাবি করেছে।

লেখক:

ড. মো. আসাদুজ্জামান মিয়া

প্রফেসর

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ই-মেইল: mamiah81@yahoo.com

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

পুরাতন খবর

SatSunMonTueWedThuFri
14151617181920
21222324252627
282930    
       
  12345
20212223242526
2728293031  
       
15161718192021
2930     
       
     12
24252627282930
       
2930     
       
    123
       
    123
25262728   
       
     12
31      
   1234
262728    
       
  12345
2728     
       
   1234
       
     12
31      
1234567
891011121314
15161718192021
2930     
       
    123
11121314151617
       
  12345
20212223242526
27282930   
       
      1
2345678
23242526272829
3031     
      1
       
293031    
       
     12
10111213141516
       
  12345
       
2930     
       
    123
18192021222324
25262728293031
       
28293031   
       
      1
16171819202122
30      
   1234
       
14151617181920
282930    
       
     12
31      
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
       
© All rights reserved © MKProtidin.Com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com